রাত পোহালেই পবিত্র ঈদুল আজহা। পরিবারের সদস্যদের নিয়ে একসাথে গ্রামের বাড়িতে ঈদ করার জন্য যে যেভাবে পারছে শহর ছাড়ছে মানুষ। বাস-ট্রেনের টিকিটের জন্য হাহাকার। তবু হার মানতে নারাজ মানুষ। শত দুর্ভোগ মাড়িয়ে হলেও বাড়ি ফেরা চাই।
প্রতিবছর ঈদযাত্রায় বাড়ি ফেরা লোকজনের প্রথম পছন্দ ট্রেন। এবার করোনা মহামারির কারনে স্বাস্থ্যঝুঁকি এড়াতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা মোতাবেক সবগুলো ট্রেন অর্ধেক আসন ফাঁকা রেখে চলাচল করছে। সে কারনে যাত্রী পরিবহন অন্যান্যবারের তুলনায় এবার অর্ধেক কমে গেছে। এরপরও রেল স্টেশনে জনস্রোত। আগে দেখা যেত ঈদ মৌসুমে ট্রেনের প্রতিটি আসন পূর্ণ হয়ে স্ট্যান্ডিং টিকিটে শত শত যাত্রী দাঁড়িয়ে-দাঁড়িয়ে যেতেন। সকল বাধা উপেক্ষা করে ছাদেও যে যার মতো করে উঠে যেতেন। তবে রেল কর্তৃপক্ষ এবার ট্রেনে দাঁড়িয়ে যাওয়ার জন্য স্ট্যান্ডিং টিকিট দিচ্ছে না। চট্টগ্রাম রেল স্টেশনের ম্যানেজার রতন কুমার চৌধুরী আজাদীকে জানান, আমরা ছাদেও উঠতে দিচ্ছি না। যারা টিকিট ছাড়া ট্রেনে উঠে যাচ্ছে তাদেরকে টিটিই-এর মাধ্যমে ট্রেনে টিকিট দিয়ে দিচ্ছি। স্টেশনে হঠাৎ করে যাত্রীর চাপ বেড়েছে। অনেকেই টিকিট ছাড়া চলে আসছেন। আমরা কাউন্টার থেকে কাউকে টিকিট দিচ্ছিনা।
এদিকে নগরীর প্রতিটি দূরপাল্লার বাস কাউন্টারেও যাত্রীদের ভিড়। অগ্রিম টিকিট যারা করেছেন তারা আসা মাত্র দ্রুত চলে যেতে পারছেন। আর যারা অগ্রিম টিকিট করেননি, বাস কাউন্টারে এসেই টিকিট করে যেতে চান- তাদেরকে কয়েক কাউন্টার ঘুরে টিকিটের ব্যবস্থা করতে হচ্ছে।
তবে ট্রেনে এক আসন ফাঁকা রেখে যাত্রী বসলেও বাসে সেটা সম্ভব হচ্ছে না বলে জানান আন্ত:জেলা বাস মালিক সমিতির মহাসচিব অধ্যাপক আলহাজ্ব কফিল উদ্দিন। তিনি আজাদীকে জানান, আমরা এক আসন ফাঁকা রেখে চালাতে চাইলেও যাত্রীদের কারনে সম্ভব হচ্ছে না। যাত্রীদেরকে এক আসন ফাঁকা রেখে বসতে বললে যাত্রীরা বলেন ‘আমরা এক পরিবার-এক সাথে বসতে পারবো।’ টিকিটের হয়রানির ব্যাপারে তিনি বলেন, যাত্রী যেমন আছে তেমনি আমাদের পর্যাপ্ত গাড়িও আছে। কোন রুটে গাড়ির সংকট নেই। কদমতলী বাস টার্মিনাল, অলংকার মোড়, বিআরটিসি বাস স্টেশন, স্টেশন রোড, দামপাড়া গরীবুল্লাহ শাহ মাজার গেইট সব খানে বাস আছে। তবে সবচেয়ে বেশি যাত্রী হচ্ছে নোয়াখালী, চাটখিল, রামগঞ্জ, রায়পুর, লক্ষীপুর, সোনাপুর, ভোলা-চাঁদপুর এবং ব্রাক্ষণবাড়ীয়ার। ২৩ তারিখ থেকে কঠোর লকডাউন ঘোষণা করায় অনেকেই আগে ভাগে গ্রামের বাড়িতে চলে গেছেন বলে জানান আলহাজ্ব কফিল উদ্দিন।
এদিকে গতকাল বেলা তিনটায় চট্টগ্রাম রেল স্টেশনে গিয়ে দেখা গেছে, চাঁদপুরগামী মেঘনা এঙপ্রেস যাত্রীতে ভরপুর। একই অবস্থা ছিল সকালে সুবর্ণ এঙপ্রেসেও।
বেলা সাড়ে ১২টায় নগরীর শাহ আমানত ব্রিজ এলাকায় এবং বিকাল সাড়ে ৪টায় নগরীর অলংকার মোড়ে গিয়ে দেখা গেছে, গ্রামের বাড়িতে ছুটছে মানুষ। একটি বাস ছাড়ার সাথে সাথে আর একটি বাসে হুমড়ি খেয়ে পড়ছে মানুষ। শত কষ্ট-দুর্ভোগ উপেক্ষা করে মানুষ ছুটছে বাড়ির পথে।











