শ্বশুরবাড়ি থেকে অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূর লাশ উদ্ধার

পুলিশ বলছে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা, বাবার দাবি হত্যা

সাতকানিয়া প্রতিনিধি | মঙ্গলবার , ২০ জুলাই, ২০২১ at ৬:২৩ পূর্বাহ্ণ

সাতকানিয়ায় শ্বশুরবাড়ি থেকে অন্তঃসত্ত্বা এক গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করেছে থানা পুলিশ। গৃহবধূর নাম পারভীন আকতার (২৩)। গত রবিবার রাতে উপজেলার বাজালিয়া ইউনিয়নের বড়দুয়ারা গোয়াল উড়া এলাকার শ্বশুরবাড়ি থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। পুলিশের ধারণা পারিবারিক কলহের জের ধরে গৃহবধু গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছে। পারভীন আকতারের বাবার দাবি তার মেয়েকে পরিকল্পিতভাবে পিটিয়ে হত্যা করে গলায় ওড়না বেঁধে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। তবে ঘটনার পর থেকে শ্বশুরবাড়ির লোকজন পলাতক রয়েছে।
এলাকাবাসী জানান, বাজালিয়া ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের বড়দুয়ারা গোয়ালউড়া এলাকার মৃত খায়ের আহমদের পুত্র আহমদ হোসেনের সাথে ৪/৫ বছর আগে পুরানগড় ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের স্কুল পাড়ার আমিন শরীফের মেয়ে পারভীন আকতারের বিয়ে হয়।
পারভীন আকতারের বাবা আমিন শরীফ জানান, বিয়ের পর থেকে শ্বশুরবাড়ির লোকজন নানা কারণে মেয়েকে নির্যাতন করতো। মেয়ের স্বামী আহমদ হোসেন প্রায় সময় মেয়েকে মারধর করতো। গত মাসে মেয়ে আমার বাড়িতে এসেছিল। শ্বশুরবাড়ির লোকজনের নির্যাতনের ভয়ে ওই সময় মেয়ে তাদের বাড়িতে যেতে চাইনি। আমি তাকে জোর করে পাঠিয়েছিলাম। আমার মেয়ে তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বা। ঘটনার দিন মেয়ের চাচা শ্বশুর সোলাইমান বাঁশির মাধ্যমে জানতে পারি আমার মেয়ে মারা গেছে। তখন সেখানে গিয়ে দেখি আমার মেয়ের লাশ খাটের উপর পড়ে আছে। তখন স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন পলাতক ছিল। তারা আমার মেয়েকে পরিকল্পিতভাবে পিটিয়ে হত্যা করে গলায় ওড়না বেঁধে ঝুলিয়ে রেখে সবাই পালিয়ে যায়। এখন তারা আত্মহত্যা করেছে বলে চালিয়ে দেয়ার চেষ্টা করছে।
এদিকে, মেয়ের চাচা শ্বশুর মো. সোলাইমান বাঁশি জানান, আহমদ হোসেনের জ্বর হয়েছে। ঘটনার দিন সে তার স্ত্রীর কাছ থেকে কাঁথা চেয়েছিল। কিন্তু স্ত্রী যথাসময়ে কাঁথা দেয়নি। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে আহমদ হোসেন তার স্ত্রীকে চড়-থাপ্পড় দেয়। এসময় স্ত্রীও তার স্বামীকে লাথি মেরেছে। এ ঘটনার জের ধরে পারভীন আকতার ঘরের বীমের সাথে ওড়না বেঁধে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছে। ওই কক্ষের দরজা ভেতর থেকে হুক লাগানো ছিল। দরজা ভেঙে প্রবেশের পর আমরা তাকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখি। পরে তাকে সেখান থেকে নামিয়ে খাটের উপর রাখা হয়। খবর পেয়ে পুলিশ এসে তার লাশ উদ্ধার করে নিয়ে যায়।
সাতকানিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আনোয়ার হোসেন জানান, পারিবারিক কলহের জের ধরে পারভীন আকতার গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছে। শুনেছি ঘটনার দিন স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হয়েছিল। এসময় স্বামী তাকে চড়-থাপ্পড় মেরেছে। এতে অভিমান করে কক্ষের দরজা ভেতর থেকে বন্ধ করে দিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছে। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য চমেক হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করেছে। এ ঘটনায় মেয়ের বাবা বাদি হয়ে একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করেছে। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট হাতে পাওয়ার আগে এর বাইরে কিছু বলা যাচ্ছে না।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবেপারি হতাশ, ক্রেতা ফিরছেন হাসিমুখে
পরবর্তী নিবন্ধজেলখানায় হবে বিয়ে