করোনাকালে গণপরিবহন বন্ধ থাকায় বেড়ে গেছে সাইকেলের জনপ্রিয়তা। আর এই জনপ্রিয়তাকে কেন্দ্র করে নগরীতে হঠাৎ করেই বেড়ে যায় সাইকেল চোরদের দৌরাত্ম্য। সংঘবদ্ধ এই চক্রে ১৪ বছরের শিশু থেকে আছে ৫০ বছরের নারীও। নগরীর পাঁচলাইশ, চকবাজার, আগ্রাবাদ ও ছোটপুল এলাকাকেন্দ্রিক এমন এক চক্রের খোঁজ মিলেছে ডবলমুরিং থানা পুলিশের সাঁড়াশি অভিযানে। তাদের দলনেতার বয়স মাত্র ১৪ বছর! মঙ্গলবার রাতে বিস্ময়কর এই শিশু চোর মো. আবিদ হোসেন শ্রাবণকে গ্রেপ্তার করেছে ডবলমুরিং থানা পুলিশ। এসময় বিশাল (১৯) ও তাহেরা বেগম (৫০) নামে তার আরও দুই সহযোগীকে গ্রেপ্তার করা হয়। উদ্ধার করা হয় চুরি হওয়া দুইটি বাই সাইকেল। ডবলমুরিং থানার ওসি মোহাম্মদ মহসীন আজাদীকে বলেন, গত ডিসেম্বরে কোতোয়ালী থানায় আমি তাকেসহ আট জনকে গ্রেপ্তার করেছিলাম। বের হয়ে ঠিকই আবার আগের পেশায় ফিরে গেছে সে। গোপন খবরের ভিত্তিতে গত মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১১ টার দিকে পশ্চিম মাদারবাড়ির ডিআইটি রোড এলাকা থেকে শ্রাবণ ও বিশালকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে গ্রেপ্তার করা হয় তাহেরা বেগমকে। এসময় পালিয়ে যায় তার মামা শিশির। পরে শ্রাবণের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ২ টি সাইকেল উদ্ধার করা হয়েছে।
ওসি বলেন, মাত্র ১৪ বছর বয়সেই চুরিতে সেঞ্চুরি করেছে সে! নগরীতে সাইকেল চোরের মূল হোতা সে! যেহেতু সাইকেল চুরির ঘটনায় অধিকাংশই মামলা করেন না তাই তার বিরুদ্ধে মামলা মাত্র ৩টি! জেলও খেটেছে ২ বার! মামা বলেছে, তার বয়স কম বিধায় পুলিশ ধরলেও বেশি দিন রাখবে না- তাই সে চুরিতে আরও বেপরোয়া। তিনি বলেন, শ্রাবণ শুধু বাই সাইকেল চুরি করে। বয়স কম হওয়ায় কেউ তাকে সন্দেহ করে না। তাই হুট করেই যে কোনো ভবনে ঢুকে যায়। এরপর মাত্র ৩০ সেকেন্ডের মধ্যেই বাই সাইকেল নিয়ে হাওয়া হয়ে যায়। তার মামা শিশিরের বিরুদ্ধেও একটি মামলা রয়েছে। মূলত শ্রাবণ সাইকেল চুরি করে আনে আর মামা শিশির সেগুলো বিক্রি করে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে শ্রাবণ পুলিশকে জানিয়েছে, সে প্রথমে কৌশলে বন্ধুদের সাইকেল চুরি করত। এক পর্যায়ে সাইকেলের তালা কাটা শেখে। এরপর বিভিন্ন ভবনে ঢুকে চুরি করা শুরু করে। এখন তার তালা ভেঙে সাইকেল চুরি করতে মাত্র ৩০ সেকেন্ড সময় লাগে! এই বয়সেই সে শতাধিক সাইকেল চুরি করেছে। গত ডিসেম্বরে কোতোয়ালী থানা পুলিশ তার তথ্যমতে ১১ টি সাইকেল উদ্ধার করেছিল।