চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের শতাধিক চিকিৎসককে একযোগে বিভিন্ন হাসপাতালে বদলি করা হয়েছে। সংযুক্তির মাধ্যমে এসব চিকিৎসককে জেলা-উপজেলার বিভিন্ন হাসপাতালে পদায়ন করা হয়েছে। বদলিকৃতদের একটি বড় অংশই সিনিয়র চিকিৎসক। গতকাল ৫ জুলাই এ সংক্রান্ত একাধিক প্রজ্ঞাপন জারি করেছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের পার-১ শাখার উপসচিব জাকিয়া পারভীনের স্বাক্ষরে জারি করা প্রজ্ঞাপনে কোভিড-১৯ অতিমারি মোকাবেলায় এবং জনসেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে এসব চিকিৎসকদের সংযুক্তিতে পদায়নের কথা বলা হয়েছে। প্রজ্ঞাপনে আগামীকালের (৭ জুলাই) মধ্যে এসব চিকিৎসকের পদায়নকৃত কর্মস্থলে যোগ দিতে বলা হয়েছে। অন্যথায় ৮ জুলাই বর্তমান কর্মস্থল থেকে তাৎক্ষণিক অবমুক্ত হিসেবে গণ্য হবেন বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে দেখা যায়, চমেক হাসপাতাল থেকে ১২০ জনেরও বেশি চিকিৎসককে জেলা-উপজেলার বিভিন্ন হাসপাতালে সংযুক্তিতে পদায়ন করা হয়েছে। এর মধ্যে চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালেই দেয়া হয়েছে ৬০ জন। বিআইটিআইডি হাসপাতালে দেয়া হয়েছে ১৬ জনকে। খাগড়াছড়ি জেলা সদর হাসপাতালে ১৮ জন ও ফেনী জেলা সদর হাসপাতালে ১৭ জনকে পদায়ন করা হয়েছে। এছাড়া ফটিকছড়ি উপজেলায় ৮ জন ও ফেনীর দাগনভূঞা উপজেলা হাসপাতালে ৭ জনকে সংযুক্তিতে পদায়ন করা হয়েছে। এর বাইরে ৩০ জনকে চমেক হাসপাতালেই সংযুক্তিতে পদায়ন দেখানো হয়েছে।
একযোগে এত সংখ্যক চিকিৎসককে বদলির কারণে নিজেদের (চমেক) হাসপাতালে করোনার চিকিৎসাসহ অন্যান্য চিকিৎসা সেবা মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত হবে বলে মন্তব্য করেছেন চমেক হাসপাতাল পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এস এম হুমায়ুন কবীর। হতাশা প্রকাশ করে তিনি আজাদীকে বলেন, এত সংখ্যক চিকিৎসক নিয়ে গেলে আমার এখানে চিকিৎসার জন্য লোক থাকবেনা। আর চিকিৎসার জন্য ডাক্তার না থাকলে করোনা ওয়ার্ডসহ অন্যান্য ওয়ার্ডেও মারাত্মক প্রভাব পড়বে। করোনা ওয়ার্ড বন্ধ করে দিতে হয় মতো পরিস্থিতিও হতে পারে। আমি বিষয়টি এরই মধ্যে সংশ্লিষ্ট সকলকে অবহিত করেছি। সার্বিক বিবেচনায় মন্ত্রণালয়ের এ সিদ্ধান্ত পুন:বিবেচনার অনুরোধ জানিয়েছেন চমেক হাসপাতাল পরিচালক। এ নিয়ে মন্ত্রণালয়ের সচিব মহোদয়ের সাথে কথা বলবেন বলেও জানান তিনি।
এদিকে, ৬০ জন চিকিৎসককে পদায়নে চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে জায়গা সংকটের আশঙ্কা করছেন হাসপাতাল সংশ্লিষ্টরা। এ বিষয়ে জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কের দায়িত্বে থাকা চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি বলেন- সব সিনিয়র চিকিৎসকদের পদায়ন করা হয়েছে। কিন্তু এত সংখ্যক চিকিৎসককে এক সাথে বসতে দেয়ার মতো জায়গার সংস্থান হবে কী না, একটু দ্বিধা রয়েছে। অবশ্য জেনারেল হাসপাতালে বর্তমানে উপজেলা পর্যায়ের ৬০ জনের মতো চিকিৎসক কর্মরত আছেন জানিয়ে সিভিল সার্জন বলেন, উপজেলা পর্যায়ে করোনা সংক্রমন বেড়ে যাওয়ায় এসব চিকিৎসককে হয়তো নিজেদের পুরণো কর্মস্থলে ফিরিয়ে নেয়া হতে পারে।