চলমান কঠোর বিধি নিষেধের মধ্যে স্কুলে বিয়ের অনুষ্ঠানের অনুমতি চেয়েছিলেন স্কুলটির অভিভাবক সদস্য একরাম মিয়া। না পেয়ে নিয়ে আসেন তার ভাই যুবদল নেতা মিয়া হারুন খান ও তার সাঙ্গপাঙ্গদের। তারা এসে লাঞ্ছিত করেন প্রধান শিক্ষককে। স্কুলে শিক্ষকদের প্রবেশ নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন। শুধু তাই নয়, প্রাণনাশের হুমকি দেন প্রধান শিক্ষককে। নিরুপায় হয়ে মামলা করেন প্রধান শিক্ষক ডবলমুরিং থানায়। গ্রেপ্তার হন হুমকিদাতা যুবদল নেতা মিয়া হারুন খান। তবে তার সঙ্গীরা পালিয়ে যায়।
ডবলমুরিং থানার ওসি মোহাম্মদ মহসীন বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে আজাদীকে বলেন, গত ৩০ জুন এ ঘটনা সংঘটিত হওয়ার পর ৩ জুলাই এ সংক্রান্ত একটি মামলা করেন মনসুরাবাদ এলাকার খান সাহেব আব্দুল হাকিম উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নিজাম উদ্দিন। মামলার আসামিরা হলেন ডবলমুরিং থানার মনছুরাবাদ মিয়া বাড়ির মিয়া মো. হারুন খান, বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের অভিভাবক ক্যাটাগরির সদস্য মো. একরাম মিয়া, জানে আলম, মো. মাসুদ, মোঃ প্রিন্স, মো. আল নাহিয়ান। মামলার পরপরই পুলিশ এই যুবদল নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে।
ঘটনার বিবরণে ওসি মহসীন জানান, করোনার জন্য বন্ধ স্কুলে বিয়ের অনুমতি দেননি স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি লে. কর্ণেল (অব.) ইকবাল শফি। অনুমতির তোয়াক্কা না করে গত ২৫ জুন স্কুলে বিয়ের আয়োজন করেন একরাম মিয়া। বিয়ে আয়োজনের এ খবর পেয়ে গোপন খবরের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে সে বিয়ে বন্ধ করে দেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। স্কুলে মেয়ের বিয়ে হতে না দেওয়ায় শিক্ষকদের স্কুলে আসতে মানা করে দেন আসামিরা। এ ব্যাপারে শিক্ষা বোর্ডে অভিযোগ করলে গত ৩০ জুন পাঁচলাইশ/ডবলমুরিং থানা শিক্ষা অফিসার মো. শফিউল আলমের নেতৃত্বে একটি তদন্ত টিম স্কুলে আসে। এসময় প্রধান শিক্ষকসহ আরও কয়েকজন শিক্ষকও আসেন। তাদের আসতে দেখেই জোরপূর্বক স্কুলে ঢুকেন একরাম মিয়ার ভাই চট্টগ্রাম মহানগর যুবদলের সহ সভাপতি মিয়া মো. হারুন খান, আরেক ভাই জানে আলম, মো. মাসুদ, মো. প্রিন্স এবং মো. আল নাহিয়ান। তারা প্রধান শিক্ষকের রুমে ঢুকেই অকথ্য ভাষায় গালাগাল করেন। এক পর্যায়ে টেবিলে থাপ্পড় মেরে তাকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেন। এসময় তাকে স্কুলের সভাপতি বাঁচাতে পারবে না উল্লেখ করে হত্যারও হুমকি দেন। এ ঘটনায় শনিবার রাতে প্রধান আসামি যুবদল নেতা মিয়া মো. হারুন খানকে গ্রেপ্তার করা হয়। অন্য আসামিরা আত্মগোপনে চলে যাওয়ায় তাদের আটক করা যায়নি বলে জানান ওসি।