মগবাজারে বিস্ফোরণস্থলের বাতাসে ‘হাইড্রোকার্বন গ্যাস’

পুলিশের ৭ সদস্যের কমিটি

| মঙ্গলবার , ২৯ জুন, ২০২১ at ৫:৪৭ পূর্বাহ্ণ

মগবাজারে ভয়াবহ বিস্ফোরণে ক্ষতিগ্রস্ত ভবনের ধ্বংসস্তূপের মধ্যে বাতাসে ‘হাইড্রোকার্বন’ গ্যাসের উপস্থিতি পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন প্রধান বিস্ফোরক পরিদর্শক আবুল কালাম আজাদ। গতকাল সোমবার দুর্ঘটনাস্থল ঘুরে দেখার পর তিনি বলেন, আমরা গ্যাস ডিটেকটর নিয়ে গিয়েছিলাম। এখানে প্রাকৃতিক গ্যাসের আলামত আছে কিনা তা জানার চেষ্টা করেছি- এটা হাইড্রোকার্বন ডিটেক্ট করে। এখানে হাইড্রোকার্বনের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। খবর বিডিনিউজের। এদিকে বিস্ফোরণের ঘটনা অনুসন্ধানে সাত সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে পুলিশ।এর আগে ফায়ার সার্ভিস বলেছিল, মগবাজার আড়ংয়ের উল্টো দিকে আউটার সার্কুলার রোডের ৭৯ নম্বর হোল্ডিংয়ের তিনতলা ওই ভবনে গ্যাস জমেই বিস্ফোরণ ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে তারা ধারণা করছে। তবে তদন্ত শেষ হওয়ার আগে এ বিষয়ে নিশ্চিত করে কিছু বলতে রাজি হননি ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক সাজ্জাদ হোসাইন। প্রধান বিস্ফোরক পরিদর্শক আবুল কালাম আজাদও বলেছেন, বিস্ফোরণে উৎস সম্পর্কে এখনই নিশ্চিত করে কিছু বলার ‘সুযোগ নেই’।
সেখানে বাতাসে গ্যাস পাওয়া গেছে, কিন্তু গ্যাস থেকেই যে বিস্ফোরণ হয়েছে- এমনটা এখনই বলা যায় না। দুর্ঘটনাস্থলে গ্যাসের লাইনে লিকেজ হতে পারে, এটাই যে অন্যতম কারণ হতে হবে, তা নয়।
আবুল কালাম আজাদ বলেন, উৎসটা কী এখন পর্যন্ত বলা যাবে না। ধ্বংসস্তূপের মধ্যে তা নিশ্চিতের সুযোগও নেই। একটার কারণে আরেকটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ইলেকট্রিক সার্কিটের কারণে কিছু ক্ষতিগ্রস্ত হলে সেখানে আগুন লাগলে আশপাশে সিলিন্ডার বা ন্যাচারাল গ্যাসের লাইন থাকুক- তাহলে এসবও এর আওতায় চলে আসে। ভবনটি এখন ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ধ্বংস্তূপের মধ্যে ঢুকে কোথাও মুভ করব, এমন সুযোগ ছিল না। ছাদও ভাঙা। দুয়েক জায়গায় গ্যাস ডিটেক্টর নিয়ে কাজ করা হয়েছে। প্রধান বিস্ফোরক পরিদর্শক জানান, মগবাজারের ঘটনায় বিস্ফোরক পরিদপ্তরের পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। এছাড়া পুলিশের পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হচ্ছে, সেখানেও বিস্ফোরক পরিদপ্তরের প্রতিনিধি থাকবেন। তবে এ ক্ষেত্রে আলাদা প্রতিবেদন দেওয়া হবে না, পুলিশের তদন্ত প্রতিবেদনেই আমাদের বিষয়টি যুক্ত হয়ে যাবে।
পুলিশের ৭ সদস্যের কমিটি: এদিকে মগবাজারে বিস্ফোরণের ঘটনা অনুসন্ধানে সাত সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে পুলিশ। কমিটির সদস্যদের ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে আগামী সাত কর্মদিবসের মধ্যে সুস্পষ্ট মতামতসহ বিস্তারিত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) এর প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার আসাদুজ্জামানকে কমিটির সভাপতি করা হয়েছে। কমিটির সদস্য সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন একই ইউনিটের বোম্ব ডিসপোজাল শাখার অতিরিক্ত উপ পুলিশ কমিশনার (এডিসি) ।
অন্য সদস্যরা হলেন- সিআইডির ফরেনসিক বিভাগের বিশেষ পুলিশ সুপার, সিটিএসবির (পূর্ব) বিশেষ পুলিশ সুপার, অ্যান্টি টেররিজম ইউনিটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের সহ-অধিনায়ক ও বিস্ফোরক পরিদপ্তরের উপপ্রধান বিস্ফোরক পরিদর্শক।
পুলিশ সদর দপ্তরের এআইজি মোহাম্মদ আয়ুব স্বাক্ষরিত এই সংক্রান্ত এক পত্রে বলা হয়, বিস্ফোরণের ঘটনার কারণ অনুসন্ধান করে সুনির্দিষ্ট দায়-দায়িত্ব নিরূপণে এই কমিটি গঠন করা হয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধকুরিয়ার সার্ভিস থেকে জব্দ ৩৯ লাখ টাকার জর্দা
পরবর্তী নিবন্ধজেল-জরিমানাসহ নতুন সড়ক আইনে সায়