টাইগারপাস-লালখান বাজার অংশে আপত্তি চসিকের

এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে ।। আপত্তি র‌্যাম্পেও, গ্রাউন্ড লেবেলে সংযোগ স্থাপনের প্রস্তাব

আজাদী প্রতিবেদন | মঙ্গলবার , ২২ জুন, ২০২১ at ৫:৩৪ পূর্বাহ্ণ

নগরীর এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের টাইগারপাস থেকে লালখান বাজার অংশে ‘জনস্বার্থে’ আপত্তি জানিয়েছে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক)। একইসঙ্গে সড়ক সংকুচিত হওয়ায় র‌্যাম্প নির্মাণেও আপত্তি আছে চসিকের।
সংস্থাটি মনে করে, টাইগারপাস থেকে লালখান বাজার অংশে ফ্লাইওভার নির্মাণ করা হলে দুই পাশের পাহাড়ের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য জনগণ উপভোগ করতে পারবে না। তাই বারিক বিল্ডিং থেকে আসা ফ্লাইওভার এবং লালখান বাজার পর্যন্ত বিদ্যমান ফ্লাইওভারের সংযোগ স্থাপন গ্রাউন্ড লেবেলে করার প্রস্তাব দিয়ে গতকাল সিডিএ চেয়ারম্যানকে দাপ্তরিক পত্র দিয়েছে চসিক।
অবশ্য কয়েকদিন আগে টাইগারপাসের পাহাড় রক্ষায় ফ্লাইওভারের নতুন ডিজাইন চূড়ান্ত করার কথা জানিয়েছে সিডিএ। নতুন ডিজাইন অনুযায়ী, বারিক বিল্ডিং থেকে আসা চার লেনের ফ্লাইওভার দেওয়ানহাটে ঢাকা-চট্টগ্রাম ট্রাংক রোডে নির্মিত ফ্লাইওভারের উপর দিয়ে গিয়ে দেওয়ানহাট ওভারব্রিজের পশ্চিম পাশ দিয়ে এসে টাইগারপাস পার হয়ে বর্তমানে সিটি কর্পোরেশন কার্যালয়ের রাস্তার সামনে পৌঁছুবে। চার লেনের এই ফ্লাইওভার পাহাড়ের দিকে না গিয়ে রাস্তার মাঝখানে থাকবে। পিলারও রাস্তার মাঝখানে হবে। চসিক কার্যালয়ের রাস্তা পর্যন্ত পৌঁছার পর চার লেনের ফ্লাইওভারের দুই লেন ম্যাজিস্ট্রেট কলোনির আগে রাস্তায় নেমে যাবে। বাকি দুই লেন রাস্তার মাঝখান দিয়ে গিয়ে ওয়াসা মোড়ে বিদ্যমান আখতারুজ্জামান ফ্লাইওভারের সাথে যুক্ত হবে।
এদিকে নতুন ডিজাইনের বিষয়টি প্রকাশ হওয়ার পর চসিকের পদস্থ কর্মকর্তারা নিজেদের মধ্যে আলাপ-আলোচনা করেন। পরে মেয়রের নির্দেশে পত্র দেওয়া হয় সিডিএকে।
চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী মুহাম্মদ মোজাম্মেল হক স্বাক্ষরিত পত্রে বলা হয়, ‘আখতারুজ্জামান ফ্লাইওভারের লালখান বাজার অংশে সংযোগ স্থাপনার জন্য সিডিএ থেকে প্রাপ্ত প্রস্তাবনামতে, টাইগারপাস থেকে লালখান বাজার অংশে সড়কপথের উপর ফ্লাইওভার নির্মাণ করা হবে। উক্ত সড়ক পথের দুই পাশে অত্যন্ত দৃষ্টিনন্দন প্রাকৃতিক দুটি পাহাড় রয়েছে। তাই এ অংশে ফ্লাইওভার নির্মাণ করা হলে দৃষ্টিনন্দন পাহাড় দুটির প্রাকৃতিক দৃশ্য অবলোকন করা থেকে জনগণ বঞ্চিত হবে। কাজেই জনস্বার্থে উক্ত অংশে ফ্লাইওভার নির্মাণ না করে বর্ণিত ফ্লাইওভার দুটির সংযোগ স্থাপন গ্রাউন্ড লেবেলে সমাধা করার জন্য মাননীয় মেয়রের নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো’।
এদিকে ফ্লাইওভারের নতুন ডিজাইনে জিইসি মোড়ে পেনিনসুলা হোটেলের পাশ থেকে একটি র‌্যাম্প বিদ্যমান আক্তারুজ্জামান ফ্লাইওভারে যুক্ত করে দেওয়া হবে। নিউ মার্কেট থেকে আসা রাস্তার সাথে টাইগারপাস মোড়ে একটি র‌্যাম্প ফ্লাইওভারে যুক্ত করা হবে। এছাড়া আমবাগান রাস্তার মাথায় একটি র‌্যাম্প নামানো হবে। আগ্রাবাদসহ অন্যান্য লুব ও র‌্যাম্পের ডিজাইন অপরিবর্তিত থাকছে। চসিকের পত্রে আপত্তি আছে র‌্যাম্প নিয়েও।
এ বিষয়ে চসিকের পত্রে বলা হয়, ‘সিডিএ কর্তৃক ইতোপূর্বে নির্মিত আখতারুজ্জামান ফ্লাইওভারের জন্য একই সড়কপথে র‌্যাম্প নির্মাণের কারণে গ্রাউন্ড রোড সংকুচিত হয়েছে। এতে সড়কপথে যান চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি হচ্ছে’। তাই প্রকল্পের অধীনে একই সড়কপথে র‌্যাম্প নির্মাণ না করার জন্যও অনুরোধ করে চসিক।
এ বিষয়ে চসিকের প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম আজাদীকে বলেন, টাইগারপাস থেকে লালখান বাজার সামান্য জায়গা। দুয়েক মিনিটে পার হওয়া যায়। সেখানে ফ্লাইওভার না করেও গ্রাউন্ড লেবেলে সংযোগ স্থাপন করা সম্ভব।
তিনি বলেন, আমরা কনসালটেন্ট প্রতিষ্ঠানের সাথে কথা বলেছি। তারা জানিয়েছে, তাদের পাহাড় কাটতে না হয় মত ডিজাইন করার জন্য বলা হয়েছিল। তারা সে আলোকে করেছেন। যদি তাদের বলা হতো, পাহাড়ের সৌন্দর্য উপভোগের সুযোগ রেখেই ডিজাইন করতে তাহলে তারা সেভাবেই করতেন।
সিডিএ সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭ সালের ১১ জুলাই একনেকে অনুমোদন পায় লালখান বাজার থেকে বিমান বন্দর পর্যন্ত চার লেনের ফ্লাইওভার প্রকল্পটি। ১৬ দশমিক ৫ কিলোমিটার দীর্ঘ ফ্লাইওভার নির্মাণে প্রকল্পটির ব্যয় ধরা হয় তিন হাজার ২৫০ কোটি ৮৩ লাখ ৯৪ হাজার টাকা।

পূর্ববর্তী নিবন্ধকর্ণফুলীতে ডুবল পাথরবোঝাই জাহাজ
পরবর্তী নিবন্ধবিদ্রোহী প্রার্থীদের দলের পদে রাখা হবে না