বিখ্যাত দার্শনিক, বুদ্ধিজীবী ও সাহিত্য ব্যক্তিত্ব জা পল সার্ত্র অস্তিত্ববাদী দর্শনের অন্যতম প্রবক্তা হিসেবে সুপরিচিত। ঔপন্যাসিক, নাট্যকার, রাজনৈতিক কর্মী, জীবনীকার এবং সাহিত্য সমালোচক হিসেবেও তিনি খ্যাতিমান। তাঁর চিন্তাধারা মার্কসীয় দর্শন দ্বারাও প্রভাবিত হয়।
ফ্রান্সের প্যারিসে ১৯০৫ সালের ২১শে জুন জা পল সার্ত্রের জন্ম। দর্শনে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করে তিনি যুক্ত হন শিক্ষকতার সাথে। দীর্ঘকাল সম্পাদনা করেছেন বিখ্যাত পত্রিকা ‘মডার্ন টাইমস’। সার্ত্রের প্রথম প্রকাশিত রচনা ‘নসিয়ে’ নামের একটি উপন্যাস, প্রকাশিত হয় ১৯৩৮ সালে। তবে পরের বছর ছোটগল্পের সংকলন ‘ইন্টিমেসি’ প্রকাশিত হলে সার্ত্র ব্যাপক পরিচিতি লাভ করেন। ১৯৩৯ সালে সার্ত্র ফরাসি আর্মিতে যোগ দেন। সেখানে তিনি আবহাওয়াবিদ হিসেবে কাজ করতেন। পরের বছর জার্মান বাহিনির হাতে বন্দি হয়ে নয় মাস বন্দি-জীবন কাটাতে হয় তাঁকে। ১৯৪১-এ সার্ত্র যোগ দেন সমাজতন্ত্রী দলে। এ সময় তাঁর মধ্যে মার্কসীয় দর্শনের প্রভাব লক্ষ করা যায়, তাঁর রচনার মধ্যে যা স্পষ্ট হয়ে ওঠে। সার্ত্রের বিভিন্ন সাহিত্যকর্মের মধ্যে ‘দি ফ্লাইস’, ‘নো একজিস্ট’, ‘দি এজ অব রিজন’, ‘দি ডিপ্রাইভ’, ‘ট্রাবলড স্লিপ’, ‘দি কনডেমড অব অলটোনা’, ‘সিচুয়েশন’, ‘দ্য ফিলজফি অব জা পল সার্ত্র’ প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য। বিখ্যাত দার্শনিক ও লেখক আলব্যের কাম্যুর গুপ্ত পত্রিকা ‘কমব্যাট’-এর একজন গুরুত্বপূর্ণ প্রদায়ক ছিলেন সার্ত্র।
তিনি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করতেন মানুষের স্বাধীনতা, নিজস্বতা ও যথার্থতা নিজেকেই অর্জন করে নিতে হয়। তাঁর আজীবন সঙ্গী ছিলেন বিখ্যাত নারীবাদী লেখক এবং সমাজ চিন্তাবিদ ও দার্শনিক সিমন দ্য ব্যোভওয়া। সিমন সার্ত্রের জীবনী রচনা করেছিলেন। ১৯৬৪ সালে সার্ত্রকে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয়। কিন্তু ভিয়েতনাম যুদ্ধে পাশ্চাত্য দেশগুলোর বিধ্বংসী মনোভাবের প্রতিবাদে সার্ত্র নোবেল পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করেন। ১৯৮০ সালের ১৫ই এপ্রিল সার্ত্র প্রয়াত হন।