চট্টগ্রাম কলেজে ছাত্রলীগের দু’পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় যুবলীগ নামধারী নূর মোস্তফা টিনুকে প্রধান আসামি করে ১২জনের বিরুদ্ধে মামলা (নং-১৫(৬)২১) হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার চকবাজার থানায় কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি মাহমুদুল করিমের অনুসারী কলেজ ছাত্রলীগ নেতা ও ইংরেজী বিভাগের শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল সায়মুন বাদি হয়ে মামলাটি করে। অন্যদিকে একই ঘটনায় কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সুভাষ মল্লিক সবুজের অনুসারী আনসার উদ্দিন বাদি হয়ে পাল্টা একটি মামলা করেছে। মামলায় কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি মাহমুদুল করিমসহ ১১ জনকে আসামি করা হয়। চকবাজার থানার ওসি মো. আলমগীর মাহমুদ আজাদীকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, নূর মোস্তফা টিনুসহ মামলার অন্যান্য আসামিরা হল- আমির উদ্দিন, জিয়া উদ্দিন আরমান, সৌরভ উদ্দিন বাপ্পা, সিরাজুল ইসলাম তোরাব, মো. মহিউদ্দিন সৌরভ, মনির উদ্দিন রেহান, আবুল কালাম, আনসার উদ্দিন, মন্টি চৌধুরী, ইমন হোসেন ও মো. আব্দুল্লাহ। এরমধ্যে দুজনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
এর আগে গত বুধবার দুপুর দেড়টার দিকে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বন্ধ ক্যাম্পাসে সংঘর্ষে জড়ায় চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রলীগের দুই পক্ষ। কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি মাহমুদুল করিম ও সম্পাদক সুভাষ মল্লিক সবুজের গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় চার শিক্ষার্থীসহ ৭ জন আহত হয়। দুই জনকে আটক করে পুলিশ। তারা হল- বহিরাগত মহিউদ্দীন সৌরভ ও চট্টগ্রাম কলেজের ডিগ্রি প্রথম বর্ষের ছাত্র সিরাজুল ইসলাম তোরাব। দুইজনই নূর মোস্তফা টিনুর অনুসারী হিসেবে পরিচিত। এ দু’জনকে বৃহস্পতিবার আদালতে পাঠিয়েছে পুলিশ।
প্রসঙ্গত: টিনু নিজেকে সরকারি দলের যুবলীগ নেতা পরিচয় দিয়ে সন্ত্রাসী কার্যকলাপে সক্রিয় দীর্ঘদিন ধরে। অন্যদিকে তার ভাই শিপু বিএনপির রাজনীতির আড়ালে ভাইয়ের অপরাধ সাম্রাজ্যে নেতৃত্ব দিচ্ছে। রাজনৈতিক সাইনবোর্ড ব্যবহার করে দুই সহোদর চকবাজার ও পাঁচলাইশ থানা এলাকায় একছত্র আধিপত্য বিস্তার করেছে। দীর্ঘ দুই দশক সক্রিয় তারা। ২০১৯ সালে দেশব্যাপী শুদ্ধি অভিযানে অস্ত্রসহ র্যাবের হাতে আটক হয় টিনু। তার কাছ থেকে একটি শটগান ও একটি পিস্তলসহ গুলি উদ্ধার হয়। চলতি বছর ২৩ জানুয়ারি জামিনে বেরিয়ে আসে টিনু। বর্তমানে পুরোদমে চাঁদাবাজি, ছিনতাই, মাদক ব্যবসাসহ তার নিয়ন্ত্রিত কিশোর গ্যাংগুলোর বেপরোয়া কার্যক্রম চলছে এলাকা জুড়ে। ২০১৭ সালে ব্যবসায়ীর পাঁচ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনায় তার ভাই শিপু আটক হয়। পরে বিস্তারিত স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেয়। ছিনতাইয়ের ঘটনায় আটক ভাইকে থানা থেকে ছাড়িয়ে আনতে পাঁচলাইশ থানা ঘেরাও করেছিল টিনু ও তার অনুসারীরা।