চট্টগ্রাম ওয়াসার গড় বিলের সিদ্ধান্ত বাতিল হচ্ছে আগামী বোর্ড সভায়। এতে দীর্ঘ ২১ বছর পর গড় বিলের গ্যাঁড়াকল থেকে মুক্তি পাচ্ছেন নগরবাসী।
সংশ্লিষ্টরা জানান, প্রতি মাসে নগরীর নানা প্রান্ত থেকে পানির গড় বিলের অভিযোগ নিয়ে ওয়াসা কার্যালয়ে ভিড় জমান ভুক্তভোগীরা। নগরীর যেই এলাকায় পানির মিটার নষ্ট ছিল, সেখানে বছরের পর বছর গড় বিল দেওয়া হয়েছে। অপরদিকে অনেক জায়গায় মিটার রিডার না গিয়ে গড় বিল দিয়ে দেন। ওয়াসার রাজস্ব বিভাগের এক কর্মকর্তা গতকাল আজাদীকে জানান, নগরীতে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি আবাসিক ও বাণিজ্যিক গ্রাহকদের কাছে ওয়াসা একশ কোটিরও বেশি বিল পায়। এর মধ্যে গড় বিলও রয়েছে। এ ব্যাপারে ওয়াসার বোর্ড সদস্য সাংবাদিক মহসীন কাজী আজাদীকে বলেন, ২০০০ সালের ডিসেম্বরে ১৬৫তম অভ্যন্তরীণ বোর্ড সভার সিদ্ধান্তের আলোকে গ্রাহকদের কাছ থেকে পানির গড় বিল আদায় করে আসছে চট্টগ্রাম ওয়াসা। এরপর দীর্ঘ ২১ বছর ধরে গড় বিল প্রথার গ্যাঁড়াকলে হয়রানির শিকার হয়ে আসছেন গ্রাহকরা।
তিনি বলেন, আমাদের গত ৬১তম বোর্ড সভায় চেয়ারম্যান সাহেবকে উদ্দেশ্যে করে বলেছিলাম, দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে আমাকে প্রতিনিয়ত গড় বিল নিয়ে অসংখ্য গ্রাহক অভিযোগ করে আসছেন। যদি সত্যিই ১৬৫তম অভ্যন্তরীণ বোর্ড সভায় গড় বিলের সিদ্ধান্ত হয়ে থাকে, তাহলে আজকের সভায় এই গড় বিল প্রথা বাতিল করা হোক। আমার এই দাবির প্রতি বোর্ডের সকলে একমত হন। এরই প্রেক্ষিতে ওয়াসার উপ ব্যবস্থাপনা পরিচালককে (অর্থ) প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিকে আগামী ৬২তম বোর্ড সভায় এ ব্যাপারে তদন্ত রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে। আগামী বোর্ড সভায় গড় বিলের অগণতান্ত্রিক সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবি জানাবেন বলে উল্লেখ করেন মহসীন কাজী। তিনি বলেন, আমার দাবি হচ্ছে গ্রাহক যে পরিমাণ পানি ব্যবহার করবে, সেই পরিমাণ পানির বিল দেবে। এদিকে গড় বিলের ব্যাপারে চট্টগ্রাম ওয়াসার উপ ব্যবস্থাপনা পরিচালক (অর্থ) মো. শামসুল আলম আজাদীকে বলেন, ওয়াসার ১৬৫তম অভ্যন্তরীণ বোর্ড সভায় গড় বিলের ব্যাপারে একটি সিদ্ধান্ত ছিল। সেই অনুযায়ী এতদিন বিল আদায় করা হচ্ছে। এখন আমাকে এই বিষয়টি তদন্ত করতে বলা হয়েছে। আমি তদন্ত করেছি। গড় বিলের বিষয়টি পেয়েছি। ৬২তম সভায় তা উপস্থাপন করবো।