সরকার ঘোষিত লকডাউনে দীর্ঘ দিন জেলা ও আন্তঃজেলা গণপরিবহন বন্ধ ছিল। কিন্তু পরিবহন শ্রমিক কর্মচারী ও মালিকপক্ষের বিভিন্ন দাবী দাওয়ার প্রেক্ষিতে সরকার পরিবহন মালিক, শ্রমিক কর্মচারীদের পরিবার ও তাঁদের জীবন জীবিকার কথা বিবেচনা করে বেশ কয়েকটি শর্ত নির্ধারণ করে এবং বিআরটিয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গাড়ির ধারণ ক্ষমতার অর্ধেক যাত্রী, দুই সিটে একজন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে অর্ধেক সিট খালি এবং কম যাত্রীর পরিবহনে এ-ক্ষতি পোষাতে ভাড়া পূর্বের চেয়ে ৬০ শতাংশ বৃদ্ধির শর্তসাপেক্ষে পর্যায়ক্রমে শহর, জেলা ও দূরপাল্লার গণপরিবহন চালু হলেও সব শর্ত এখন সীমাবদ্ধ। অথচ সব শর্ত শতভাগ পূরণ করার অঙ্গীকার করেই গণপরিবহন চলাচলের অনুমতি দেয় সরকার। কিন্তু অল্পদিনের মধ্যেই এ-শর্ত পুরোপুরি উধাও হয়ে যায়। শুধু দূরপাল্লার পরিবহন কিছুটা শর্ত মানলেও শহর ও জেলা পর্যায়ে গণপরিবহনে সরকারি সিদ্ধান্ত মানার ক্ষেত্রে ছিটেফোঁটাও দেখা যায়না। শুধু তা নয়, সরকারি নির্দেশনা উপেক্ষা করে সমস্ত গণপরিবহন নির্ধারিত ভাড়ার পরিবর্তে যাত্রীদের কাছ থেকে দ্বিগুণ ভাড়া এখনো আদায় করছে। এমনকি নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে সব সিট ভর্তি ও দাঁড়িয়ে গাদাগাদি করে যাত্রী উঠানামা নিয়মে পরিণত হয়েছে। শুধু তা নয়, তাঁদের অন্যায়, অনিয়ম ও ভাড়া দ্বিগুণের প্রতিবাদ করেও হচ্ছেনা কোন লাভ। কারণ ভাড়া ও অতিরিক্ত যাত্রীর বিষয়ে জানতে চাইলে উল্টো তাঁরা একত্রীত হয়ে হয়রানী, লাঞ্ছিত এবং নাজেহাল করার মতো ঘটনাও ঘটছে প্রতিনিয়ত। এমনকি সারাদেশে গণপরিবহনের ভাড়া নিয়ে নৈরাজ্য ও ভোগান্তির খবর বিভিন্ন গণমাধ্যমে অহরহ প্রকাশিত হলেও বর্তমান লকডাউনের অজুহাতকে পুঁজি করে প্রতিনিয়ত যাত্রী হয়রানী তাঁদের কাছে মামুলি ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। বলাবাহুল্য সাধারণ নিন্ম মধ্যবিত্ত ও দারিদ্র্য শ্রেণীভুক্তরাই গণপরিবহণের উপর প্রায় নির্ভরশীল। আর এই করোনাকালীন এই নির্ভরশীলতাকে পুঁজি করে বাড়তি ভাড়া আদায়ে তাঁরা ব্যস্ত। সুতরাং, অতিরিক্ত ভাড়া নিয়ে নৈরাজ্য ও ভোগান্তি যেন যাত্রী সাধারণকে পোহাতে নাহয় সেদিকে নজর দেওয়া সহ সরকারের যথাযথ মনিটরিং করা খুবই প্রয়োজন।