প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রে হয় ইয়াবার নেশা নয়তো জুয়ার নেশায় অপরাধীরা অপরাধে জড়াচ্ছে। চট্টগ্রাম নগরীর বিভিন্ন থানায় ধরা পড়া অপরাধীদের তথ্য পর্যালোচনা করে এবং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে এই তথ্য জানা গেছে। তাদের মতে, অপহরণ থেকে চুরি, ছিনতাই থেকে ডাকাতি-সকল অপরাধে ইয়াবা অথবা জুয়ার সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে।
ডবলমুরিং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসীন আজাদীকে বলেন, উল্লেখিত অপরাধগুলো তো আছেই, এমনকি মাদক ব্যবসায় জড়িতরাও এ দুটো নেশায় জড়িত। নিজেদের মাদকের নেশা মেটাতে তারা মাদক বিক্রি করছে। তাতে তার নেশার টাকাটা উঠে আসছে মাদক বিক্রির টাকা থেকে। এরা ধরা পড়ছে, আবার জামিনে বের হয়ে নেশার টাকা জোগাড়ে অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে। কোতোয়ালী থানার ওসি নেজাম উদ্দীন প্রায় একই সুরে বলেন, গত চার মাসে আমাদের থানায় যত অপরাধী ধরা পড়েছে, তার মধ্যে অধিকাংশই মাদক কিংবা জুয়ার নেশায় আক্রান্ত। এদের ধরতে আমাদের যতটা না কষ্ট হয়, তার চেয়ে দ্রুত গতিতে তারা জামিন পেয়ে যায়। এতে আমাদের কোনো হাত নেই। কিন্তু অপরাধ সংঘটিত হলে সবাই বলে পুলিশ কিছুই করছে না।
গত ১১ জুন টেরীবাজার আফিমা গলির সামনে থেকে দুই ছিনতাইকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়, যাদের নেশা হচ্ছে জুয়া খেলা। ৮ জুন তারা জামিনে বের হয়। ধরা পড়েছিল বাকলিয়ায় ৫ লাখ টাকা ছিনতাই করতে গিয়ে। ১০ তারিখ ঘাটফরহাদবেগ এক প্রকৌশলীকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে টাকা, মোবাইল ছিনতাই করে। সেই মোবাইল বিক্রি করে। ১১ জুন ধরা পড়ার পর জানায়, জুয়া খেলার টাকা সংগ্রহে তারা ছিনতাই করে।
এর এক সপ্তাহ আগে ভোরবেলা আমতল এলাকায় এক মেডিকেল ছাত্রকে ছুরিকাঘাত করে সবকিছু কেড়ে নেয় আজম ও মোক্তার নামে দুই ছিনতাইকারী। এদের নেশা হলো জুয়া খেলা।
রমজান মাসে ইস্পাহানির মোড় থেকে গ্রেপ্তার করা হয় বুলেট গ্রুপের প্রধান বুলেটসহ তিন ছিনতাইকারীকে। এরা প্রত্যেকেই ইয়াবা আসক্ত। একই দিন ফিশারিঘাট এলাকা থেকে ছিনতাই করা ৩৯ হাজার টাকাসহ গ্রেপ্তার হয়েছিল রাকিব গ্রুপের প্রধান রাকিব ও তার সঙ্গীরা, যাদের প্রত্যেকেই ইয়াবা আসক্ত।
৮ মে নতুন রেলস্টেশন থেকে গ্রেপ্তার হয়েছিল সাদ্দাম গ্রুপের প্রধান সাদ্দাম, তার দুই সহযোগী রাসেল ও ইয়াকুব। এরাও ইয়াবা আসক্ত। ৫ মে একই এলাকা থেকে গ্রেপ্তার হয় ইয়াবা আসক্ত ছিনতাইকারী রুবেল, মনির, হৃদয়, জুয়েল ও কাওছার। এরা ছোঁ মেরে মানুষের মোবাইল কেড়ে নিয়ে পালিয়ে যায়। এপ্রিল মাসেও বেশ কয়েকজন ছিনতাইকারী ও প্রতারককে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের প্রায় প্রত্যেকে মাদকাসক্ত।