পুরো বৈশাখ পেরিয়ে জৈষ্ঠের মাঝামাঝিতেও খরা পরিস্থিতির কারণে এবারের মধুমাস নিয়ে শংকা ছিল বেশ। আমের মৌসুম শেষ হয়ে কাঠালের মৌসুম শুরু হলেও বৃষ্টির দেখা না মেলায় কাঠাল বাগানে এর বিরূপ প্রভাব ছিল লক্ষণীয়। অবশেষে জৈষ্ঠের শেষ সপ্তাহে বৃষ্টি হওয়ায় যেন হাফ ছেড়ে বাঁচল চাষিরা। উপজেলার প্রধান ফলের হাট করেরহাটসহ অন্যান্য হাটগুলো এখন রসালো ফলে সয়লাব। দূর-দূরান্তের খুচরা ও পাইকার ব্যবসায়ীরা এসে ফল বিকিকিনি করছেন এখানে।
স্থানীয়রা জানান, পার্বত্য প্রবেশদ্বারস্থ মীরসরাই উপজেলার ভেজালমুক্ত কাঠাল ও মৌসুমী ফলের সেরা হাট করেরহাট। এখন আম-কাঠালের বেচাকেনায় জমে উঠেছে বাজারটি। এছাড়া মিঠাছরা, বারইয়াহাট, জোরারগঞ্জ, মীরসরাই, বড়তাকিয়া, বড়দারোগার হাটেও কমবেশি ফল পাইকারি ও খুচরা বিক্রয় শুরু হয়েছে। সাপ্তাহিক রবি ও বুধবারের করেরহাট বাজারে সরেজমিনে পরিদর্শনকালে দূর-দূরান্ত থেকে অনেক পাইকার ও খুচরা ক্রেতা-বিক্রেতাদের ভিড় লক্ষ্য করা গেছে।
বাজারের ফল বিক্রেতা জিয়া উদ্দিন বলেন, আজ ৩৫০ পিস কাঠাল পাইকার দরে বিক্রি করেছি গড়ে ৬০ টাকা করে। এক সপ্তাহ আগেও বাজার পরিস্থিতি, ফলন চাহিদা নিয়ে সকলের মধ্যে নানামুখি ভয় ছিল। এখন সে ভয় কেটে গেছে।
করেরহাট বাজার পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক কামরুল ইসলাম জানান, প্রতি বাজারে এখন শতাধিক ছোট-বড় পাইকারি ক্রেতা হাটে আসছে। আবার ফল চাষিরাও সকলে ভাল দাম পেয়েছে। শেষের দিকে বৃষ্টি হওয়ায় কাঠালগুলোর পুষ্টিহীনতার আশংকা কমেছে। তিনি বলেন, প্রতিদিন এই হাটে ৮ থেকে ১০ হাজার কাঁঠাল ক্রয়-বিক্রয় হয়। শংকা কাটিয়ে উঠায় এখন সবাই খুশি বেশ।
ভৌগলিকভাবে বিস্তীর্ণ পাহাড়ি জনপদে সমৃদ্ধতার কারণে মীরসরাইয়ের পাহাড়ি এলাকায় প্রচুর মৌসুমি ফল আম, কাঁঠাল, জাম, আনারস, লেবু, পেয়ারার চাষ হয়। করের হাট বাজারেই প্রধানত চলে এসবের বেচাবিক্রি। এবারও সবধরনের ফলের বাম্পার ফলন হয়েছে। এবার জ্যৈষ্ঠ মাসের শেষ নাগাদ জমে উঠেছে করেরহাট বাজারের আম-কাঁঠালের হাট। চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, ফেনী, নোয়াখালিসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে পাইকাররা আসে মৌসুমী ফল কেনার উদ্দেশ্যে। সড়কপথে যোগাযোগ ও তুলনামূলক কম দামে ক্রয়-বিক্রয় হয় বলে করেরহাটে মৌসুমি ফলের হাট জমজমাট থাকে।
মীরসরাই উপজেলা কৃষি সুপারভাইজার কাজী নুরুল আলম বলেন, খরা পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠে ফলচাষিদের জন্য পরিবেশ এখন সম্পূর্ণ অনুকূলে। আশা করা যাচ্ছে সকল ফলচাষি এবার ভাল দাম পাবেন।