বর্ষা মৌসুমের প্রথম ভারী বৃষ্টিপাতে ভোগ্যপণ্যের বৃহৎ পাইকারি বাজার চাক্তাই-খাতুনগঞ্জসহ আশপাশের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এছাড়া টেরিবাজারের বিভিন্ন মার্কেটেও বৃষ্টির পানি প্রবেশ করেছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, ভাগ্য ভালো এবার জোয়ারের পানির চাপ ছিল না। না হলে ব্যবসায়ীদের কপালে দুঃখ ছিল। তারপরেও দোকান গুদামে পানি ঢুকে প্রায় ২ কোটি টাকার পণ্য নষ্ট হয়ে গেছে বলে তারা দাবি করেন। অন্যদিকে টেরিবাজারের বিভিন্ন মার্কেটেও পানি ঢুকেছে। গতকাল সরেজমিনে দেখা গেছে, ভারী বৃষ্টিপাতে চাক্তাইয়ের চালপট্টি, খাতুনগঞ্জ, আসাদগঞ্জ, শুটকিপট্টি এবং টেরিবাজার এলাকার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ীরা জানান, বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতায় ভোগান্তি পোহাতে হবে, এটি আমাদের আগে থেকেই অনুমান ছিল। আজকের (গতকাল) বৃষ্টিতে চাক্তাই-খাতুনগঞ্জের নিচু এলাকা তলিয়ে যায়। জলাবদ্ধতার অন্যতম কারণ হচ্ছে-চাক্তাই খাতুনগঞ্জের আশপাশের ছোটখাটো নালা নর্দমাগুলোও দীর্ঘদিন ধরে পরিষ্কার করা হয়নি। তাই বৃষ্টির পানি চলাচলে বাধাগ্রস্ত হয়ে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। এছাড়া চাক্তাই খালের দুই পাড় অবৈধ দখলদারের কবলে অস্তিত্ব হারিয়ে ফেলেছে। এই খাল কোথাও কোথাও ৮-১০ ফুটের মতো সরু হয়ে গেছে। অন্যদিকে খালের তলা পাকা করার ফলে চাক্তাই খাল স্থায়ীভাবে নাব্যতা হারিয়েছে। বলা যায়, চাক্তাই খাল বর্ষা মৌসুমে এই অঞ্চলের ব্যবসায়ীদের দুঃখে পরিণত হয়েছে। অপরদিকে গত তিন বছরেও চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) স্লুইচ গেটের নির্মাণ কাজ শেষ করতে পারেনি। উল্টো নির্মাণ কাজের জন্য চাক্তাই ও রাজখালী খালের বিভিন্ন অংশে বাঁধ দিয়েছে। ফলে পানি চলাচল বাধাগ্রস্ত হয়ে নিম্নাঞ্চল হাঁটু পানি পর্যন্ত ডুবে যায়। নিচু এলাকার বেশ কিছু দোকান গুদামে পানি প্রবেশ করার ফলে প্রায় ২ কোটি টাকার পণ্য নষ্ট হয়ে যায়।
চাক্তাই চালপট্টির ব্যবসায়ী এবং চট্টগ্রাম চাউল ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ওমর আজম বলেন, চালপট্টিতে এবার আগের বছরের মতো পানি উঠেনি। জোয়ারের পানির ধাক্কা না থাকায় এ যাত্রায় বেঁচে গেছেন ব্যবসায়ীরা। তবে নিম্নাঞ্চলে পানি উঠলেও তার স্থায়ীত্ব বেশিক্ষণ ছিল না।
অন্যদিকে টেরিবাজারের জনতা মার্কেট, ছমদিয়া মার্কেট, শাহবাগ মার্কেট, খাজা মার্কেট, শাহ আমানত মার্কেট, গাউছিয়া মার্কেট, বদরপুকুর পাড়, মক্কা প্লাজা, মা ম্যানশন এবং কবির মার্কেটের দোকানে পানি প্রবেশ করেছে। গতকাল সরেজমিনে দেখা যায়, বিভিন্ন মার্কেটের গলিতে প্রায় হাঁটু পরিমাণ ছিল। দোকানের বিক্রেতা বালতি দিয়ে পানি সেচ দিচ্ছিলেন। এ সময় ব্যবসায়ীদের উদ্বিগ্ন দেখা যায়।
টেরিবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. আবদুল মান্নান বলেন, ভারী বৃষ্টিপাতে টেরিবাজারের বেশ কয়েকটি মার্কেটে পানি প্রবেশ করেছে। পানির কারণে ব্যবসায়ীদের কোটি টাকার মালামাল নষ্ট হয়েছে। করোনার কারণে গত দুই বছর ধরে ব্যবসায়ীরা লোকসান গুণছেন। এরমধ্যে বৃষ্টির পানিতেও ব্যবসায়ীদের লোকসান গুণতে হচ্ছে।