বৃষ্টি থামার সাথে সাথে পানিও নেমে গেছে বলে দাবি করেছেন নগরে জলাবদ্ধতা নিরসনে চলমান মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা সেনাবাহিনীর প্রকল্প পরিচালক লে. কর্নেল মোহাম্মদ শাহ আলী। তবে অলিগলি থেকে পানি দ্রুত না নামার কারণ হিসেবে সেখানকার ড্রেন অপরিষ্কার থাকাকে দায়ী করেন। এসব ড্রেন পরিষ্কারের দায়িত্ব সিটি কর্পোরেশনের বলেও জানান। গতকাল দৈনিক আজাদীকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন তিনি। গতকালের জলাবদ্ধতা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা যে কাজ করেছি তার সুফল পেয়েছি। আগে দীর্ঘ সময় পানি আটকে থাকত। এখন কিন্তু থাকছে না। তবে এটা ঠিক পানি উঠছে। কারণ, অল্প সময়ে বেশি বৃষ্টি হয়েছে। অধিকাংশ এলাকা সাময়িকভাবে পানিতে তলিয়ে গিয়েছিল। কিন্তু বৃষ্টির গতি যখন কমেছে পানিও সাথে সাথে কমে গেছে। জনভোগান্তিও দীর্ঘ সময় হয়নি। এটা আমাদের কাজের সাফল্য। আমরা সন্তুষ্ট।
তিনি বলেন, পানিপ্রবাহ সচল ছিল। খালের মাঝখানে বাঁধ না থাকলেও অনেক জায়গায় আমরা খালের ভেতর রাস্তা করে কাজ করেছি। সে রাস্তাগুলো এখনো দূর করতে পারিনি। দুয়েকদিনের মধ্যে বৃষ্টি একটু বন্ধ হলে পরিষ্কার করে দেব। বর্ষাকাল খুব বেশি দূরে না, তাই রাস্তাগুলোও রাখব না। এগুলো পরিষ্কার করে দিলে এখন যে সময় লাগছে তার চেয়েও কম সময়ে দ্রুত পানি নেমে যাবে।
গতকাল চারটি রেসপন্স টিম কাজ করেছে জানিয়ে তিনি বলেন, নাসিরাবাদ, মুরাদপুর, বহদ্দারহাট সড়কের চশমা খালে এক নম্বর টিম কাজ করেছে। দুই নম্বর টিম দক্ষিণ পাশে হিজরা খাল বরাবর কাজ করেছে। তারা প্রবর্তক মোড়, কাপাসগোলা, কাতালগঞ্জ, চকবাজার, ফুলতলা এলাকায় ছিল। তিন নম্বর টিম কাজ করেছে কলাবাগিচা, ফিরিঙ্গিবাজার, টেকপাড়া এলাকায়। চতুর্থ টিম আগ্রাবাদ, হালিশহরে কাজ করে। সেখানে সাধারণত জোয়ারের কারণে পানি ওঠে। তিনি জানান, প্রতি টিমে ১০ জন সৈন্য এবং ২৫ জন লেবার ছিল। তাদের সঙ্গে ডাম্প ট্রাকসহ অন্য যন্ত্রপাতিও ছিল। যেখানে ময়লা জমেছে তা রেসপন্স টিম পরিষ্কার করেছে।
খালে দেওয়া বাঁধ কাটা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে বলেন, বাঁধ তো কেটে দিয়েছি। কোথাও বড় বাঁধ নাই। যেমন পাঁচলাইশে কালভার্টের ওখানে বাঁধ ছিল। সেটা শনিবার কেটে দিয়েছি। এখন ক্লিয়ার। না কাটলে তো পানি যেতে পারত না। বদনা শাহ মাজারের ওখানে পানি উঠেছে হিজরা খালের কারণে। হিজরা খাল বড় করে দিতে পারলে এক ফোঁটা পানি উঠবে না। এজন্য ভূমি অধিগ্রহণ দ্রুত করতে হবে।
চশমা খালের বাঁধ অপসারণ হয়েছে কিনা জানতে চাইলে বলেন, সবগুলো কেটে দিয়েছি। কিন্তু কিছু জায়গায় অর্ধেক খাল জুড়ে মাটি আছে। তবে পূর্বে যে খাল ছিল ওই পরিমাণ খাল সব জায়গায় ফাঁকা আছে। এখন যেখানে মাটি আছে সেটা হচ্ছে অতিরিক্ত যেখানে কাজ করেছি সেখানে। চাক্তাই খালের চারটি পয়েন্টের বাঁধ প্রসঙ্গে বলেন, সেখানেও বাঁধ কাটা হয়েছে। মাঝখানে রাস্তার যে মাটি আছে তা পরিষ্কার করতে পারিনি।
গতকাল কোন এলাকায় পানি বেশিক্ষণ আটকে ছিল জানতে চাইলে বলেন, পাঁচলাইশ এলাকায় বেশি ছিল। সেখানে হিজরা খালকে প্রশস্ত করতে না পারলে এ সমস্যার সমাধান হবে না। নিচের দিকে খালটি ছোট হয়ে গেছে। নিচের দিকে সংকুচিত থাকায় পানি যেতে পারছে না।
তিনি বলেন, মূল রাস্তা থেকে পানি সরে যাওয়ার পরও অলিগলিতে পানি জমেছিল। এর কারণ, গলির ভেতর থেকে পানি খাল পর্যন্ত আসার জন্য ভেতরের ড্রেনগুলো পরিষ্কার রাখতে হবে। কিন্তু সেগুলো সিটি কর্পোরেশনের। শহরের ১৬শ কিলোমিটার ড্রেন আছে। আমরা কাজ করছি ৩০০ কিলোমিটারে। বাকিগুলো সিটি কর্পোরেশনকে নিয়মিত পরিষ্কার করতে হবে। না করলে তো পানি নামবে না। এগুলো প্রকল্পভুক্ত না।
আগ্রাবাদ এলাকার জলাবদ্ধতা প্রসঙ্গে বলেন, মা ও শিশু হাসপাতালের দিকে জোয়ার এলেও পানি ওঠে। ওখানে মহেশখালে রেগুলেটর ফাংশনাল করতে পারলে জোয়ারের পানি উঠবে না।