লোহাগাড়ায় টংকাবতী খালের উপর নির্মিত ব্রীজ সন্নিহিত সংযোগ সড়কের একাধিকস্থান উদ্বোধনের আড়াই মাসে ধসে গেছে। ভাঙন অব্যাহত থাকলে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে যোগাযোগ ব্যবস্থা। গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টির কারণে ব্রীজ সন্নিহিত সংযোগ সড়কের এই করুণ অবস্থা বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। ফলে যে কোন সময় ঘটতে পারে মারাত্মক দুর্ঘটনা।
সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার দরবেশহাট মাইজবিলা সড়কে টংকাবতী খালের উপর ৮১ মিটার দীর্ঘ পিসি গার্ডার ব্রীজটি স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) ৫ কোটি ৩ লাখ ৬৬ হাজার ৭শ টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করে। ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে উপজেলা ও ইউনিয়ন সড়কে দীর্ঘ সেতু নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় ব্রীজের কাজ শুরু হয়। প্রায় ৩ মাস পূর্বে ব্রীজের কাজ শেষ করে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। চলতি বছরের ২০ মার্চ ব্রীজটির উদ্বোধন করেন স্থানীয় সাংসদ প্রফেসর ড. আবু রেজা মুহাম্মদ নেজাম উদ্দিন নদভী। দৃষ্টিনন্দন ব্রীজে সময় কাটাতে বিকেলে আশপাশের লোকজন জড়ো হন। অনেককে ক্যামেরাবন্দি করতে দেখা গেছে আনন্দঘন মূহুর্ত।
জানা যায়, ব্রীজটি কলাউজান ও চরম্বা ইউনিয়নের সংযোগস্থলে নির্মিত হয়েছে। ফলে দুই ইউনিয়নের মানুষের যোগাযোগ সুগম হয়েছে। বৃদ্ধি পেয়েছে যোগাযোগ। ঘোর পথের দূরত্ব কমেছে প্রায় ১০ কিলোমিটার। কৃষকের উৎপাদিত কৃষি পণ্য বাজারজাত করতে সহজলভ্য হয়েছে। শিক্ষার্থীরা নির্বিঘ্নে যেতে পারছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। ব্রীজ নির্মাণের পূর্বে বর্ষাকালে নদীর পানি বৃদ্ধি পেলে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যেত। যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যেত দুই ইউনিয়নের মানুষের। এই ব্রীজ দিয়ে প্রতিদিন দুই ইউনিয়নের হাজারো মানুষে যাতায়াত। প্রতিনিয়ত চলাচল করে পিকআপ, জীপ, মিনিট্রাক, সিএনজি অটোরিঙা ও মোটরসাইকেলসহ নানা যানবাহন।
স্থানীয়রা জানান, ব্রীজ নির্মিত হওয়ার ফলে যাতায়াতে সুবিধা হবে ও কষ্ট ঘুচবে এমনটি আশা ছিল তাদের। কিন্তু নিম্নমানের কাজ হওয়ায় ঝুঁকি বাড়ছে। উদ্বোধনের আড়াই মাস যেতে না যেতেই সামান্য বৃষ্টিতে কলাউজান অংশে ব্রীজ সন্নিহিত সংযোগ সড়কের একাধিক স্থানে ধসে গেছে। দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে পুরো রাস্তা ধসে যাবে। ফলে বন্ধ হয়ে যাবে যোগাযোগ। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন এলাকার সচেতন মহল।
স্থানীয় বাসিন্দা কবির আহমদ জানান, আলগা বালি-মাটির উপর ইট বিছিয়ে সংযোগ সড়কটি নির্মাণ করা হয়েছে। তাই সামান্য বৃষ্টির পানিতে একাধিক স্থানে ধসে গেছে। বর্ষা শুরু হলে ইট বিছানো পুরো সড়ক ভেঙে গিয়ে চলাচল বন্ধ হয়ে যাবে। লোহাগাড়া উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) ইশরাত বিন মুনীর জানান, টংকাবতী খালের উপর নির্মিত ব্রীজ সন্নিহিত সংযোগ সড়কের বিভিন্ন স্থানে ভাঙনের ব্যাপারে আমি অবগত নই। এ ব্যাপারে খোঁজ খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।