২০২১-২২ অর্থবছরের জন্য ৬ লাখ ৩ হাজার ৬৮১ কোটি টাকার বাজেট দিয়েছে সরকার। গতকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এ বাজেট পেশ করেন। চলমান করোনা ভাইরাস পরিস্থিতি মোকাবেলা ও অর্থনীতি পুনরুদ্ধারকে গুরুত্ব দিয়ে বাজেট করা হয়েছে বলে জানান অর্থমন্ত্রী। বাজেটে সারাদেশে চলমান প্রকল্পগুলোর জন্য হাজার হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। এ ধরনের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের অধীনে চট্টগ্রামে চলমান ৪৩টি বড় প্রকল্পের জন্য প্রায় সাড়ে ১৫ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। চট্টগ্রামে সবচেয়ে বেশি বরাদ্দ রাখা হয়েছে বিদ্যুৎ খাতে।
ঘোষিত বাজেট পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, বিদ্যুৎ বিভাগের অধীনে বাস্তবায়নাধীন ঢাকা-চট্টগ্রাম মেইন পাওয়ার গ্রিড স্ট্রেনদেনিং প্রকল্পে ৭০০ কোটি টাকা, তিন পার্বত্য জেলায় বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থার উন্নয়ন প্রকল্পে ৭৫ কোটি টাকা, মাতারবাড়ী ২৬০০ মেগাওয়াট আল্ট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল কোল ফায়ারড পাওয়ার প্রজেক্ট প্রকল্পে ৬ হাজার ১৬২ কোটি টাকা, চট্টগ্রাম জোনের বিদ্যুৎ বিতরণ সিস্টেম উন্নয়ন (সংশোধিত) প্রকল্পে ১০০ কোটি টাকা, মীরসরাই ১৫০ মেগাওয়াট ডুয়েল ফুয়েল বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ (সংশোধিত) প্রকল্পে ৫১ কোটি টাকা, বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থার উন্নয়ন চট্টগ্রাম জোন (২য় জোন) প্রকল্পে ৬০ কোটি টাকা, চট্টগ্রাম অঞ্চলের বিদ্যুৎ সঞ্চালন ব্যবস্থার সম্প্রসারণ ও শক্তিশালীকরণ প্রকল্পে ৯১ কোটি টাকা, হাতিয়া দ্বীপ, নিঝুম দ্বীপ ও কুতুবদিয়া দ্বীপে শতভাগ নির্ভরযোগ্য ও টেকসই বিদ্যুতায়ন প্রকল্পে ১৯৮ কোটি টাকা, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের অধীনে চট্টগ্রামে চলমান জিটিসিএল কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন চট্টগ্রাম-ফেনী-বাখরাবাদ গ্যাস সঞ্চালন সমান্তরাল পাইপলাইন নির্মাণ (১ম সংশোধিত) প্রকল্পে ৩৩ কোটি টাকা, বিপিসি কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন ইনস্টলেশন অব সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিং (এসপিএম) উইথ ডাবল পাইপলাইন (২য় সংশোধিত) প্রকল্পে ৩০ কোটি টাকা, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধিনে বাস্তবায়নাধীন চট্টগ্রাম জেলার উপকূলীয় এলাকার পোল্ডার নং-৬২ (পতেঙ্গা), পোল্ডার নং-৬৩/১এ (আনোয়ারা), পোল্ডার নং- ৬৩/১বি (আনোয়ার এবং পটিয়া) পুনর্বাসন (২য় সংশোধিত) প্রকল্পে ৯০ কোটি টাকা, চট্টগ্রাম জেলার মীরসরাই উপজেলায় বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল বেজা বন্যা নিয়ন্ত্রণ সড়ক কাম বেড়িবাঁধ প্রতিরক্ষা এবং নিষ্কাশন প্রকল্প (১ম সংশোধিত) প্রকল্পে ১৭০ কোটি টাকা, চট্টগ্রাম জেলার হাটহাজারী ও রাউজান উপজেলার হালদা নদীর উভয় তীরের ভাঙ্গন হতে বিভিন্ন এলাকা রক্ষাকল্পে তীর সংরক্ষণ কাজ (১ম সংশোধিত) প্রকল্পে ১২ কোটি টাকা, চট্টগ্রাম জেলার সন্দ্বীপ উপজেলার পোল্ডার নং ৭২ এর ভাঙন প্রবণ এলাকায় স্লোপ প্রতিরক্ষা কাজের মাধ্যমে পুনর্বাসন (১ম সংশোধিত) প্রকল্পে ৬০ কোটি টাকা, চট্টগ্রাম জেলার সাতকানিয়া ও লোহাগাড়া উপজেলায় সাঙ্গু এবং ডলু নদীর তীর সংরক্ষণ (১ম সংশোধিত) প্রকল্পে ১০০ কোটি টাকা, চট্টগ্রাম জেলাধীন রাঙ্গুনিয়া ও বোয়ালখালী উপজেলা এবং রাঙামাটি পার্বত্য জেলার কাপ্তাই উপজেলায় কর্ণফুলী ও ইছামতি নদী এবং শিলক খালসহ অন্যান্য খালের উভয় তীরের ভাঙন হতে রক্ষা প্রকল্পে ৬৮ কোটি টাকা, চট্টগ্রাম মহানগরীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ, জলমগ্নতা/জলাবদ্ধতা নিরসন ও নিষ্কাশন উন্নয়ন প্রকল্পে ৫০ কোটি, সড়ক যোগাযোগ ও সেতু মন্ত্রণালয়ের অধীনে বাস্তবায়নাধীন কর্ণফুলী নদীর তলদেশে বহুলেন সড়ক টানেল নির্মাণ প্রকল্পে ১ হাজার ৬৫০ কোটি টাকা, মাতারবাড়ী কয়লা নির্ভর বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র নির্মাণ (সওজ অংশ) প্রকল্পের জন্য ২০৯ কোটি, সীমান্ত সড়ক (রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দবারন পার্বত্য জেলা) নির্মাণ (১ম পর্যায়) প্রকল্পে ১০৫ কোটি টাকা, জেলা মহাসড়ক যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ (চট্টগ্রাম জোন) (২য় পর্যায়) প্রকল্পে ১৫০ কোটি টাকা, চট্টগ্রাম-রাঙামাটি-জাতীয় মহাসড়ক (এন ১০৬) এর হাটহাজারী হতে রাউজান পর্যন্ত সড়কাংশ ৪ লেনে উন্নীতকরণ প্রকল্পে ৭০ কোটি টাকা, হাটহাজারী-ফটিকছড়ি-মানিকছড়ি-মাটিরাঙা-খাগড়াছড়ি সড়ক (আর ১৬০) উন্নয়ন (চট্টগ্রাম অংশ) প্রকল্পে ১২০ কোটি টাকা, কেরানিহাট-বান্দরবান জাতীয় মহাসড়ক (এন-১০৮) যথাযথ মান, প্রশস্ততা ও উচ্চতায় উন্নীতকরণ প্রকল্পে ৩১ কোটি ৬৩ লাখ টাকা, ৪ লেনে উন্নীত ঢাকা-চট্টগ্রাম জাতীয় মহাসড়ক (এন-১) দাউদকান্ডি-চট্টগ্রাম অংশ এর চার বছরের জন্য পারফরম্যান্স বেইজড অপারেশন ও দৃঢ়করণ প্রকল্পে ২০০ কোটি টাকা, আনোয়ারা উপজেলা সংযোগ সড়কসহ কর্ণফুলী টানেল সংযোগ সড়ককে ৪ লেনে উন্নীতকরণ (শিকলবাহা-আনোয়ারা সড়ক) প্রকল্পে ৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে।
অন্যদিকে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের অধীনে বাস্তবায়নাধীন দোহাজারী হতে রামু হয়ে কঙবাজার এবং রামু হতে মায়ানমারের নিকটে গুনদুম পর্যন্ত সিঙ্গেল লাইন ডুয়েল গেজ ট্র্যাক নির্মাণ (১ম সংশোধিত) প্রকল্পে ১ হাজার ৪২৫ কোটি টাকা, গণপূর্ত মন্ত্রণালয়য়ের অধীনে বাস্তবায়নাধীন এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেন এর বহিঃসীমা দিয়ে ল্যুপ রোড নির্মাণসহ ঢাকা ট্যাংক রোড হতে বায়েজিদ বোস্তামি পর্যন্ত সংযোগ সড়ক নির্মাণ (সংশোধিত) প্রকল্পে ২৭ কোটি ৮৯ লাখ টাকা, চট্টগ্রাম সিটি আউটার রিং রোড (পতেঙ্গা হতে সাগরিকা পর্যন্ত) (৩য় সংশোধিত) প্রকল্পে ৩২০ কোটি টাকা, সিরাজউদ্দৌলা রোড হতে শাহ আমানত ব্রিজ পর্যন্ত সংযোগ সড়ক নির্মাণ (১ম সংশোধিত) প্রকল্পে ২৩ কোটি ৯১ লাখ টাকা, চট্টগ্রাম শহরের লালখান বাজার হতে শাহ আমানত বিমানবন্দর পর্যন্ত এলিভেটেড এঙপ্রেসওয়ে নির্মাণ প্রকল্পে ৪৭০ কোটি ১৪ লাখ টাকা, কর্ণফুলী নদীর তীর বরাবর কালুরঘাট সেতু হতে চাক্তাই খাল পর্যন্ত সড়ক নির্মাণ (সংশোধিত) প্রকল্পে ২১৩ কোটি ৯০ লাখ টাকা, চট্টগ্রাম শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনকল্পে খান পুনঃখনন, সম্প্রসারণ, সংষ্কার ও উন্নয়ন প্রকল্পে ৮ কোটি ৩৬ লাখ টাকা, চট্টগ্রাম শহরে পরিত্যক্ত বাড়িতে সরকারি আবাসিক ফ্ল্যাট ও ডরমিটরি ভবন নির্মাণ প্রকল্পে ৭০ কোটি টাকা, চট্টগ্রামের আগ্রাবাদস্থ সিজিএস কলোনিতে জরাজীর্ণ ১১টি ভবনের স্থলে ৯টি বহুতল আবাসিক ভবনে সরকারি কর্মকর্তা/কর্মচারীদের জন্য ৬৮৪টি ফ্ল্যাট নির্মাণ প্রকল্পে ৮০ কোটি টাকা এবং চট্টগ্রাম ৩৬টি পরিত্যক্ত বাড়িতে সরকারি কর্মকর্তা/কর্মচারিদের জন্য আবাসিক ফ্ল্যাট নির্মাণ প্রকল্পে ৪৫ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়।
২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটে স্থানীয় সরকার বিভাগের অধীনে বাস্তবায়নাধীন চট্টগ্রাম ওয়াসার ভান্ডালজুরী পানি সরবরাহ প্রকল্প (সংশোধিত) প্রকল্পে ৩২৯ কোটি ৮ লাখ টাকা, কর্ণফুলপানি সরবরাহ প্রকল্প (২য় পর্যায়) সংশোধিত প্রকল্পে ৮৫৬ কোটি ৬০ লাখ টাকা, চট্টগ্রাম মহানগরীর পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা প্রকল্প (১ম পর্যায়) প্রকল্পে ৩৬০ কোটি টাকা, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের বহদ্দারহাট-বারইপাড়া হতে কর্ণফুলী নদী পর্যন্ত খান খনন প্রকল্প (১ম সংশোধিত) প্রকল্পে ২৫ কোটি টাকা, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের বিভিন্ন ওয়ার্ডের সড়ক নেটওয়ার্ক উন্নয়ন এবং বাস/ট্রাক টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্পে ৩০০ কোটি টাকা, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের আওতাধীন পরিচ্ছন্ন কর্মী নিবাস নির্মাণ প্রকল্পে ২৫ কোটি টাকা ও স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের অধীনে চট্টগ্রামের বিভিন্ন উপজেলায় বাস্তবায়নাধীন বৃহত্তর চট্টগ্রাম গ্রামীণ অবকাঠামো প্রকল্প-৩ এ ২৮০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়।