পরিবার এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হোক শিশু বান্ধব

রূপম চক্রবর্ত্তী | বৃহস্পতিবার , ৩ জুন, ২০২১ at ১০:৩২ পূর্বাহ্ণ

শিশুরা বিভিন্ন ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হয়ে থাকে যেমন- শিশু লাঞ্ছনা, দেহ ব্যবসায়ে শিশুকে যুক্ত করা, শিশু পাচার, শিশু শ্রম এবং ক্ষতিকর কিছু গতানুগতিক প্রথা যেমন: কন্যা ভ্রূণ হত্যা, অপুষ্টি, পাচার, বাল্য বিবাহ ইত্যাদি। কিছু আপদকালীন পরিবেশে যেমন জরুরি অবস্থায়, যুদ্ধের সময়, প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় এবং শারীরিকভাবে অক্ষম শিশুদের বিশেষ সুরক্ষার প্রয়োজনের কথা চিন্তা করে নির্দিষ্ট কর্মসূচী গ্রহণ করা জরুরি প্রয়োজন। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি দীর্ঘ সময় শিশুরা তার মা বাবার সাথে পরিবারে থাকে। প্রত্যেক পরিবার শিশুদের জন্য যেন এক একটি শিক্ষালয় হতে পারে তার দিকে খেয়াল রাখতে হবে।
প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পর্যাপ্ত ক্যামেরার ব্যবস্থা থাকতে হবে। যেসব আবাসিক ধর্মীয় এবং সর্বজনীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আছে সেসব প্রতিষ্ঠানের হোটেল কক্ষে প্রদত্ত ক্যামেরা কেন্দ্রীয়ভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। ছাত্রছাত্রীদের প্রতি, তাদের মর্যাদা রক্ষা ও নিরাপত্তা বিধানের প্রতি প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষের মানসিকতা কোন স্তরে আছে তা প্রতিনিয়ত মনিটরিং করতে হবে।
কোন উপায়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিশুর সুরক্ষার বিষয়টি সুনিশ্চিত করা যায় তার জন্য সরকারের দায়িত্বশীল প্রতিষ্ঠানের আরও বেশি সচেতন হতে হবে। কাগজে-কলমে থাকা নির্দেশিকা মেনে চলার সদিচ্ছা থাকতে হবে। এ ক্ষেত্রে প্রথম দায়িত্ব যে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সে বিষয়ে সংশয়ের অবকাশ নেই। কিন্তু বিদ্যালয়গুলো শিশু সুরক্ষা নির্দেশিকা মেনে চলছে কিনা, তার জন্যও তো চাই নিরবচ্ছিন্ন নজরদারির প্রক্রিয়া এবং এ বিষয়ের মুখ্য ভূমিকা নিতে হবে সংশিষ্ট শিক্ষা দফতরকেই।
দেশের মোট জনসংখ্যার এক-তৃতীয়াংশেরও বেশি শিশু। এই শিশুদের মাঝেই আমাদের আগামী দিনের স্বপ্ন লুকায়িত আছে। তাই প্রত্যেক শিশু যাতে সুন্দরভাবে বেড়ে উঠে তার দিকে সবাইকে খেয়াল রাখতে হবে। একটি সুস্বাস্থ্যকর পরিবেশে, স্বাধীনভাবে, মর্যাদার সাথে বেড়ে ওঠার সকল রকম সুযোগ এবং সুবিধা পায় এবং শৈশব এবং কৈশোর যাতে সবরকমের অপব্যবহার এবং নৈতিক অবক্ষয় থেকে সুরক্ষিত থাকে সে প্রচেষ্টা নিয়ে আমাদের প্রতিষ্ঠানগুলো পরিচালিত হবে। অনাথ শিশুগুলোর দায়িত্ব রাষ্ট্র গ্রহণ করার মাধ্যমে তাদের নৈতিক শিক্ষার সমন্বয়ে আবাসিক সুবিধাসহ পাঠদানের ব্যবস্থা করলে ভালো কিছু ছাত্র ছাত্রী বের হবে। তফশিলি জাতি, উপজাতি, হরিজন সমপ্রদায়ের ছেলে মেয়েরা যাতে আরও বেশি বিদ্যালয়মুখী হয় তার জন্য প্রেষণা প্রদান করতে হবে। আগামীতে জনগণের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন এবং সমৃদ্ধ দেশ গঠনের জন্য আমাদের শিশুদের উন্নয়নের বিকল্প নাই।

পূর্ববর্তী নিবন্ধমুক্তিযোদ্ধা আইয়ূব চৌধুরী রাস্তা মেরামত করা হোক
পরবর্তী নিবন্ধসীমিত পরিসরে হলেও সংস্কৃতিতে প্রাণ ফিরিয়ে আনতে হবে