ক্রমান্বয়ে কিছু কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া দরকার। গত এপ্রিল মে-তে (২০২০) যেসব শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বশেষ পরীক্ষা দিয়ে ঘরে ফেরার কথা সে এখনো পাশের/পরীক্ষার অপেক্ষায়। তার জীবন থেকে দেড়/দু বছর হারিয়ে গেলো। কিন্তু বিসিএস বা চাকুরির জন্য বয়সসীমা তো সেই আগেরই মত। এসব শিক্ষার্থীর মনের অবস্থাটা একবার ভাবুন।এরা তো যথেষ্ট বড়, নিশ্চয়ই স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলার মত জ্ঞান হয়েছে। এরা না পারে এখন পরিবারের কাছে হাত খরচের টাকা চাইতে না পারে সার্বক্ষণিক গৃহবন্দী থাকতে। এভাবে একসময় এদের মনে হতাশা ঢুকে পড়ছে।এমন শিক্ষার্থীর সংখ্যা সারা দেশে কম নয়।এদের যদি পর্যায়ক্রমে ছেড়ে দেয়া হতো তাহলে শিক্ষাব্যবস্থার ধারাবাহিকতা রক্ষা পেত। এখন তারা, তার পরের ব্যাচ, এভাবে দুই/তিনটা ব্যাচ বিসিএস / চাকুরির প্রত্যাশার জ্যামে আটকা পড়বে, কি হবে এই বিশাল গোষ্ঠী ছাত্রছাত্রীর জীবন? এরা কি অনিশ্চিত জীবনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে না? এ হতাশা থেকে কত ছাত্র মাদকাসক্ত ও আত্মহত্যার পথ বেছে নিবে তা কি ভাবা যায়? যারা সচেতন বাবা মা আছেন তারা ছাড়া বাকি অভিভাবকগণ কতক্ষণ এদের সঙ্গ দেবে, চোখে চোখে রাখবে বা মোটিভেট করবে বলুন? যাদের এই পর্যায়ের সন্তান রয়েছে তারাই বোঝে এ কেমন পরিস্থিতি? তাই শিক্ষাব্যবস্থাকে আটকে না রেখে পর্যায়ক্রমে খুলে দেয়া দরকার। এদেরও পর্যায়ক্রমে পরীক্ষা নিয়ে ছাড়পত্র দিয়ে দিলে তারা তাদের মত এগুতে পারতো। আমরা সবাই জানি যুব সমাজকে গৃহবন্দি করে রাখা কষ্টকর। আর ভ্যাকসিনের আশা এখন দুরাশা। কে কবে পাবে তা অনিশ্চিত। নিয়মতান্ত্রিক ভাবে প্রতিটি ইয়ার ও ডিপার্টমেন্ট ভিত্তিক আটকে থাকা শিক্ষার্থীকে পরীক্ষার সুযোগ করে দিলে তারা তাদের মত সময়গুলোকে কাজে লাগাতে পারতো। চাকুরী বা বিসিএস এর প্রস্তুতি নিতে পারতো। ঘরে বসে বসে অনিশ্চিত জীবনের হাতছানি থেকে মানসিক ভাবে বিপর্যয়ের দিকে অন্তত এগুবে না। কিছু দিন আগেও ঢাবির এক ছাত্রকে মাদকাসক্ত হয়ে আত্মহত্যা করার কথা শোনা গেছে। এভাবে বিপর্যস্ত হচ্ছে আমাদের যুব সমাজ। তাই এখনি যদি এর সঠিক দিক বিবেচনা করে এর যথোপযুক্ত মীমাংসার পথ খুঁজে তা বাস্তবায়ন করা না হয় তাহলে দেশ হারাবে একধাপ উপরে উঠার শক্তি।