দিনেরাতে লোডশেডিং, তথ্য নেই পিডিবির প্রতিবেদনে

চট্টগ্রামে পিকআওয়ারে চাহিদা ১৪শ থেকে ১৭শ মেগাওয়াট

আজাদী প্রতিবেদন | সোমবার , ৩১ মে, ২০২১ at ৬:২৩ পূর্বাহ্ণ

‘সকাল নেই, বিকেল নেই, প্রতিদিনই লোডশেডিংয়ের যন্ত্রণায় রয়েছি। কখনো গভীর রাতে, কখনো ভোরে হুট করে বিদ্যুৎ চলে যায়। এভাবে বিদ্যুৎ যাওয়া আসার মধ্যেই থাকে। তীব্র গরমে গত কয়েকদিন কয়েকবার করে বিদ্যুৎ যাওয়া আসা করেছে।’ কথাগুলো বললেন, সানোয়ার আহমেদ নামের নগরীর আসকারদীঘির পাড়ের এক বাসিন্দা। পাঠানটুলি এলাকার বাসিন্দা কাউছার হোসেন বলেন, ‘গত কয়েকদিন ধরে ভোর বেলা বিদ্যুৎ থাকছে না। গরমে ঘুম ভাঙে পরিবারের সকলের। বিদ্যুৎ অফিসেও ফোন করে কাউকে পাওয়া যায় না।’
জানা যায়, গত দুই সপ্তাহ ধরে চট্টগ্রামে বিদ্যুৎ বিভ্রাট বেশি ঘটেছে। নগরীর প্রায় সব এলাকাতেই দিনে কয়েকবার লোডশেডিংয়ের কবলে পড়তে হয়। তবে পিডিবি বলছে, চট্টগ্রামে কোন লোডশেডিং নেই। যান্ত্রিক ত্রুটি, দুর্ঘটনার কারণেই বিদ্যুৎ সরবরাহ বাধ্য হয়ে বন্ধ করতে হয়।
পিডিবি সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রামে বর্তমানে পিক আওয়ারে ১৪শ থেকে ১৭শ মেগাওয়াটের বেশি বিদ্যুতের চাহিদা থাকে। চট্টগ্রামে সরকারি-বেসরকারি ২৩ বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে উৎপাদিত বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হয়। এসব বিদ্যুৎকেন্দ্রে পিক আওয়ারে ২ হাজার ৩৮২ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা রয়েছে। এরমধ্যে চাহিদা কম থাকায় বেশ কয়েকটি বিদ্যুৎকেন্দ্রে উৎপাদন বন্ধ রয়েছে।
তথ্য অনুযায়ী, চট্টগ্রামে সর্বশেষ ২৯ মে ১৬৬২ মেগাওয়াট, ২৮ মে ১৫৬৭ মেগাওয়াট, ২৭ মে ১৪০৬ মেগাওয়াট, ২৬ মে ১৫১২ মেগাওয়াট এবং ২৫ মে ১৩৮৪ মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা ছিল। তবে চট্টগ্রামের বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো থেকে পিকআওয়ারে ২৯ মে ১০৪৮ মেগাওয়াট, ২৮ মে ১০৩০ মেগাওয়াট, ২৭ মে ১০৬৯ মেগাওয়াট, ২৬ মে ৮৪৮ মেগাওয়াট এবং ২৫ মে ৮৮৪ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়। চাহিদার চেয়ে চট্টগ্রামে কম উৎপাদন হলেও জাতীয় গ্রিড থেকেই বিদ্যুৎ নিয়ে সরবরাহ স্বাভাবিক রাখা হয়।
তবে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের বোর্ড সদস্য (বিতরণ) প্রকৌশলী সামছুল আলম রোববার রাতে দৈনিক আজাদীকে বলেন, ‘চট্টগ্রামে এখন কোন লোডশেডিং নেই। গত কয়েকদিনে চট্টগ্রামের কোথাও লোডশেডিং ছিল না। আমাদের প্রজেক্টের কাজের জন্য মাঝে মধ্যে লাইন বন্ধ রাখতে হয়।’ রাতে ও ভোরে বিদ্যুৎ বন্ধ থাকার বিষয়ে তিনি বলেন,‘কোন সাবস্টেশন কিংবা লাইনের সমস্যার কারণে লাইন বন্ধ হয়েছে। লোডশেডিংয়ের জন্য চট্টগ্রাম শহরে বিদ্যুৎ বন্ধ হয় না।’ চট্টগ্রাম বাদে অন্য কোথাও লোডশেডিং হয় কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘শনিবার সারাদেশে গ্যাসের সমস্যা ছিল। যে কারণে কিছু পাওয়ার প্লান্ট পুরোপুরি জেনারেশন করতে পারেনি। তাই কিছু কিছু জায়গায় লোডশেডিং ছিল। ময়মনসিংহ ও কুষ্টিয়ার দিকে লোডশেডিং থাকলেও চট্টগ্রামে কোন লোডশেডিং ছিল না।’
পিডিবির প্রতিদিনের প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, গত ২৫ মে থেকে ২৯ মে পর্যন্ত চট্টগ্রামে কোন লোডশেডিং ছিল না। শুধু চট্টগ্রাম নয়, দেশের কোথাও লোডশেডিং ছিল না বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধখলিলুর রহমান মেট্রোপলিটন চেম্বারের সভাপতি
পরবর্তী নিবন্ধবিএনপি নেতা আসলাম চৌধুরীর জামিন