রাঙামাটি শহরের দৃষ্টিনন্দন যে সড়কটি দিয়ে চলতে গেলে সকলেরই চোখ আর প্রাণ জুড়িয়ে যেত সেটি হচ্ছে ফিশারি সংযোগ সড়ক বাঁধ। রাঙামাটিতে আগত ট্যুরিস্টদের কাছেও প্রিয় এ ফিশারি সংযোগ সড়ক বাঁধ। এটি হচ্ছে শহরের তবলছড়ি, বনরূপা এবং রিজার্ভ বাজারের মধ্যবর্তী যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম। কিন্তু বেশ কয়েকবছর ধরে সংস্কারের অভাবে রাঙামাটি শহরের এই গুরুত্বপূর্ণ সংযোগ সড়কটির উভয়পাশের বেশ কয়েকটি স্থানে ফাটল, বড় বড় গর্ত তৈরি এবং ভারী যানবাহন চলায় সড়কের অতিরিক্ত চাপ ও সড়কটির বিভিন্ন স্থানে ভেঙে পড়া বা ধসে পড়ার ঝুঁকিতে ছিল।
সম্প্রতি ফিশারি বাঁধটি সংস্কার নিয়ে রাঙামাটি শহরে বসবাসরত নাগরিকদের মধ্যেও চরম উদ্বেগ, উৎকন্ঠা এবং স্থানীয় প্রশাসনের উচ্চ পর্যায়ে বেশ আলোচনা হওয়ার পর অবশেষে ফিশারি বাঁধটি সংস্কারের কাজ করছে রাঙামাটি সড়ক ও জনপথ বিভাগ।
রাঙামাটি সড়ক ও জনপথ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, রাঙামাটি ফিশারি সংযোগ সড়ক বাঁধটির দুপাশের দৈর্ঘ্য হচ্ছে ১২শ মিটার। এর মধ্যে রাঙামাটি সড়ক বিভাগ বর্তমানে বাঁধটির একপাশে ৬শ মিটারের মধ্যে শুধুমাত্র ২শ মিটার অর্থাৎ যেসব জায়গা অতিমাত্রায় ঝুঁকিপূর্ণ রয়েছে সেসব স্থানে রিটেইনিং ওয়াল নির্মাণ করা হচ্ছে। সড়ক ও জনপথ বিভাগ আরো জানিয়েছে, এ সড়কের মোট ঝুঁকিপূর্ণ ৪ টি স্পটে রিটেইনিং দেয়াল নির্মাণ করা হচ্ছে। এ রিটেইনিং ওয়ালগুলো হচ্ছে মূল সড়ক থেকে ৩৩ ফুট দূরত্বে। এখানে প্রতি ২.৪ মিটার পরপর ১২ মিটার উচ্চতার পাইলিং ফাউন্ডেশন হবে এবং রিটেইনিং ওয়ালের উচ্চতা হচ্ছে ৫ মিটার। এই ওয়ালগুলো হবে মূল সড়কের লেভেল থেকে ১ মিটার নিচে। ফিশারি সংযোগ সড়কটির সংস্কার কাজে ব্যয় হচ্ছে ৪ কোটি টাকা।
ইতিপূর্বে সড়কটির দুইপাশে বৃক্ষ ছিল প্রায় ৫০৬ টি আর বর্তমানে কেবল সড়কের দুইপাশের বিভিন্ন প্রজাতির বৃক্ষ রয়েছে মাত্র ৩০০ টি। সেগুলোও এখন বেশ ঝুঁকিতে।
ফিশারি সংযোগ বাঁধের পথচারী আব্দুল করিম আজাদীকে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে এ সড়কটির বিভিন্ন অংশে ফাটল দেখা দিয়েছে এবং এর মধ্যে এই বাঁধের অনেকগুলো গাছের নীচ অংশ থেকে মাটি সড়ে গিয়ে গাছ নষ্ট হয়ে গেছে। তিনি বলেন, বাঁধের বিভিন্ন অংশে যে সংস্কার কাজ শুরু হয়েছে তাকে আমি সাধুবাদ জানাই। এ প্রসঙ্গে রাঙামাটি সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী শাহে আরেফীন আজাদীকে বলেন, রাঙামাটি ফিশারি সংযোগ সড়ক বাঁধের একপাশে ৬০০ মিটারের মধ্যে ২০০ মিটার এলাকায় কাজ করা হচ্ছে। তিনি বলেন, যেসকল স্থান হুমকির মুখে আছে সেসব স্পটগুলোতে বাঁধের সংস্কার করা হচ্ছে। তিনি বলেন, রিটেইনিং ওয়ালের পাশাপশি পরবর্তীতে বাঁধটির উভয় পাশে সৌন্দর্য্যবর্ধন প্রকল্পও হাতে নেয়ার পরিকল্পনা আছে। বর্তমানে আমরা অতি মাত্রায় ঝুঁকিপূর্ণ অংশগুলোতে কাজ করছি।