মীরসরাই উপজেলার ৫টি ইউনিয়নে গভীর ও অগভীর নলকুপ থেকে উঠছে না পানি। বৃষ্টিপাত না হওয়া পর্যন্ত আরো ৫ সহস্রাধিক টিউবওয়েল পানি পাবে না। খরা বৃদ্ধি পেলে ভয়াবহতা আরো বৃদ্ধি পেতে পারে বলে মনে করছে স্থানীয় জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগ।
মীরসরাই উপজেলার সাধারন মহলে অভিযোগ উঠেছিল স্থানীয় বিএসআরএম স্টিল মিল অনেকগুলো গভীর নলকূপ দ্বারা ভূগর্ভ থেকে অতিরিক্ত পানি উত্তোলনের কারনে আশেপাশের ইউনিয়নগুলো পানি পাচ্ছে না। অবশেষে গতকাল সোমবার সকাল ১১টায় মীরসরাই উপজেলা প্রশাসনের একটি টিম বিএসআরএম স্টিল মিল গিয়ে সরেজমিনে পুরো মিল পরিদর্শন করেন। তারা দেখতে পান সেখানে ৪টি গভীর নলকূপ রয়েছে। এরমধ্যে পানি সংকট সৃষ্টি হবার পর ৩টি নলকূপই বন্ধ রাখা হয়েছিল। গতকাল উপজেলা প্রশাসন ওদের নিজেদের খাবার পানির জন্য রাখা গভীর নলকূপটিও বন্ধ করে দেয়। মীরসরাই উপজেলা চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন জানান, ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের নির্দেশে সরেজমিনে মিল পরিদর্শন করে দেখা গেছে বিএসআরএম ইতিমধ্যে সেখানে প্রশাসনের নির্দেশনা অনুযায়ী ফেনী নদী থেকে ভাউচার দ্বারা পানি আনছে, আবার নিজেরাই পানির রিজার্ভার, ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্টসহ পাহাড়ি এলাকার বারমাসি ছরা থেকে লেক সৃজন করছে।
মিল পরিদর্শনকালে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মিনহাজুর রহমান, সহকারী কমিশনার (ভূমি) সুবল চাকমা, উপজেলা প্রকৌশলী কামরুজ্জামান, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী সাঈদ মাহমুদ প্রমুখ। এসময় মিলের ব্যবস্থাপক এডমিন দেলোয়ার হোসেন মোল্লা ও ব্যবস্থাপক এইচ আর জামাল হোসাইনও উপস্থিত ছিলেন।
তবে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী সাঈদ মাহমুদ এর কাছ থেকে পানি সংকটাপন্ন এলাকার সর্বশেষ তথ্য জানতে চাইলে তিনি বলেন উপজেলার ৮নং দুর্গাপুর, ৩নং জোরারগঞ্জ, ২নং হিঙ্গুলী, ৪ নং ধূম ইউনিয়ন ও বারইয়াহাট পৌরসভা এলাকায় অভিযুক্ত ৫০-৬০ টি গভীর ও অগভীর নলকূপ পরীক্ষা করেছেন। এসব এলাকায় বর্তমানে ৭০ শতাংশ অগভীর ও ২ শতাংশ গভীর নলকূপ পানি পাচ্ছে না। হিসেবে প্রায় ৫ হাজারের বেশি টিউবওয়েল পানি পাচ্ছে না । বর্তমান বৃষ্টিহীন খরা পরিস্থিতি আরো চলমান থাকলে এই অবস্থার আরো অবনতি হতে পারে। সেক্ষেত্রে বৃষ্টির জন্য অপেক্ষা করা ছাড়া কোন বিকল্প নেই বলে জানান তিনি। তিনি বলেন প্রতিটি টিউবওয়েলে স্বাভাবিক লেয়ারের চেয়ে অনেক বেশি ডাউন পানির লেয়ার।
উপজেলা চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন বলেন, বিএসআরএমের বিরুদ্ধে স্থানীয় জনগণের নানা অভিযোগের পর আওয়ামীলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য সাবেক মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এমপির নির্দেশনা মোতাবেক আমরা এসব অভিযোগ সত্য কিনা তা যাচাই করতে প্রশাসনিক টিমসহ সেখানে গিয়ে দেখতে পাই, ওরা খাবার পানি ছাড়া মিলে ব্যবহারের জন্য কোন পানি তুলছে না। তবুও খাবারের পানি তোলাটাও আমরা বন্ধ করে দিয়েছি। তিনি সাধারন মানুষকে কোন প্রকার বিশৃংখলা বা গুজব সৃষ্টি না করার অনুরোধ জানান।