বিদেশগামীসহ শত শত মানুষ পাসপোর্টের জন্য প্রতিদিন ভিড় করছেন নগরীর দুটি পাসপোর্ট অফিসে। বিপুল সংখ্যক মানুষের চাপ সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছেন পাসপোর্ট অফিসের কর্মকর্তা কর্মচারীরা। চট্টগ্রামে ‘জরুরি ফি’ ছাড়া কোনো পাসপোর্টই গ্রহণ করা হচ্ছে না। করোনাকালে দীর্ঘদিন নবায়নসহ পাসপোর্টের বিভিন্ন কার্যক্রম বন্ধ ছিল। এখন কাজ শুরু হওয়ার পর চাপ তৈরি হয়েছে। সূত্র জানিয়েছে, চট্টগ্রামে দুটি পাসপোর্ট অফিস রয়েছে। এই দুই পাসপোর্ট অফিসে বিস্তৃত এলাকার মানুষের পাসপোর্ট প্রদান এবং নবায়নের কার্যক্রম চলে। এরমধ্যে মনসুরাবাদ অফিসে প্রতিদিন গড়ে দুই/আড়াইশ এবং পাঁচলাইশ অফিসে দুইশর মতো আবেদন জমা পড়ত। কিন্তু করোনাকালে দীর্ঘদিন নতুন পাসপোর্ট প্রদান এবং নবায়ন বন্ধ থাকায় হাজার হাজার মানুষ বেকায়দায় পড়েন। মাঝখানে কিছুদিন কার্যক্রম চললেও করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হওয়ায় পাসপোর্টের কার্যক্রম আবার বন্ধ হয়ে যায়। তবে এখন সীমিত পরিসরে কাজ শুরু হলে প্রতিদিন শত শত মানুষের চাপে দিশেহারা হওয়ার উপক্রম হয়েছে চট্টগ্রামের পাসপোর্ট অফিসের কর্মকর্তা কর্মচারীদের। স্বাভাবিকের প্রায় দ্বিগুণ লোক ভিড় করছেন প্রতিদিন। গড়ে প্রায় এক হাজার লোক দুই পাসপোর্ট অফিসে হাজির হচ্ছেন আবেদন নিয়ে।
নতুন পাসপোর্ট কিংবা নবায়নে নতুন করে ডাটা এন্ট্রি করা হচ্ছে। ই-পাসপোর্টের জন্য চোখের আইরিশসহ ছবি তোলা হচ্ছে নতুন করে। এতে নতুন করে ছবি তোলা, আইরিশ নেওয়া এবং স্বাক্ষর করার কাজ করতে হচ্ছে অপারেটরদের। প্রতিটি কাজে গড়ে পাঁচ সাত মিনিট সময় লাগছে। এতে প্রতিদিনই দীর্ঘ লাইনের সৃষ্টি হচ্ছে পাসপোর্ট অফিসের ভেতরে বাইরে। বিপুল সংখ্যক মানুষের জটলা সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন পুলিশ এবং আনসার সদস্যরা।
পাসপোর্ট অফিসের পদস্থ একজন কর্মকর্তা জানান, ই-পাসপোর্টের আবেদন করা বেশ জটিল একটি প্রক্রিয়া। অনলাইনে ফরম প্রসেসিং করতে হয়। ভিসার আবেদনের মতো এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা সাধারণ মানুষের পক্ষে সম্ভব নয়। এতে পরনির্ভরশীলতা বেড়ে গেছে। নানাভাবে কষ্ট করে ফরম পূরণের পর নির্ধারিত সময় নিয়ে একজন মানুষ পাসপোর্টের আবেদন জমা দিতে আসছেন। গত কয়েকদিন ধরে যেভাবে মানুষ ভিড় করছেন তা সামাল দিতে আমাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। জরুরি ফি ছাড়া সাধারণ ফি দিয়ে কোনো পাসপোর্টই জমা নেওয়া হচ্ছে না। মানুষ বাড়তি ফি দিয়ে পাসপোর্টের জন্য আবেদন করছেন।
এই ব্যাপারে চট্টগ্রামের পাসপোর্ট অফিসের বিভাগীয় পরিচালক মোহাম্মদ আবু সাইদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, হুট করে আবেদনকারীর সংখ্যা অনেক বেড়ে গেছে। কিছুদিন বন্ধ থাকায় আবেদনকারীর একটি জট তৈরি হয়েছে। তবে আমাদের কিছু কষ্ট হলেও আমরা আবেদন গ্রহণ করছি। দু-চারদিনের মধ্যে আবেদনকারীর সংখ্যা স্বাভাবিকে নেমে আসবে বলে তিনি আশাবাদ করেন।