আমাদের দেশে প্রতিবছর অসংখ্য মানুষ বজ্রপাতে মারা যান। বজ্রপাতে দেশে গড়ে প্রায় ২৫০ জনের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বিশ্বে বজ্রপাতে যতজন লোক মারা যায়, তার চার ভাগের এক ভাগই মারা যায় বাংলাদেশে। বিশেষ করে বৈশাখ -জ্যৈষ্ঠ মাসে আমাদের দেশে বজ্রপাতের প্রকোপ বেশি পরিলক্ষিত হয়। বাংলাদেশে খেটে খাওয়া চাষিরাই মূলত বজ্রপাতের শিকার হয় সবচেয়ে বেশি। ঝড়, বৃষ্টি, বজ্রপাতের সময়ও তারা মাঠে কাজ করে থাকেন। ফলে বজ্রপাতে মৃত্যুহার তাদের মধ্যেই সবচেয়ে বেশি দেখা যায়। বাংলাদেশ সরকার ২০১৬ সালে বজ্রপাতকে প্রাকৃতিক দুর্যোগ হিসেবে ঘোষণা করে। কিন্তু এখনো পর্যন্ত এটি প্রতিরোধের কোন উপায় বের করা সম্ভব হয়নি। এমনকি বিজ্ঞানীরাও বজ্রপাতের আগাম সংকেত দেওয়ার কৌশল আবিষ্কার করতে পারেনি। বজ্রপাতে মৃত্যুঝুঁকি কমাতে মানুষের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধি করার কোন বিকল্প নেই। ঝড়-বৃষ্টি, বজ্রপাতের সময় আমাদের অবশ্যই পাকা ভবনের নিচে আশ্রয় নিতে হবে। কোন অবস্থাতেই খোলা স্থানে থাকা যাবে না। উঁচু গাছপালা ও বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন থেকে দূরে থাকতে হবে। পাশাপাশি সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে ব্যাপকহারে উঁচু হয় এমন গাছের চারা রোপণ করতে হবে। বজ্রপাত ঠেকাতে উঁচু গাছ খুবই কার্যকরী। আমাদের বসতবাড়ির আশেপাশে নারিকেল, সুপারি গাছের মতো উঁচু গাছ বেশি করে লাগাতে হবে। বজ্রপাতে প্রাণহানি হ্রাসে বেশি করে তাল গাছ রোপণ করতে হবে। সর্বপরি, বজ্রপাতে মৃত্যঝুঁকি কমাতে সরকারের পরিকল্পিত পরিকল্পনার পাশাপাশি মানুষের মাঝে সচেতনতা বাড়াতে হবে।
মো. আশরাফুল ইসলাম, শিক্ষার্থী রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগ,
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।