কক্সবাজার সদরের ঈদগাঁওতে মনজুর আলম(৪৫) নামের এক প্রবাস ফেরত ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যা করেছে স্ত্রী ও শ্বশুরপক্ষের লোকজন।
গতকাল শুক্রবার আধমরা অবস্থায় তাকে উদ্ধারের পর কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সেখান থেকে আজ শনিবার (২২ মে) দুপুরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে নেওয়ার পথে তিনি মারা যান।
এই ঘটনায় নিহত ব্যক্তির স্ত্রী, শ্বশুর-শাশুড়ি, শ্যালক ও শ্যালিকাসহ ৮ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
পুলিশ জানায়, নিহত মনজুর আলম ঈদগাঁও’র পার্শ্ববর্তী চৌফলদণ্ডি ইউনিয়নের নতুনমহাল গ্রামের মৃত আব্দুল গণির ছেলে। তিনি প্রায় ১২ বছর আগে ঈদগাঁও ইউনিয়নের মাইজপাড়া গ্রামের নুরুল আজিমের মেয়ে রীনা আক্তারকে দ্বিতীয় স্ত্রী হিসেবে বিয়ে করে সৌদি আরবে গমন করেন।
প্রবাস জীবনে যা আয় করেছেন তা বাংলাদেশে অবস্থানরত তার দ্বিতীয় স্ত্রী রীনা আক্তারের নামে পাঠাতেন। তার স্ত্রী নিজের নামে জমি কিনেছেন। আর সেখানেই বানিয়েছেন বহুতল ভবনও। প্রায় ৩ মাস আগে করোনা পরিস্থিতির কারণে ছুটিতে আসার পর আর বিদেশে ফিরতে পারেননি মনজুর আলম। এরই মধ্যে তার পাঠানো অর্থের হিসাব নিয়ে স্ত্রী ও শ্বশুরপক্ষের লোকজনের সাথে বিরোধের সৃষ্টি হয়।
এরই জের ধরে শুক্রবার শ্বশুরপক্ষের লোকজন বেধড়ক পেটায় তাকে। পরে প্রতিবেশীরা মুমূর্ষু অবস্থায় মনজুর আলমকে উদ্ধার করে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। আজ শনিবার দুপুরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।
এদিকে প্রবাস ফেরত মনজুর আলমকে নির্দয়ভাবে পেটানোর একটি ভিডিও শুক্রবার রাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়।
বিষয়টি পুলিশের নজরে আসার পর ঘটনায় জড়িত প্রবাসীর স্ত্রী, শ্বশুর-শাশুড়িসহ আটজনকে আটক করা হয়েছে বলে জানান কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মো. হাসানুজ্জামান।
তিনি জানান, শনিবার তাদের হত্যা মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়।
ঈদগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল হালিম জানান, প্রবাসীকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় নিহতের বড় ভাই বাদী হয়ে নিহতের শ্বশুর নুরুল আজিমকে (৫৬) প্রধান আসামী ও স্ত্রী রীনা আক্তার (৩০), শ্যালিকা রুবি আক্তার (২২), শাশুড়ি মনোয়ারা বেগম (৪৮)সহ মোট ৯ জনকে আসামী করে ঈদগাঁও থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।
তাদের মধ্যে ৮ আসামী গ্রেফতার রয়েছে এবং একজন পলাতক রয়েছে। পলাতক আসামীকেও ধরার চেষ্টা চলছে।