চীনের সিনোফার্ম থেকে আসা ৫ লাখ ডোজ টিকা আগামী সপ্তাহ থেকে প্রয়োগ শুরু হবে এবং করোনাভাইরাস মোকাবেলায় সম্মুখসারির যোদ্ধারা অগ্রাধিকার পাবেন বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। গতকাল সোমবার স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেছেন, আগামী ২৫ অথবা ২৬ তারিখ থেকে এই টিকা দেওয়ার কার্যক্রম শুরু করতে পারব। সেই পরিকল্পনা মোটামুটি দাঁড় করানো হয়েছে। দেশে আরও টিকা আসার বিষয়ে অগ্রগতির খবর দিয়ে মন্ত্রী বলেন, টিকা নিয়ে ভালো খবর খুব শিগগিরই আসবে। আমরা টিকা নিয়ে অনেক দেশের সঙ্গে কথা বলছি। অনেক জায়গায় ভালো অগ্রগতি হয়েছে। ফাইনাল হলে আপনারা জানতে পারবেন। কিন্তু ভালো খবর হয়ত সামনে আপনাদের আমরা দিতে পারব।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের হাতে কয়েক কোটি অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা আছে, যা তারা প্রয়োগ করছে না। সেখান থেকে একটি অংশ ইতোমধ্যে বাংলাদেশ চেয়েছে। পাশাপাশি টিকার আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফরম কোভ্যাক্সের কাছ থেকেও টিকা পাওয়ার অপেক্ষায় আছে বাংলাদেশ। রাশিয়া ও চীন রাজি হলে তাদের উদ্ভাবিত করোনাভাইরাসের টিকা বাংলাদেশেও যাতে উৎপাদন করা যায়, সেজন্য ইতোমধ্যে মন্ত্রিসভা কমিটির অনুমোদনের কাজ সেরে রেখেছে সরকার। তবে দেশে টিকা উৎপাদনের উদ্যোগ বাস্তবায়নে আরও সময় লাগবে বলে সেদিন জানিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক সোমবার এ বিষয়ে বলেন, এখনও দেশীয় কোনো প্রতিষ্ঠানকে চীনের সিনোফার্মের টিকা তৈরির অনুমোদন দেওয়া হয়নি। এখন আমাদের চেষ্টা থাকবে টিকা ক্রয় করে মানুষকে দেওয়ার। এটাই সবচেয়ে তাড়াতাড়ি হবে। টিকা তৈরি করার সময়ের ব্যাপার। আমি মনে করি খুব তড়িৎ গতিতে টিকা তৈরি করা সম্ভব নয়, যদি এঙিস্টিং কোনো ফ্যাসিলিটিজ থাকে; আর ফ্যাসিলিটিজ না থাকলে আরও বেশি সময় লাগবে। চীন থেকে পাওয়া উপহারের টিকা বিভিন্ন মেডিকেল, নার্সিং শিক্ষার্থী এবং মেডিকেল টেকনোলজিস্টদের দেওয়া হবে বলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ইতোমধ্যে জানিয়েছে।
এদিকে বাস মালিক-শ্রমিকরা চালুর দাবি তুললেও মহামারী পরিস্থিতি বিবেচনায় তার আরও ‘কিছু দিন’ বন্ধ রাখার পক্ষপাতি স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। সংক্রমণ আরও কমিয়ে আনার লক্ষ্যেই এই পদক্ষেপ প্রযোজন বলে মনে করেন তিনি। গতকাল মন্ত্রণালয়ে সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, এখন বাস, ট্রেন, লঞ্চ বন্ধ আছে। আমরা প্রস্তাব করব এটাকে বন্ধ রাখতে।
অন্যদিকে দ্রুত সংক্রমণশীল করোনাভাইরাসের ভারতীয় ধরন ঠেকাতে দেশটির সঙ্গে সীমান্তও আরও কিছু দিন বন্ধ রাখার সুপারিশ করছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ভারতের সঙ্গে সীমান্ত বন্ধ করে দেওয়ায় বাংলাদেশ কিছুটা হলেও নিরাপদে আছে। বর্ডার এখন বন্ধ আছে। আগামীতেও বন্ধ থাকবে, এটা আমাদের সুপারিশ থাকবে। যে পর্যন্ত ভারতের অবস্থা মোটামুটি স্বাভাবিক না হয়।