চলছে শেষ মুহূর্তের কেনাকাটা

ভিড় আছে, অনেকেই মানছে না স্বাস্থ্যবিধি

আজাদী প্রতিবেদন | বুধবার , ১২ মে, ২০২১ at ৬:২৯ পূর্বাহ্ণ

নগরীর মার্কেটগুলোতে এখন চলছে শেষ মুহূর্তের কেনাকাটা। গতকাল দিনভর ক্রেতারা এক মার্কেট থেকে অন্য মার্কেটে ঘুরে ঘুরে নিজেদের প্রয়োজনীয় কেনাকাটা সেরেছেন। সকালের দিকে মার্কেটে তেমন চাপ না থাকলেও দুপুর গড়িয়ে বিকেল নামতেই ক্রেতার চাপ বেড়ে গেছে। সরকার সীমিত পরিসরে রাত ৮টা পর্যন্ত মার্কেট খোলার রাখার অনুমতি দিলেও সেই নির্দেশনা তেমন মানছেন না ব্যবসায়ীরা। সকাল থেকে ভোর রাত অবধি মার্কেটে চলছে বেচাবিক্রি। স্বাস্থ্যবিধি মানার তেমন আগ্রহ দেখা যায়নি কারো কাছে। মার্কেটের ফটকগুলোতে নিরাপত্তীরক্ষীরা নিয়ম রক্ষার জন্য জীবাণুনাশক স্প্রে করছেন ঠিকই, কিন্তু দোকানের ভেতরে ক্রেতা-বিক্রেতা কারোই মুখে ছিল না মাস্ক।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইতোমধ্যে করোনার ভারতীয় ধরন দেশে শনাক্ত হয়েছে। মার্কেটের জনস্রোত আমাদের জন্য ভয়ঙ্কর বিপদ ডেকে আনতে পারে। তবে ব্যবসায়ীরা বলছেন, ঈদের বাকি আছে আর দুদিনের মতো। ক্রেতারা আসছেন ইফতারের পরে। তাই রাত ৮টায় চাইলেও মার্কেট বন্ধ করা যাচ্ছে না।
সরেজমিনে গতকাল নগরীর টেরীবাজার, বিপণী বিতান, রেয়াজুদ্দিন বাজার, তামাকুমন্ডি লেইন, জহুর হকার্স মার্কেট, বালি আর্কেড, কেয়ারি ইলিশিয়াম, সেন্ট্রাল প্লাজা, মিমি সুপার মার্কেট, আফমি প্লাজা, ফিনলে স্কয়ার, শপিং কমপ্লেঙ, স্যানমার ওশান সিটি, ইউনেস্কো সিটি সেন্টার, আমীন সেন্টার, ভিআইপি টাওয়ার, আখতারুজ্জামান সেন্টার, সিঙ্গাপুর ব্যাংকক মার্কেট এবং মতি টাওয়ারের বিভিন্ন দোকান ঘুরে দেখা যায়, প্রায় প্রত্যেকটি দোকানে পা ফেলার জায়গা নেই। ক্রেতাদের আকৃষ্ট করতে বিক্রেতারাও বিরতিহীনভাবে বিভিন্ন ধরনের পোশাক এবং পণ্যের কালেকশন দেখিয়ে যাচ্ছেন। ক্রেতারা আগ্রহ সহকারে সেসব পণ্য খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখছেন। এ সময় স্বাস্থ্যবিধির ব্যাপারে জানতে চাইলে কোনো দোকানদারই সদুত্তর দিতে পারেননি।
আফমি প্লাজায় আসা ক্রেতা আবরার আহমেদ বলেন, ঈদের সময় আর বেশিদিন বাকি নেই। তাই পাঞ্জাবি কিনতে এসেছি। এ বছর ভালো ভালো ডিজাইনের পাঞ্জাবি নিয়ে এসেছেন ব্যবসায়ীরা। যদিও দাম একটু বেশি। ইমরান হোসেন নামের এক বিক্রেতা বলেন, ইফতারের পর মার্কেটে ভালো বেচাকেনা হচ্ছে। সবাই দলবেঁধে আসছেন, ফলে চাইলেও স্বাস্থ্যবিধি মেনে ব্যবসা করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে আমরা কাউকে মাস্ক ছাড়া মার্কেট প্রবেশ করতে দিচ্ছি না।
নিউ মার্কেটে আসা ক্রেতা ঈশিতা সুলতানা বলেন, ঈদের জামা কাপড় আগেই কিনেছি। এখন কিছু কসমেটিকস কিনতে এসেছি। মার্কেটে চিন্তার বাইরে মানুষ। করোনার পরিস্থিতির জন্য অনেক অনেক ভয়ে ভয়ে শপিং শেষ করেছি। তামাকুমণ্ডি লেইন বণিক সমিতির সভাপতি আবু তালেব দৈনিক আজাদীকে বলেন, ঈদের বাকি আছে আর দুদিন। স্বভাবতই মার্কেটে বেচাবিক্রি বেড়েছে। তবে ক্রেতা-বিক্রেতাদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য আমরা বারবার মাইকিং করছি।
টেরীবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবদুল মান্নান আজাদীকে বলেন, মার্কেটে প্রচুর ক্রেতা। প্রত্যেক বিক্রেতাদের মুখে হাসি ফুটেছে। গত বছর করোনার কারণে আমরা যে ক্ষতির মুখে পড়েছিলাম, তা কিছুটা হলেও এবার কাটিয়ে উঠতে পারছি।
জহুর হকার্স মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল আমিন আজাদীকে বলেন, মার্কেটে এখন ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড়। এ বছর মার্কেট খোলার প্রথম দিকে ক্রেতার উপস্থিতি বেশি ছিল না। তবে সময় বাড়ার সাথে সাথে মার্কেটে সমাগম বাড়তে থাকে। আমরা স্বাভাবিকভাবেই খুশি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধদাঁড়িয়ে থাকা গার্মেন্টস কর্মীদের চাপা দিল বাস
পরবর্তী নিবন্ধকৌতুক কণিকা