মহেশখালীতে দীর্ঘদিনের জায়গা জমি সংক্রান্ত বিরোধ ও পারিবারিক কলহের জের ধরে পিতা কর্তৃক অপর স্ত্রীদের ছেলে ও ভাড়াটে সন্ত্রাসী নিয়ে গভীর রাতে ঘরে ঢুকে প্রথম স্ত্রীর ঘুমন্ত ছেলেকে নৃশংস ও পৈশাচিক কায়দায় জবাই করে হত্যার ঘটনা ঘটেছে।
এ ঘটনায় প্রথম স্ত্রী ও অপর ছেলে-মেয়েসহ আরো ৪ জনকেও কুপিয়ে মারাত্মক আহত করা হয়েছে। নিহত ছেলের নাম মো. জোবায়ের (৩৭)। ঘাতক পিতা আলতাফ উদ্দিন ও সৎ ভাই টিপুকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে।
নৃশংস এ ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টায় উপজেলার শাপলাপুর ইউনিয়নের বারৈয়াছড়ি গ্রামে। নিহত জুবায়েরের মামা শহীদ হোসেন ও মৌলভী বশির আহমদ জানান, ঘাতক পিতা আলতাফ হোসেন প্রথম স্ত্রী আমাদের বোন জান্নাত আরা বেগম ছাড়া আরও ৩টি বিয়ে করে। প্রথম সংসারের স্ত্রী ও ছেলে মেয়েদের সাথে দীর্ঘদিন ধরে বাড়ি ভিটার জায়গা সংক্রান্ত বিরোধ ও পারিবারিক কলহ চলে আসছিল। বিষয়টি নিয়ে ইতিপূর্বে অনেক সালিশ বিচার হয়েছে এবং সর্বশেষ বর্তমানে থানায় পিতা-পুত্রের পরস্পরবিরোধী অভিযোগ বিচারাধীন রয়েছে।
এ ঘটনার জের ধরে সোমবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টায় ঘাতক পিতা আলতাফ হোসেনের নেতৃত্বে তার ভাই ও অপর স্ত্রীর সন্তান সহ ৮-১০ জন সন্ত্রাসী নিয়ে প্রথম স্ত্রীর আলাদা ঘরে সশস্ত্র হামলা চালিয়ে স্ত্রী-পুত্রসহ পরিবারের ৫ সদস্যকে ঘুমন্ত অবস্থায় এলোপাতাড়ি কুপিয়ে মারাত্মক আহত করে।
এ সময় বড় ছেলে মোহাম্মদ জোবায়ের কে হাত-পায়ের রগ কেটে ও জবাই করে হত্যা করে। মারাত্মক আহত অন্যান্যরা হচ্ছে- নিহতের মা জান্নাত আরা বেগম (৫৫), ছোট ভাই মো. ফয়সাল (২৮), বোন জুনু বেগম (৩০) ও ভাগিনী শামিমা আক্তার (১৬)।
মহেশখালী থানার ওসি আব্দুল হাই ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, পারিবারিক কলহ ও জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে পিতার নেতৃত্বে হামলা চালিয়ে ছেলেকে খুন করা হয়েছে মর্মে প্রাথমিক অভিযোগে জানা গেছে। ঘটনার খবর পেয়ে ভোরে দ্রুত অভিযান চালিয়ে শাপলাপুর ইউনিয়নের মৌলভীকাটা এলাকায় এক বাড়িতে আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় হতে হত্যার দায়ে অভিযুক্ত ঘাতক পিতা আলতাফ হোসেন ও তার দ্বিতীয় স্ত্রীর ছেলে টিপুকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পার্শ্ববর্তী উপজেলা চকরিয়া হাসপাতাল থেকে লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ঘটনায় জড়িত অন্যান্যদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।