হেফাজত নেতা নোমান ফয়েজীর বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা

হাটহাজারী প্রতিনিধি | শুক্রবার , ৭ মে, ২০২১ at ৪:৫১ অপরাহ্ণ

হেফাজতের সদ্য বিলুপ্ত কমিটির কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক মাওলানা জাকারিয়া নোমান ফয়েজীর বিরুদ্ধে হাটহাজারী থানায় ভুক্তভোগী এক মহিলা ধর্ষণ মামলা দায়ের করেছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে এ মামলা দায়ের করা হয়।
চট্টগ্রামের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বিশেষ শাখা) আবদুল্লাহ আল মাসুম গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলার এজাহারে এই নারী অভিযোগ করেন, ২০১৯ সালে মাওলানা জাকারিয়া নোমান ফয়েজীর সাথে তার ফেসবুকের মাধ্যমে পরিচয় হয়। পরিচয়ের পর থেকে তাদের উভয়ের মধ্যে ফোনালাপ এবং মেসেঞ্জারের মাধ্যমে যোগাযোগ ঘনিষ্ঠ হতে থাকে। এক পর্যায়ে নোমান ফয়েজী তাকে বিয়ের প্রলোভন দেখান। বিয়ের প্রলোভনে পড়ে কথিত মহিলা হাটহাজারীতে এসে বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করতে থাকেন।
একই সালের নভেম্বর পর্যন্ত ভাড়া বাসায় এই হেফাজত নেতা মহিলার সাথে দৈহিক মিলনে লিপ্ত হয়ে আসছিল। দীর্ঘ এক বছর পর্যন্ত শারীরিক সম্পর্ক চালিয়ে গেলেও বিয়ে না করে তাকে বিয়ের আশ্বাস দিতে থাকে। এক বছর পর এই মহিলা হাটহাজারী থেকে তার এক আত্মীয়ের বাসায় চট্টগ্রাম শহরে চলে আসেন। সেখানে গিয়েও নোমান ফয়েজী বিভিন্ন সময় এই মহিলার সাথে হোটেল কিংবা বাসায় শারীরিক সম্পর্ক ঘটায়।
এই ঘটনায় কথিত মহিলা হাটহাজারী থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেন।
উল্লেখ্য, গত ২৬, ২৭, ২৮ মার্চ দেশে ভারতের প্রধান মন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর আগমনের বিরোধিতা করে হাটহাজারীতে সহিংসতার ঘটনা ঘটে। এই সহিংস ঘটনায় হাটহাজারী থানা ডাকবাংলো, সদর তহশীল অফিস, সহকারী কমিশন ভূমি অফিসে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে বিক্ষোভকারীরা।
বিক্ষোভে সহকারী কমিশনার ভূমির সরকারি গাড়ি আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয়।
হাটহাজারী-নাজিরহাট মহাসড়কে দেওয়াল নির্মাণ করে গাড়ি চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয় এমনকি ডাকবাংলোতে অবস্থানকারী একজন শিক্ষানবিশ এএসপি, থানার একজন উপ-পরিদর্শককে মারধর করে ডিএসবি’র একজন কন্সটেবলকে ধরে নিয়ে মাদ্রাসায় আটকে রেখে জীবননাশের হুমকি দেওয়া হয়।
এই ঘটনায় থানার দুইজন উপ-পরিদর্শক এবং ডিএসবি’র ভুক্তভোগী কন্সটেবল বাদী হয়ে থানায় পৃথক তিনটি মামলা রেকর্ড করা হয়। এই তিন মামলার দু’টি মামলায় মাওলানা জাকারিয়া নোমান ফয়েজীকে বিবাদী করা হয়।
এসব মামলায় ১৪৮ জনের নামোল্লেখ সহ তিন হাজারজনকে বিবাদী করা হয়।
থানায় মামলা রেকর্ডের পর তিনি আত্মগোপন চলে যান।
গত ৫ এপ্রিল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে চট্টগ্রামের গোয়েন্দা পুলিশের একটি টিম তাকে কক্সবাজার জেলার চকরিয়া উপজেলার একটি গ্রাম থেকে আটক করে।
আটকের পর তাকে আদালতে হাজির করে পুলিশের পক্ষ থেকে রিমান্ডের আবেদন করা হয়।
রিমান্ডে এনে চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার এস এম শহীদুল হক তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে প্রেস ব্রিফিংকালে জানান, আটক নোমান ফয়েজী একাধিক নারীর সাথে তার বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের কথা স্বীকার করেন।
পরে পুলিশ তদন্ত করে ভুক্তভোগী এক নারীকে খুঁজে পায়। আর এই নারী তার বিরুদ্ধে হাটহাজারী থানায় ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন।
হাটহাজারী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. শাহাদাত হোসেন ধর্ষণ মামলা রেকর্ডের কথা গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধরাঙামাটির নানিয়ারচর উপজেলা চেয়ারম্যান হত্যা মামলার আসামী আটক
পরবর্তী নিবন্ধবাঁশখালীতে মাস্টার নজির আহমদ ট্রাস্টের চাল বিতরণ