গ্রীষ্মের এই দাবদাহ আর কখনো কখনো কাল বৈশাখীর মাতাল হাওয়ায় উন্মত্ত দিগন্তে দৃষ্টি আটকে যায় তেপান্তরের বা বাড়ির পাশের কোন জারুল গাছের বাতাসে দোল খাওয়া ঢেউয়ের নাচনে। এই মৌসুমেই জারুল ফোটে অসম্ভব সুন্দর বেগুনি রঙের থোকা থোকা ফুল। গ্রীষ্মের শুরুতেই এর ফুল ফোটে এবং শরৎ পর্যন্ত তা দেখা যায়। জারুল কাঠ লালচে রঙের, অত্যন্ত শক্ত ও মূল্যবান। মীরসরাইয়ের বিভিন্নস্থানে জারুল গাছে বেগুনি বর্ণের ফুল ধরেছে। সবুজ পাতার মাঝে প্রবল বেগুনি বর্ণের রূপে মাতোয়ারা সবাই। গ্রীষ্মে কচি পাতার ভরা গাছের ডালের আগায় বেগুনি রঙের ফুলের বড় বড় থোকা বেশ নজরকাড়া। বেগুনি রং যেমন আকর্ষণীয়, তেমনি তার পাপড়ির নমনীয়তা ও কোমলতা হৃদয় ছুঁয়ে যায়। ফুল ৫-৭ সেন্টিমিটার চওড়া, অনেকগুলোয় সোনালি পুংকেশর থাকে। ফল ডিম্বাকার, শক্ত, বিদারি। বীজ ১ সেন্টিমিটার চওড়া, পাতলা, বাদামি। বীজে চাষ। জারুলের বৈজ্ঞানিক নাম খধমবৎংঃৎড়সরধ ংবঢ়পরড়ংধ। ইংরেজি নাম প্রাইড অব ইন্ডিয়া। বৈজ্ঞানিক নামের প্রথমাংশ এসেছে সুইডেনের অন্যতম তরু অনুরাগী লেজারস্ট্রমের নামে। মাঝারি আকারের বৃক্ষটি শাখা-প্রশাখাময়। জলাভূমিতে যেমন এটি বেড়ে উঠতে পারে, তেমনি শুকনো এলাকাতেও এদের মানিয়ে নিতে সমস্যা হয় না।
জারুলের কাঠ লালচে রঙের, অত্যন্ত শক্ত ও মূল্যবান। ঘরের চৌকাঠ-বরগা, লাঙল, নৌকা ও আসবাব তৈরিতে জারুল কাঠের কদর আছে। জ্বর, অনিদ্রা, কাশি ও অজীর্ণতায় জারুল উপকারী। উপজেলার মহামায়া, দুর্গাপুর, করেরহাট, জোরারগঞ্জ, ইছাখালী, মহাসড়কের অনেক স্থানে, পাহাড়ি ও উপকূলাঞ্চলের অনেক স্থানে এখনো জারুল গাছ চোখে পড়ে। মীরসরাইয়ের বন রেঞ্জ কর্মকর্তা আবু তাহের বলেন, এই অর্থনৈতিক এবং প্রাকৃতিক শোভা মণ্ডিত বৃক্ষ রোপণে আমরা প্রায়শই জনগণকে উদ্বুদ্ধ করে থাকি। এছাড়া আমাদের সহযোগিতাও থাকে।