জমে উঠেছে নগরীর টেরি বাজারের বেচাবিক্রি। মার্কেটে দিনভর ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড়ে বিক্রেতাদের যেন দম ফেলার ফুরসত ছিল না। ব্যবসায়ীরা বলছেন, শেষ মুহূর্তে মার্কেটে ক্রেতা সমাগম বেড়েছে এটি ব্যবসায়ীদের জন্য সুখবর। আমরা আশা করেছিলাম ১৫ রমজানের পর হয়তো বেচাবিক্রি বাড়বে, কিন্তু সেটি হয়নি। তবে এক সপ্তাহ বিলম্বিত হলেও ঈদের আগে বাকি সময়টা এভাবে বিক্রি হবে এমনটাই আশা করছি। গতবছর করোনকালে ব্যবসায়ীরা প্রচুর টাকা লোকসান দিয়েছেন।
এদিকে বরাবরের মতো মার্কেটে আগত ক্রেতা এবং বিক্রেতাদের ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিধির বিষয়টি উপেক্ষিত ছিল। অনেক ক্রেতা বিক্রেতা মাস্ক নাকের নিচে কিংবা চিবুকের নিচে নামিয়ে রাখেন। তবে মার্কেট সমিতির পক্ষ থেকে বারবার স্বাস্থ্যবিধি মানার জন্য প্রচার প্রচারণা অব্যাহত রেখেছে। গতকাল সরেজমিনে নগরীর টেরি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, মার্কেটে অনেকে পরিবার পরিজন নিয়ে পছন্দের জামা কাপড় দরদাম করছেন। দর দামে মিললে তারা হাসিমুখে জামা কিনে বাড়ির পথ ধরছেন, আবার অনেকে ছুটে যাচ্ছেন অন্য দোকানদারের কাছে। বিক্রেতারা বিভিন্ন ডিজাইনের বাহারি পোশাক মেলে ধরে ক্রেতাদের আকর্ষণের চেষ্টা করছেন। ফৌজিয়া সুলতানা নামের এক গৃহিণী দৈনিক আজাদীকে বলেন, টেরি বাজারে ইউনিক ডিজাইনের জামা পাওয়া যায়। তাই প্রতি বছর ঈদের কেনাকাটা করতে এখানে ছুটে আসি। এছাড়া অন্যান্য সুপার মার্কেটের তুলনায় এখানে দামও কম। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তাজরিন হাসপিয়া রুশমি বলেন, বান্ধবির সাথে ঈদের শপিং করতে এলাম। টুকিটাকি কিছু শপিং করেছি। তবে এখনো জামা কিনতে পারিনি। বিক্রেতারা খুব বেশি দাম হাঁকাচ্ছেন। টেরি বাজারের কয়েকজন ব্যবসায়ী বলেন, এ বছর ঈদের আমেজ শুরু হয়েছে অনেক দেরিতে। মার্কেট খোলার প্রথম কয়েকদিনে ক্রেতা এসেছে হাতে গোনা। অন্য বছর ১৫ রমজানের পর বিক্রেতাদের খুব ব্যস্ত সময় কাটাতে হতো। তবে গত দুদিন ধরে ক্রেতা আসার পরিমাণ বেড়েছে। এখন মনে হচ্ছে ঈদের মার্কেট চলছে।
টেরি বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. আবদুল মান্নান বলেন, এখন আগের চেয়ে ক্রেতা সমাগম বাড়ছে। ব্যবসায়ীদের বেচাবিক্রিও ভালো হচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে আমরা গত বছরের ব্যবসায়িক ক্ষতি অনেকাংশে পুষিয়ে নিতে পারব। তবে সমস্যা হচ্ছে ক্রেতার আসার ধারাবাহিকতা থাকছে না। দুইদিন ক্রেতা সমাগম বাড়লে আবার হঠাৎ করে কমে যাচ্ছে। তবে আমরা সরকারকে অনুরোধ জানিয়েছিলাম- অন্তত এই কয়েকদিন যদি মার্কেট বন্ধ করার সময়সীমাটা বৃদ্ধি করা যায়, তবে ব্যবসায়ীদের উপকার হতো। কারণ আমাদের দেশের মানুষ দিনের বেলায় খুব একটা শপিং করতে আসতে চান না। ইফতারের পরে অনেকে রিলাক্সে মার্কেটে আসতে চান। কিন্তু রাত ৮টায় মার্কেট বন্ধ করে দেয়ার কারণে ইফতারের পরে সময়ও থাকছে না। তারপরেও এই সময়ের মধ্যে যে পরিমাণ ক্রেতা সমাগম হচ্ছে তাতে আমরা খুশি। আমরা ক্রেতা বিক্রেতাদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য বারবার মাইকিং করছি, লিফলেট বিতরণ করছি এবং মাস্ক করছি। ব্যবসায়ীদের বলে দিয়েছি- নো মাস্ক, নো এন্ট্রি।