পৃথিবীতে আমরা কত না সম্পর্কে জড়িয়ে। রক্তের সম্পর্ক, বন্ধুত্বের সম্পর্ক, ভালোবাসার সম্পর্ক, প্রেমের সম্পর্ক। মনে হয় সবাই আমরা একে অন্যের কত কাছের। কিন্তু কয়জন কয়জনের আপন হতে পারে! কেই বা কার আপন! যে সন্তান পজিশনে গিয়ে মা বাবার খোঁজ নেয় না, সে কি আপন! যে সন্তান কয়টা টাকা দিয়ে দায়িত্ব শেষ করে সে কি আপন! যে ভাই বোনকে আদরে মাথায় তুলে রেখে পৈত্রিক সম্পত্তির ভাগ থেকে কৌশলে বঞ্চিত করে সে কি আপন! যে বোন বাপ দাদার ঐতিহ্য নষ্ট করে কড়ায় গণ্ডায় হিসেব বুঝে নেয় সে কি আপন! যে স্ত্রী অল্প বেতনের স্বামীকে ছেড়ে চলে যায় সে কি আপন! যে বন্ধু বন্ধুত্বের অভিনয় করে বন্ধুকে ঠকিয়ে যায় সে কি আপন! যে ভালোবাসার মানুষ রূপ যৌবন শেষ হয়ে যাওয়া মানুষটাকে ফেলে চলে যায় সে কি আপন! যে মা মাসুম বাচ্চাকে ফেলে নতুন সম্পর্কে চলে যায় সে কি আপন মা! যে সন্তান, যে বোন, যে ভাই, যে আত্মীয়, ছোঁয়াছে রোগের ভয়ে মৃত্যুর সাথে লড়াই করা মানুষটাকে এক নজর দেখতে ভয় পায় সে কি আপন! যে স্বামী বাইরে প্রেমিকার সাথে সময় কাটিয়ে ঘরে এসে স্ত্রীর সাথে দিব্যি সংসার করে সে কি আপন! সমাজে ঘটে যাওয়া প্রতিটা সংসারে, প্রতিটা সম্পর্কে এগুলো নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার এখন। আমরা জানি আমরা একে অন্যের অনেক আপন কিন্তু ঘটে যাওয়া ঘটনা অবাক করে দিয়ে উত্তর দিয়ে দেয় কে আসলে আপন। আপন হতে হলে মন লাগে। অন্তরের অন্তস্থলে একটা নরম মনুষ্যত্বের হৃদয় লাগে। যেটা আপনা থেকে আসবে, জোর করে আনতে হবেনা। হোকনা আমার কাছের মানুষগুলো কখনও আমার সাথে রূঢ়তায় মেতেছে কিন্তু তাই বলে আমি তার দুর্দিনে সরে থাকবো! হিসেব নিকেশ না হয় পরে হবে ভালোবাসার প্রকাশটা আগে হোক। সুখের দিন নয় দুঃখের দিনের সাথীই আগে হোক। তাই অধিকর খাটাতে কাছের না হয়ে মায়া ভালেবাসায় আপন হোন। কাছেরটাতো সৃষ্টিকর্তা করে দিয়েছেন। আর আপন হওয়ার জন্য হৃদয় দিয়ে দিয়েছেন। তাই হৃদয়ের মনুষ্যত্বকে জাগিয়ে আপন হওয়াটাই জরুরি। আপন মানুষই হতে পারে ভরসা, আপন মানুষই হতে পারে বেঁচে থাকার শক্তি।