লকডাউন শিথিলের উপায় খোঁজার তাগিদ বিশেষজ্ঞদের

| শুক্রবার , ৩০ এপ্রিল, ২০২১ at ৮:৪২ পূর্বাহ্ণ

জীবন রক্ষার লকডাউনে সফলতা মিললেও জীবিকা রক্ষার প্রয়োজনে তা শিথিলের পথ খোঁজার কথাও বলছেন বিশেষজ্ঞরা। প্রথমে ‘একগুচ্ছ’, পরে কঠোর বিধিনিষেধে দেশ প্রায় এক মাস ধরে অবরুদ্ধ অবস্থায়। এই লকডাউন ৫ মে পর্যন্ত বাড়ানোয় সংক্রমণ আরও কমার আশা করছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী, লকডাউন শুরুর দিন দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী ছিলেন এক লাখের বেশি। গত দুই সপ্তাহে তা ৩০ হাজার কমে বৃহস্পতিবার নেমে এসেছে ৭০ হাজারের ঘরে। খবর বিডিনিউজের।
লকডাউন শুরুর সময়ে সংক্রমণের যে ঊর্ধ্বগতি ছিল, তা এখন অনেক কমে এসেছে। গত ৭ এপ্রিল যেখানে রেকর্ড ৭ হাজার ৬২৬ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছিল। বৃহস্পতিবার তা নেমে এসেছে আড়াই হাজারের নিচে। দৈনিক শনাক্তের হার এক মাসের বেশি সময়ের পর নেমেছে ১০ শতাংশের নিচে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সর্বশেষ সাপ্তাহিক প্রতিবেদন বলছে, আগের চেয়ে বাংলাদেশে রোগী কমেছে ২৫ শতাংশ। তবে এই লকডাউন অনেককেই জীবিকার সঙ্কটে ফেলেছে। বাস বন্ধ থাকায় পরিবহনকর্মীরা বৃহস্পতিবার বিক্ষোভেও নেমেছেন। বিশেষজ্ঞরাও বুঝছেন, দীর্ঘদিন সব বন্ধ রেখে মানুষকে ঘরে আটকে রাখা যাবে না। আবার সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের বিকল্প উপায় বের না করে সব খুলে দিলে যে ঝুঁকি বাড়বে, ভারতের পরিস্থিতি দেখে তাও মনে করিয়ে দিচ্ছেন তারা।
সার্বিক পরিস্থিতিতে শতভাগ মাস্ক পরা, গণপরিবহনে চলাচলে বিশেষ পদক্ষেপ, দোকানপাট ও বিপণিবিতান পালা করে চালু, সংক্রমণ বেশি ছড়ায় এমন আবদ্ধ জায়গা বিধি-নিষেধের আওতায় রাখা এবং স্বাস্থ্যবিধিতে মেনে কম ঝুঁকিপূর্ণ স্থান স্বাভাবিক করে দেওয়ার মতো পরামর্শ এসেছে তাদের কথায়। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. লেলিন চৌধুরী সংক্রমণের গতিপ্রকৃতিতে লকডাউনের দৃশ্যমান প্রভাবকে ‘স্বাভাবিক’ বলে মনে করেন।
এর কারণ ব্যাখ্যায় তিনি বলেন, “যেসব জায়গা থেকে বেশি সংক্রমণ ছড়ায়, তার একটি হল গণপরিবহন। আরেকটি হচ্ছে আবদ্ধ জায়গা, যেমন- ব্যাংক, অফিস এবং ভিড়-জমায়েত হয়, এমন জায়গাগুলো। এ সময়ে অধিকাংশ জায়গা বন্ধ ছিল, যে কারণে করোনাভাইরাস শনাক্তের সংখ্যা কমে আসে লকডাউনের প্রভাবে। ‘এখন আমাদের দায়িত্ব হচ্ছে এটা ধরে রাখা এবং কমিয়ে আনার জন্য আরো পদক্ষেপ স্থির করা। সেটা করতে যদি আমরা সফল না হই, তাহলে আবার সংক্রমণ বেড়ে যাবে।’ এর মধ্যেই লকডাউন থেকে বেরিয়ে আসার পথ খুঁজতে বলেন হেলথ অ্যান্ড হোপ স্পেশালাইজড হাসপাতালের এই পরিচালক। তিনি বলেন, ‘লকডাউন দুই সপ্তাহ বাড়ানোর কথা আমরা বলছি না। আমরা বলি, লকডাউন থেকে বেরিয়ে আসার ধাপগুলো স্থির করা। মানে যে জায়গাগুলো থেকে সংক্রমণ বেশি ছড়ায়, সে জায়গাগুলো বিধি-নিষেধের আওতায় আনা। আবার যে জায়গাগুলোতে সংক্রমণ কম ছড়াবে, সেখানে বিধিনিষেধ কম দেওয়া। এরকম সমন্বিত একটি পরিকল্পনা নিতে হবে।’
ডা. লেনিন বলেন, ‘প্রতিটি জায়গাকে সেক্টর অনুযায়ী ভাগ করে সে অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেওয়া দরকার। এবং লকডাউন থেকে বেরিয়ে আসার ধাপগুলোকেও সুনির্দিষ্ট করা দরকার।’ লকডাউনের শুরুতে বিপণি বিতানসহ অন্যান্য দোকান বন্ধ ছিল। ‘জীবন-জীবিকার কথা বিবেচনা করে’২৫ এপ্রিল থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে এগুলো খোলার অনুমতি দেওয়া হয়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসাইফুদ্দিন কাদের চৌধুরীর ৬ষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকী পালিত
পরবর্তী নিবন্ধস্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের ৩৪১তম বোর্ড সভা অনুষ্ঠিত