ভবিষ্যতের মহামারী ঠেকাতে জীবাণুর ওষুধ প্রতিরোধী হয়ে ওঠার চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় পাঁচটি পদক্ষেপে জোর দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল বৃহস্পতিবার ‘হাই লেভেল ইন্টারেকটিভ ডায়লগ অন অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিসট্যান্স (এএমআর)’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে ধারণকৃত ভিডিও বার্তায় তিনি এই কথা বলেন। শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের এএমআর বিষয়ক ২০১৫ সালের বৈশ্বিক কর্মপরিকল্পনা, ২০১৬ সালে এএমআর বিষয়ক জাতিসংঘের রাজনৈতিক ঘোষণা এবং এএমআর সমস্যা মোকাবেলার জন্য জাতীয় কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করতে হবে। এএমআর বিষয়ক গ্লোবাল লিডার্স গ্রুপের কো-চেয়ার হিসেবে এ বিষয়ে অংশীজনদের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত থাকার কথাও বলেন সরকার প্রধান। খবর বিডিনিউজের।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বক্তব্যে অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিসট্যান্স মোকাবেলায় পাঁচটি পদক্ষেপের গুরুত্ব দেওয়ার কথা বলেন। সেগুলো হল- বিভিন্ন খাতের সমন্বয়ে একটি কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন, যেখানে নিম্ন এবং মধ্যম আয়ের দেশগুলোকে গুরুত্ব দিয়ে সম্মিলিত আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক কর্মপরিকল্পনাও অন্তর্ভুক্ত থাকবে। ভালো উৎপাদন, পরীক্ষাগার এবং নজরদারি কাঠামো প্রণয়ন। প্রয়োজনে প্রযুক্তি বিনিময় এবং মালিকানা ভাগাভাগির মাধ্যমে সাশ্রয়ী এবং কার্যকর অ্যান্টিবায়োটিকের সহজলভ্যতা নিশ্চিত করা। এএমআর নিয়ন্ত্রণে টেকসই অর্থায়ন এবং সদস্য দেশগুলোর মধ্যে রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি এবং সহযোগিতার মাধ্যমে এএমআর মোকাবেলায় বিশ্বব্যাপী জনসচেতনতা তৈরি।
বিশ্ব এখন কোভিড-১৯ মহামারীর ধ্বংসাত্মক রূপ দেখছে উল্লেখ করে ভবিষ্যতে অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিসট্যান্স সমস্যাও মারাত্মক হয়ে উঠতে পারে বলে জানান শেখ হাসিনা। এই বিপদ সময়মতো মোকাবেলা করতে ব্যর্থ হওয়ার ফলে মানবজীবন, প্রাণী এবং উদ্ভিদের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি ঘটবে। ডব্লিউএইচওর ধারণা মতে, ২০৫০ সালের মধ্যে এএমআরের কারণে ১০ মিলিয়ন মানুষ মারা যাবে এবং অর্থনৈতিক ক্ষয়ক্ষতি ট্রিলিয়ন ডলারে পৌঁছাবে, যা খাদ্য সুরক্ষা, এসডিজি ও সার্বজনীন স্বাস্থ্যের অর্জনকে বাধাগ্রস্ত করবে।
বাংলাদেশ সরকার ছয় বছর (২০১৭-২০২২) মেয়াদী অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিসট্যান্স কনটেইনমেন্ট- এআরসি সম্পর্কিত জাতীয় কৌশল এবং কর্মপরিকল্পনা তৈরি করেছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পাশাপাশি এআরসি সম্পর্কিত জাতীয় কারিগরি কমিটি এবং বাংলাদেশ এএমআর রেসপন্স অ্যালায়েন্স গঠিত হয়েছে। ডব্লিউএইচও এর শ্রেণিবিন্যাস নিশ্চিত করতে মানুষ ও প্রাণী উভয়ের স্বাস্থ্যের উপর নিয়মিত গবেষণাগারভিত্তিক এএমআর নজরদারি পরিচালানা করা হচ্ছে। একইভাবে ২০০৯ সাল থেকে আমরা ডব্লিউএইচওর গ্লাস প্ল্যাটফর্মকে এএমআর নজরদারি সংক্রান্ত তথ্যউপাত্ত সরবরাহ করে আসছি।