বাড়ছে জনসমাগম স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষিত

আজাদী প্রতিবেদন | মঙ্গলবার , ২৭ এপ্রিল, ২০২১ at ৫:৫১ পূর্বাহ্ণ

দ্বিতীয় দিনেও নগরীর দোকানপাট ও শপিংমলগুলোতে বাড়তি জনসমাগম দেখা গেছে। মাস্ক পরা কোনো রকম নিশ্চিত করা গলেও উপেক্ষিত ছিল সামাজিক দূরত্বসহ অন্যান্য স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালনের বিষয়টি। কিছু কিছু দোকানে ক্রেতাদের যেমন সামাজিক দূরত্ববিধি মানতে দেখা যায়নি তেমনি বিক্রেতারাও মানেননি স্বাস্থ্যবিধি। মাস্ক পরিধান না করেই তারা সেরেছেন বেচাবিক্রি। নগরজুড়ে জেলা প্রশাসনের ১১টি টিম ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করতে গেলে দেখে এমন চিত্র।
জেলা প্রশাসন জানায়, ৭টি শর্তে দোকানপাট ও শপিংমল খোলার অনুমতি দেয়া হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় গত রোববার থেকে ব্যবসায়ীরা সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত ব্যবসা করে আসছেন। নির্দেশনা গুলো হচ্ছে- ক্রেতা-বিক্রেতাদের আবশ্যিকভাবে মাস্ক পরিধান করতে হবে। দোকান বা শপিং মলের প্রবেশ পথে শরীরের তাপমাত্রা যাচাই করতে হবে। প্রবেশ পথে হাত স্যানিটাইজ করতে হবে। ফুটবাথ স্যানিটাইজার ম্যাথের মাধ্যমে পা জীবানুমুক্ত করতে হবে। ক্রেতা বিক্রেতাদের মধ্যে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। যেটির পরিধি হবে ন্যূনতম ৩ ফুট। অযথা ভিড় বা জনসমাগম করা যাবে না। দোকান শপিং মলে দূরত্ব নিশ্চিত করতে স্বল্পসংখ্যক ক্রেতা প্রবেশ করতে পারবেন।
স্বাস্থ্যবিধি মানার বিষয়টি দেখতে গতকাল সোমবার বিকাল তিনটা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত নগরীর হালিশহর ও পাহাড়তলী এলাকার দোকানপাট ও শপিং মলে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উমর ফারুক। তিনি আজাদীকে বলেন, মাস্ক ছাড়াই ক্রেতারা দোকানপাট ও শপিং মলে আসছেন। ক্রয় করছেন প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র। সবাই না, কিছু ক্রেতা ও বিক্রেতা স্বাস্থ্যবিধি লঙ্ঘন করেছেন। এছাড়া জনসমাগমও কিছুটা বাড়ছে। যদিও সকালের দিকে জনসমাগম কম ছিল।
উমর ফারুক বলেন, লোকজনকে আমরা সতর্ক করছি। দূরত্ববিধি মেনে কেনাকাটা করতে অনুপ্রাণিত করছি। প্রশাসনের পক্ষ থেকে বেঁধে দেওয়া ৭টি শর্ত তাদের স্মরণ করিয়ে দিচ্ছি। নগরীর আরেক গুরুত্বপূর্ণ এলাকা খুলশী, বায়েজিদ ও চান্দগাঁও। এ তিন এলাকায় গতকাল সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত অভিযান পরিচালনা করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মামনুন আহমেদ অনিক। তিনিও মাস্ক না পড়ে লোকজনকে কেনাকাটা করতে দেখেছেন। এছাড়া দূরত্ববিধি না মানার বিষয়টিও তার নজরে পড়ে। গতকাল রাতে তিনি আজাদীকে বলেন, জনসমাগম প্রথম দিনের তুলনায় দ্বিতীয় দিন বাড়তি ছিল। সন্ধ্যা হলে সেটি আরও বেড়ে যাচ্ছে। সামাজিক দূরত্ববিধি সেভাবে মানানো যাচ্ছে না।
মাস্ক ছাড়াই বেচাবিক্রি করার বিষয়টি নজরে পড়েছে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মিজানুর রহমানেরও। ডবলমুরিং, কোতোয়ালী ও সদরঘাট এলাকায় অভিযান পরিচালনা করতে গিয়ে তিনি বিষয়টি দেখতে পান। তিনি বলেন, কিছু মানুষ মাস্ক ছাড়াই বাসা থেকে বের হয়ে কেনাকাটা করতে চলে আসছেন। আর কিছু মানুষ মাস্ক পকেটে রেখে দিয়েছেন। পরে তাদের সর্তক করেছি এবং কেনাকাটা করতে গেলে মাস্ক পরিধান করতে নির্দেশ দিয়েছি।
পাহাড়তলী, হালিশহর ও আকবরশাহ এলাকায় সকাল থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেছেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আলী হাসান। মাস্ক না পরে কেনাকাটা করতে আসা, কাপড় বিক্রি করা, সাইকেল বিক্রি করার পাশাপাশি কোচিং সেন্টার খোলা রাখার অভিযোগও পেয়েছেন তিনি। তিনি বলেন, হালিশহর এলাকার পাঞ্জেরি নামের একটি কোচিং সেন্টার খোলা রাখা হয়েছে এমন অভিযোগ পেয়ে সেখানে অভিযান চালানো হয়েছে। কিন্তু কোনো ছাত্রছাত্রী পাওয়া যায়নি। এরপরও উক্ত কোচিং সেন্টারের মালিককে সতর্ক করেছি। তিনিও কথা দিয়েছেন কোচিং সেন্টার খুলবে না।
সবমিলিয়ে গতকাল সকাল থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত নগরজুড়ে জেলা প্রশাসনের ১১টি টিম অভিযান পরিচালনা করেছে। এসব অভিযানে ১২টি মামলায় বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে ২ হাজার ৬০০ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। মাস্ক না পরে কেনাকাটা করতে আসা এবং মাস্ক না পরে ব্যবসা পরিচালনা করার অপরাধে এসব জরিমানা করা হয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধআট বছরেও গতি পেল না পানগাঁও টার্মিনাল
পরবর্তী নিবন্ধঈদ জামাত শুধু মসজিদে, করা যাবে না কোলাকুলি