কওমি মাদ্রাসার ছাত্র ও শিক্ষকদের সব ধরনের রাজনীতি থেকে ‘মুক্ত’ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা জানিয়েছে মাদ্রাসাগুলোর নীতি নির্ধারণী বোর্ড আল হাইআতুল উলয়া লিল জামি’আতিল কওমিয়া বাংলাদেশ। ধর্মভিত্তিক সংগঠন হেফাজতে ইসলামের সহিংসতা ঘিরে চলমান পরিস্থিতির মধ্যে গতকাল রোববার যাত্রাবাড়ীর জামিয়া ইসলামিয়া দারুল উলুম মাদানিয়া মাদ্রাসায় বোর্ডের স্থায়ী কমিটির সভায় এই সিদ্ধান্ত হয় বলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। খবর বিডিনিউজের।
সরকার স্বীকৃত নিয়ন্ত্রক বোর্ড আল হাইআতুল উলয়া লিল জামি’আতিল কওমিয়া বাংলাদেশের অধীনে কওমি মাদ্রাসাগুলোর ছয়টি বোর্ড রয়েছে। সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে, কওমি মাদ্রাসাগুলোর সব বিষয়ে সিদ্ধান্ত ও পদক্ষেপ ও নেবে শুধু আল-হাইআতুল উলয়া। সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কওমি মাদ্রাসার ছাত্র ও শিক্ষক প্রচলিত সর্বপ্রকার রাজনীতি থেকে মুক্ত থাকবে মর্মে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়েছে। একই সঙ্গে সভায় কওমি মাদ্রাসার বিষয়ে অন্য কারও সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুযোগ বন্ধ করা হয়েছে। এই বোর্ডের অধীন এক বা একাধিক বোর্ড কিংবা কোনো সংগঠন বা ব্যক্তি আল-হাইআতুল উলয়ার সিদ্ধান্ত ছাড়া পৃথকভাবে কওমি মাদ্রাসার বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত বা পদক্ষেপ নিতে পারবে না।
মার্চে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর সময় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সফরের বিরোধিতায় কওমি মাদ্রাসাভিত্তিক সংগঠন হেফাজতে ইসলামের বিক্ষোভ কর্মসূচি ও হরতালকে কেন্দ্র করে দেশজুড়ে ব্যাপক সহিংসতা ও তাণ্ডব চালানো হয়। সে সময় পুলিশের সাথে সংঘাতে প্রাণহানিও হয়। ২০১৩ সালে ঢাকা অবরোধ কর্মসূচিতে মতিঝিলের শাপলা চত্বরসহ রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে তাণ্ডব চালানো এ সংগঠনের নেতারা এবার ‘রাজনৈতিক অভিলাস নিয়ে মাদ্রাসা ছাত্রদের উসকানি দিয়ে’ মাঠে নামিয়েছিল বলে পুলিশের ভাষ্য।
গত কয়েকদিনে হেফাজতে ইসলামের বেশ কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতাকে নাশকতা ও সহিংসতার মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে, যারা বিভিন্ন কওমি মাদ্রাসার সঙ্গে যুক্ত এবং বিভিন্ন ধর্মভিত্তিক সংগঠনের নেতৃস্থানীয় পদে রয়েছেন। এই প্রেক্ষাপটে গতকাল বোর্ডগুলোর নিয়ন্ত্রক সংস্থা আল হাইআতুল উলয়া লিল জামি’আতিল কওমিয়া বাংলাদেশ সভা করে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের রাজনীতি থেকে দূরে রাখার সিদ্ধান্ত জানাল।
বোর্ডের অফিস সম্পাদক অছিউর রহমান স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, চলমান অস্থিরতা থেকে এই ‘শিক্ষাব্যবস্থার সুরক্ষা’ এবং আলেমদের ‘মান বজায় রেখে’ স্বাভাবিক অবস্থায় ‘দ্বীনি কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার’ সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরির উদ্যোগ নিতে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।












