প্রেমের ফাঁদে ফেলে দীর্ঘদিন ধরে লোকজনকে প্রতারিত করে অর্থ হাতিয়ে আসছিলেন কথিত সাংবাদিক ও দুই নারীসহ একটি প্রতারক চক্র। চক্রটির প্রধান নিজেকে সাংবাদিক পরিচয়ে বাসা ভাড়া নিয়ে সেখানেই লোকজনকে ফাঁদে ফেলার অপকর্মে লিপ্ত ছিলেন তারা। অবশেষে বৃহস্পতিবার ভোরে পাহাড়তলী একতা আবাসিকের একটি বাসা থেকে চক্রটির তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করে পাহাড়তলী থানা পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- মাসুদ রানা (৩৫), লক্ষ্মী রাণী দাশ (৩৪) ও নার্গিস আক্তার (২১)। গ্রেপ্তার মাসুদ নিজেকে ‘সিটিজি ক্রাইম টিভি’ নামে একটি অনলাইন টেলিভিশন এবং ‘ভোরের জানালা’ নামে একটি পত্রিকার সাংবাদিক হিসেবে পরিচয় দেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (পশ্চিম) পলাশ কান্তি নাথ বলেন, আটক মাসুদ রানা সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে একতা আবাসিকের বাসাটি ভাড়া নেন। লক্ষ্মী রাণী ও নার্গিস নামের ওই দুই নারী মাসুদের সহযোগী। তারা দুই যুবকের সঙ্গে টেলিফোনে প্রেমের ফাঁদ পাতেন। বুধবার দিবাগত রাতে দুই যুবককে ওই বাসায় নিয়ে আসেন। ওই বাসায় প্রবেশের পর মাসুদ ও লক্ষ্মী নিজেদের পুলিশ পরিচয় দিয়ে তাদের গায়ের কাপড় খুলে ফেলেন এবং নার্গিসের সাথে আপত্তিকর ছবি তুলতে বলে ভিডিও ধারণ শুরু করেন। ওই সময় দুই যুবকের কাছ থেকে এক লাখ টাকা দাবি করেন। টাকা না দিলে পুলিশে ধরিয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়। এসময় দুই যুবক নিজেদের ছাড়িয়ে নিয়ে পাশের বাসায় কলিং বেল বাজান। বাড়িওয়ালা দরজা খুলে তাদের বিবস্ত্র অবস্থায় দেখে পুলিশকে খবর দেন। এরপর পুলিশ গিয়ে তিনজনকে গ্রেপ্তার করে। এসময় মাসুদের বাসা থেকে একটি খেলনা পিস্তল, দুটি ছুরি ও ২৪ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়।
অন্যদিকে ইপিজেড থানার আকমল আলী রোডের খালপাড় এলাকায় দোকানিদের কাছ থেকে চাঁদাবাজি করার সময় বুধবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে সোহাগ সরদার (৩৭) নামে আরেক কথিত সাংবাদিককে হাতেনাতে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গ্রেপ্তারের সময় তার কাছ থেকে চাঁদাবাজির ৪ হাজার ২৫০ টাকা উদ্ধার করে পুলিশ। তিনি নিজেকে ‘দৈনিক সংবাদে আমরা’ নামক একটি ভূঁইফোড় অনলাইন পোর্টালের বিশেষ প্রতিনিধি পরিচয় দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন ব্যবসায়ীকে হয়রানি করে আসছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
ইপিজেড থানার ওসি উৎপল বড়ুয়া বলেন, ‘লকডাউনে দোকান খোলা রাখলে তাকে চাঁদা দিতে হবে। চাঁদা না দিলে পত্রিকায় নিউজ করার হুমকি দিতেন সোহাগ। এক পর্যায়ে চাঁদা নিতে আসলে বুধবার রাতে তাকে হাতেনাতে আটক করে পুলিশে খবর দেন। এরপর থানার একটি টিম গিয়ে তাকে আটক করে। এ ঘটনায় আকমল আলী রোড এলাকার এক ব্যবসায়ী বাদী হয়ে তার বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করেছে। ওই মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।