অজানা ভাইরাসে মরছে মাছ

মীরসরাইয়ে চাষিরা হতাশ

মীরসরাই প্রতিনিধি | বৃহস্পতিবার , ২২ এপ্রিল, ২০২১ at ১০:২৮ পূর্বাহ্ণ

গত বছরের করোনাকালীন ক্ষতি পোষানোর আগে আবারো লোকসানে পড়েছেন মীরসরাইয়ের মাছচাষিরা। চলতি লকডাউন যেন তাদের কাছে ‘মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা’ হয়ে এসেছে। ফলে উপজেলার মুহুরি মৎস্য প্রকল্পের চাষিদের দিন কাটছে চরম হতাশায়। ফিডের মূল্য বৃদ্ধি, অজানা ভাইরাসে মাছ মরে যাওয়া, মাছের ন্যায্য মূল্য না পাওয়া, খাদ্য, পরিবহন ও শ্রমিক সঙ্কটের কারণে নির্দিষ্ট সময়ে মাছ সরবরাহ করতে না পেরে ক্ষতির শিকার হচ্ছেন এখনকার ছোট বড় প্রায় দুই হাজার মাছচাষি। এছাড়া উপজেলাজুড়ে রয়েছে আরো ১৩ শ’ মাছচাষি।
স্থানীয় সূত্র জানায়, চট্টগ্রাম জেলার প্রায় ৭৫ ভাগ মাছের চাহিদা পূরণ করা হয় মুহুরি চরের কয়েক হাজার মাছের ঘের থেকে। একসময় যেসব যুবকের বেকার দিন কাটতেন তারা এখন বাণিজ্যিকভাবে মাছ চাষ করে প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন। এভাবে মৎস্য চাষের মাধ্যমে বদলে গেছে শত শত বেকার যুবকের ভাগ্য। মুখে হাসি ফুটেছে অন্তত ২০ হাজার মানুষের।
উপজেলার ধুম, ওসমানপুর, ইছাখালী, মঘাদিয়া ও সাহেরখালী ইউনিয়নে এসব মৎস্য প্রকল্প রয়েছে। এছাড়া উপজেলার দুটি পৌরসভা ও ১৬ ইউনিয়নে বিভিন্ন প্রকল্প ও পুকুরে মাছ চাষ হচ্ছে।
স্থানীয় একাধিক মাছচাষি জানান, গত বছর লকডাউনের সময় মাছের দাম পড়ে যাওয়ার পর আর বাড়েনি। তার ওপর প্রতি কেজি ফিডের দাম প্রকারভেদে ৭-১০ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়া অজানা ভাইরাসে লাখ লাখ টাকার মাছ মরে যাচ্ছে। সঠিক রোগ নির্ণয় সম্ভব হচ্ছে না। তার ওপর আবারো সরকার ঘোষিত লকডাউনের কারণে বেচাকেনা একেবারে কমে গেছে।
মাছচাষি আনোয়ার হোসেন বলেন, হঠাৎ করে বাজারে ফিশ ফিডের দাম বেড়ে গেছে। এক মাস আগে ক্রিস্ট্যাটার আইটেমের ফিশ ফিডের দাম ছিল টনপ্রতি ৬৮ হাজার টাকা। এখন তা বিক্রি হচ্ছে ৮০ হাজার টাকায়। গ্রোয়ার আইটেমের ফিশ ফিডের দাম ছিল টনপ্রতি ৫৫ হাজার টাকা। সেটি বেড়ে হয়েছে ৫৭ হাজার ৫০০ টাকা। প্রায় ২০ আইটেমের ফিশ ফিডের প্রতিটিরই দাম বেড়েছে।
মীরসরাই উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা নাসিম আল মাহমুদ বলেন, করোনার প্রভাবে বাজারে সাধারণ ক্রেতা সমাগম না থাকায় তার প্রভাব খুচরা বাজার থেকে আড়ত ও মৎস্য প্রকল্পগুলোতে পড়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে সব ঠিক হয়ে যাবে। তিনি আরো বলেন, পোল্ট্রি ও ডেইরিতে সহজে রোগ নির্ণয় করে যেভাবে চিকিৎসা দেয়া যায় মাছের ক্ষেত্রে তা সম্ভব হয় না। তাই মাছ রোগে আক্রান্ত হওয়ার আগে চাষিদের সতর্ক থাকা প্রয়োজন। এছাড়া আমাদের লোকবল সঙ্কটের কারণে এবং উপজেলায় পরীক্ষার জন্য ল্যাব না থাকায় সহজে রোগ নির্ণয় সম্ভব হচ্ছে না।

পূর্ববর্তী নিবন্ধচাহিবামাত্র চিকিৎসকদের আইডি কার্ড দেখাতে বলেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর
পরবর্তী নিবন্ধহেফাজতের আরও ২ নেতা গ্রেপ্তার