এটি একটি মান্ধাতা আমলের মতবাদ, যেখানে বলা হয় দরিদ্র মানুষ একটি চক্রে আবদ্ধ হয়ে গিয়েছে। যেখানে আয় নাই, সঞ্চয় নাই, বিনিয়োগ নাই, কর্মসংস্থান নাই ফলে মানুষের অবস্থা দারিদ্র্যতা থেকে দারিদ্র্যতার মধ্যেই থাকছে। শৃংখলে বাঁধা এক বন্দিত্ব।এই তত্ত্ব বিশ্বাস করলে, তাহলে তো মানুষের জীবনে এবং রাষ্ট্রীয় ক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধি হওয়ার কথা না। কিন’ বাংলাদেশের উদাহরণ যদি দেই, নব্বইয়ের দশকের যেখানে দারিদ্র্যের হার ষাটের কাছাকাছি ছিল, সেটা এখন বিশের নিচে নেমে এসেছে। তাহলে চক্র কি ভাঙ্গলো না? নারকসের মতে, A country is poor because it is poor। সংযুক্ত আরব আমিরাত মাত্র তিন চার দশক আগেও জেলেদের দেশ ছিল। চলমান করোনা মহামারিতে দেশে মোট শ্রমশক্তির তিন শতাংশেরও বেশি লোক কর্ম হারিয়েছেন এবং প্রায় দেড় কোটি মানুষ মহামারির প্রভাবে নতুন করে দরিদ্র হয়েছেন।এক গবেষণার প্রতিবেদনে(সিপিডি)থেকে জানা গেছে, চাকরি হারানোদের মধ্যে ছয় দশমিক সাত শতাংশ শহরাঞ্চলে অপ্রাতিষ্ঠানিক কর্মে নিয়োজিত ছিলেন এবং ২০২১ সাল শেষ হতে হতে ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোগের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের সর্বোচ্চ সংখ্যক কর্মহীন হওয়ার সম্ভাবনা আছে।বর্তমানে মানুষ দারিদ্র চক্রের চাইতে বড় চক্র হল ‘রাজনৈতিক’ ও ‘প্রাকৃতিক’ চক্র। সম্ভাবনাময় অনেক রাষ্ট্রের অগ্রযাত্রার বড় বাধা রাজনৈতিক চক্র। সবকিছু স’বির করে রেখেছে রাজনীতি। আবার বাংলাদেশের মত রাষ্ট্রের উন্নয়নের একটি বড় সমস্যার প্রাকৃতিক দুর্যোগের চক্র। হয় ঘূর্ণিঝড়, নয় বন্যা, নয়ত করোনা। আজ থেকে দু/একশ বছর আগে দারিদ্র্যের দুষ্টচক্র ধারণাটি বাস্তব হলেও এখন তেমন প্রাসঙ্গিক নয়।
তারেক আল মুনতাছির, শিক্ষার্থী, বিজ্ঞান বিভাগ ওমরগণি এম.ই.এস কলেজ,চট্টগ্রাম।