রাঙ্গুনিয়ার সরফভাটায় ৫ মামলার আসামি মো. মফিজকে হত্যার ৮ দিনেও আসামি গ্রেফতার না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা। জানা গেছে, ঘটনার পর থেকে পাল্টা খুনের আশংকায় পালিয়ে বেড়াচ্ছে প্রতিপক্ষের লোকজন। অন্যদিকে আতঙ্কে পুরুষ শূন্য হয়ে পড়েছে স্থানীয় গঞ্জম আলী সরকার বাড়ির ৭/৮টি পরিবার। পুলিশ জানায়, গত ৯ এপ্রিল দুপুরে প্রতিপক্ষ সন্ত্রাসী তোফায়েল (৪২) ও কামালের (৪১) নেতৃত্বে একদল যুবক মো. মফিজকে গুলি করে হত্যা করে। এ ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় তোফায়েল ও কামালসহ চিহ্নিত পাঁচজন এবং অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামি করা হয়। সন্ত্রাসী তোফায়েল ও কামাল একই এলাকার আবুল কালাম প্রকাশ আবুইল্ল্যার ছেলে। অভিযোগ রয়েছে, এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে তোফায়েল-কামাল গ্রুপের সাথে মফিজ গ্রুপের সংঘর্ষে ইতিপূর্বে উভয়পক্ষের ৬ জন মানুষ খুন হয়েছেন। এবার মফিজ হত্যাকাণ্ডের পর এলাকার মানুষের মাঝে নতুন করে আতঙ্ক কাজ করছে। ফের পাল্টা খুনের আশঙ্কা করছেন তারা।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্র জানায়, মফিজ হত্যা মামলার প্রধান দুই আসামি তোফায়েল ও কামালের বিরুদ্ধে হত্যা, চুরিসহ ডজনখানেক মামলা রয়েছে। ২০১১ সালে কামাল তার মামী জাহানারা আক্তারকে খুন করেন। ওই মামলায় তিনি ৭ বছর পালিয়ে ছিলেন। ২০১৮ সালে একবার গ্রেফতার হন তিনি। পরে জামিনে বেরিয়ে আবারও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েন।
কামাল, তোফায়েল ও তার ভাই ওসমান গ্রুপের বিরুদ্ধে ২০১৫ সালে মফিজের বড় ভাই প্রবাসী মো. ইদ্রিছ (৫৫), ২০১৬ সালে আবুল কাশেম (৪০) ও মঞ্জুকে হত্যার অভিযোগ রয়েছে। ২০১৯ সালের জুলাই মাসে অস্ত্রসহ গ্রেফতার হয়েছিলেন তোফায়েল। পরে জেল থেকে বেরিয়ে আবারও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েন তিনি। সর্বশেষ এই দুজনের হাতে খুন হন মফিজ। অপরদিকে মফিজ গ্রুপের বিরুদ্ধে তোফায়েল ও কামালের বড় ভাই উকিল আহমদকে (৫৪) হত্যার অভিযোগ রয়েছে। স্থানীয় সিএনজি অটোরিকশা চালক আবদুল করিম জানান, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে কয়েকবছর ধরে মধ্যম ও জঙ্গল সরফভাটা এলাকায় সন্ত্রাসীরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। তারা পাহাড়ে অবস্থান করে এলাকার মানুষের কাছ থেকে নিয়মিত চাঁদা আদায় করে। এছাড়াও জড়িত রয়েছে নানা অপরাধে। এই ধরনের কয়েকটি সন্ত্রাসী গ্রুপের কাছে জিম্মি হয়ে আছে এলাকার মানুষ। সন্ত্রাসীরা অপরাধ করেই পাশের পাহাড়ে পালিয়ে যায়। অবস্থান নেয় বোয়ালখালী ও পটিয়া উপজেলায়। সরফভাটা ইউপি চেয়ারম্যান শেখ ফরিদ উদ্দিন চৌধুরী বলেন, হত্যাকারীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনতে হবে। তারা যাতে কোনোভাবে পার না পায়, সে ব্যাপারে লক্ষ্য রাখতে হবে। রাঙ্গুনিয়া থানার ওসি মাহবুব মিল্কী বলেন, আসামিদের গ্রেপ্তারে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালানো হচ্ছে। এলাকায় শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশি টহল অব্যাহত রয়েছে।