বাঙালি জাতিসত্তার মানুষের কাছে বাংলা নববর্ষ একটি প্রাণের উৎসব। সমগ্র বিশ্বে যত বাঙালি রয়েছে সকলেই খুব সাড়ম্বরে ১ লা বৈশাখের এই উৎসবটি পালন করে। আর বাংলাদেশের মানুষেরা বেশ আনন্দ আয়োজন করে এই উৎসবটি পালন করে প্রতিবছর। গ্রামে গ্রামে বিভিন্ন স্থানে দেশীয় জিনিস পত্রের মেলা বসে।দোকানিরা হাল খাতার উৎসব করে। মায়েরা বিন্নি ধানের খই এর নাড়ু তৈরী করে। মুড়ি মুড়কি কত কি তৈরি করে এ বাড়ি ও বাড়ি বিতরণ করে। বছরের শেষদিন চৈত্র সংক্রান্তির মেলা বসে গ্রামের বিভিন্ন জায়গায়। বাড়িতে ঘটা করে পাঁচন রান্না করে। গানে গানে বর্ষকে বিদায় এবং বরণ করা হয়। বাংলা একাডেমী এবং বিভিন্ন সাহিত্য সংগঠন থেকে বর্ণিল সাজে আলপনা আঁকা হয় বিশাল রাস্তা জুড়ে। বর্ণিল মুকোশে কিংবা বিভিন্ন প্রতিকৃতির সাজে বের হয় নববর্ষ বরণের মিছিল। আহা! কি আনন্দ উৎসবে কাটে সারাবেলা। কিন্ত ভয়াবহ মহামারী কোভিট ১৯ এর বৈরী পরিস্থিতিতে গত বছরও আমরা অনেকটা অনাড়ম্বর পরিবেশে এই উৎসবটি পালন করেছি ঘরে থেকে। ভেবেছিলাম এই বছর দ্বিগুণ উৎসাহ উদ্দীপনার মাধ্যমে আমরা নববর্ষ পালন করতে সক্ষম হবো। কিন্তু বিধি বাম। আবারও বিশ্বজুড়ে এই দুষ্ট মহামারীর ভয়াবহ তাণ্ডব চলছে। তাই এবছরও আমাদের বর্ণহীন উৎসববিহীন অনাড়ম্বরভাবেই এই উৎসবটি পালন করতে হবে। সব উৎসব আয়োজন বন্ধ রাখতে সরকারের নির্দেশ রয়েছে। স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলার পরামর্শ সকলের প্রতি। ঘরে থেকে নিরাপদে থেকে আমরা নতুন বছরকে বরণ করে নেব। পুরো পৃথিবী আজ অসুস্থ। ভয়ে ঘুটিয়ে আছে প্রাণ। কোটি কোটি মানুষের একটিই প্রার্থনা সুস্থ হয়ে উঠুক পৃথিবীর পরিবেশ। সহজ স্বাভাবিকতা ফিরে আসুক বিশ্বজুড়ে। নববর্ষের নতুন সকালে নির্মল চিত্তে প্রার্থনা জানাই : ক্ষমা করো প্রভু যত পাপতাপ, তুমি মুছে দাও পৃথিবীর মানুষের উপর যত অভিশাপ। নতুন বছর সকলের জীবনে/ বয়ে আনুক অনন্ত সুন্দরের জয়গান।