কক্সবাজারে বিশাল তিমি দেখতে বিশাল ঢল

কক্সবাজার প্রতিনিধি | শুক্রবার , ৯ এপ্রিল, ২০২১ at ৮:৩৬ অপরাহ্ণ

পৃথিবীর সবচেয়ে বড় প্রাণী নীল তিমির ছবির সাথে প্রায় সকলেই পরিচিত হলেও বাস্তবে মাছটি দেখেছেন খুব কম মানুষই। এমনকি সমুদ্র উপকূলীয় জেলা কক্সবাজারের মানুষও কদাচিৎ দেখে থাকেন মাছটি। তাই আজ শুক্রবার (৯ এপ্রিল) দুপুরে কক্সবাজারের হিমছড়ি সৈকতে একটি মরা তিমি ভেসে আসার খবরে সেখানে হাজার হাজার উৎসুক মানুষের ঢল নামে।
এর আগে ১৯৯০ সালে শহরের লাবণী পয়েন্ট সৈকতে ভেসে এসেছিল একটি মরা তিমি।
আজ শুক্রবার (৯ এপ্রিল) দুপুরে সামুদ্রিক জোয়ারের সাথে ৪৪ ফুট দীর্ঘ মরা পচা নীল তিমিটি ভেসে আসার পর ঘটনাটি স্থানীয়দের নজরে আসে।
ধীরে ধীরে সেখানে উৎসুক মানুষের ভিড় জমে। পরে মিডিয়া ও ফেসবুকের মাধ্যমে খবরটি চারিদিকে ছড়িয়ে পড়লে কক্সবাজার শহর, রামু, উখিয়া, এমনকি চকরিয়া থেকেও উৎসুক মানুষ হিমছড়ি সৈকতে এসে হাজির হয়।
খবর পেয়ে জেলা প্রশাসন, পরিবেশ অধিদপ্তর, বনবিভাগ, র‌্যাব, পুলিশ, বিজিবি ও কোস্টগার্ডের উর্ধতন কর্মকর্তারা ছাড়াও বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইন্সটিটিউট ও বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইন্সটিটিউটের বিজ্ঞানীরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন।
পরে জেলা প্রাণী সম্পদ বিভাগের একদল কর্মকর্তা-কর্মচারীও মরা তিমিটির ময়নাতদন্তের জন্য ঘটনাস্থলে আসেন। তবে সন্ধ্যা ৭টায় এ প্রতিবেদন লেখার সময় পর্যন্ত মরা তিমিটিকে পৌরসভার ট্রাকের সাথে বেঁধে সৈকত থেকে টেনে তীরে তোলার চেষ্টা করা হচ্ছিল।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইন্সটিটিউটের সিনিয়র বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও পিএইচডি ফেলো মোহাম্মদ আশরাফুল হক মরা প্রাণীটিকে ব্রাইড হোয়েল (Bride Whale) বা বর তিমি বলে শনাক্ত করছেন। মরা তিমিটি প্রাপ্তবয়স্ক বলেও জানান তিনি।
বিজ্ঞানী আশরাফ আরো জানান, নীল তিমি গ্রুপের একটি প্রজাতি হলো ব্রাইড হোয়েল বা বর তিমি। এটি আমাদের বঙ্গোপসাগরেরই বাসিন্দা।
নীল তিমিটি আরো অন্তত ১০/১২ দিন আগে মারা গেছে বলে ধারণা বিজ্ঞানী আশরাফের তবে কী কারণে এই তিমিটি মারা গেছে তা ময়নাতদন্তের পরই জানা যাবে বলে জানান তিনি।
তিনি জানান, মরা তিমিটি দৈর্ঘে ৪৪ ফুট এবং প্রস্থে (গোলাকার মাপ) ২৬ ফুট।
শিক্ষা ও গবেষণার উদ্দেশ্যে এই মরা নীল তিমিটির কঙ্কাল সংরক্ষণ করা উচিৎ বলে মনে করছেন সাংবাদিক ও পরিবেশবাদী আহমদ গিয়াস।
সামুদ্রিক মৎস্য বিজ্ঞানী ড. ম কবীর আহমেদ জানান, এর আগে ১৯৯০ সালের এই সময়ে শহরের লাবণী পয়েন্ট সৈকতে ভেসে এসেছিল একটি মরা নীল তিমি যেটি ছিল আকারে আরো বড়। প্রায় ৬৫ ফুট। সেই তিমির কঙ্কাল সংরক্ষণ করা হয়েছিল।
উল্লেখ্য, গত বছরের জুনে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের পূর্ব মেদেনিপুরস্থ বঙ্গোপসাগর উপকূলে ৩৫ ফুট দীর্ঘ একটি মরা তিমি ভেসে আসে বলে কলকাতার গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধরাঙামাটি পৌঁছেছে করোনা ভ্যাকসিনের দ্বিতীয় চালান
পরবর্তী নিবন্ধহালিশহর ‘এ’ ব্লকে গৃহবধূর আত্মহত্যা