হেফাজত নেতা মামুনুলের পক্ষ নিয়ে কাপ্তাইয়ে এক নেতাকে অব্যাহতি দানের ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই রাঙামাটি শহরের আরেক ছাত্রলীগ নেতাও পদ হারালেন। গতকাল বৃহস্পতিবার রাঙামাটি পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি এইচএম আলাউদ্দিন এবং সাধারণ সম্পাদক অপুশ্রীং লেপসা স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়েছে। অব্যাহতিপ্রাপ্ত আবীর হাসান রাঙামাটি পৌর ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘শৃংখলা পরিপন্থি কার্যকলাপে জড়িত থাকায় পৌর ছাত্রলীগ থেকে তাকে স্থগিত করা হল। যদি সে কোনো অন্যায় কাজ করে থাকে, তবে তার দায় পৌর ছাত্রলীগ নেবে না।’ রাঙামাটি পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি এইচএম আলাউদ্দিন বলেন, আবীর এতদিন ছাত্রলীগ করত, এটাই আমাদের জন্য লজ্জার ও কষ্টের। খবর বিডিনিউজের। রিজার্ভবাজার এলাকার এক বড় ভাইদের অনুরোধে আবীরকে দলের কমিটিতে রেখেছিলেন জানিয়ে তিনি বলেন, সে (আবীর) সংগঠনের কোনো কর্মসূচিতেও আসত না। তারপর একের পর এক সরকার ও দেশ বিরোধী স্ট্যাটাস, হেফাজত-মামুনুল-আজহারীর পক্ষে লেখালেখি, সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে স্ট্যাটাস দিচ্ছিল সে। ছাত্রলীগ নেতা হয়েও এই ধরণের লেখালেখির কারণে আমরা বিব্রত। তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক পদক্ষেপের অংশ হিসেবে সাংগঠনিক সম্পাদক পদ থেকে অব্যাহতি দিয়ে সংগঠন থেকে বহিষ্কারের জন্য জেলা কমিটিকে সুপারিশ করেছেন বলেন তিনি। এদিকে, মামুনুল হকের পক্ষ নিয়ে ‘স্ট্যাটাস’ দেওয়ার কথা স্বীকার করে আবীর হাসান দাবি বলেন, মামুনুল হকের সাথে যেটি হয়েছে আমি তার প্রতিবাদ জানিয়েছি। আমি তো কারো বিরুদ্ধে কিছু বলিনি। তবে কয়েকটি স্ট্যাটাসের জন্য তিনি ‘অনুতপ্ত’ বলেও জানান। আবির হাসান বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডে মিটার রিডার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তবে রাঙামাটি বিদ্যুৎ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সবুজ কান্তি মজুমদার জানিয়েছেন, আবীরের বিরুদ্ধে আগেই তারা কিছু অভিযোগ পেয়েছেন। তাই গতমাসেই তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। সে আমাদের এখানে অস্থায়ীভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত ছিল, এখন আর নেই।
আবীর হাসানের ফেইসবুক পোস্টে গিয়ে দেখা যায়, তিনি দীর্ঘদিন ধরেই সরকার ও দেশবিরোধী নানান স্ট্যাটাস, হেফাজত নেতা মামুনুল হকের পক্ষে অবস্থান, সাংবাদিকদের বিষোদগার করে আসছিলেন। রাঙামাটি জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক প্রকাশ চাকমা বলেছেন, যে হেফাজত দেশের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে জাতির জনকের ছবি-মুর্যাল ভাংচুরসহ জঘন্য সাম্প্রদায়িক উস্কানিমূলক কাজ করেছে, তাদের পক্ষে যে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীই অবস্থান নিক না কেন, আমরা তার বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক পদক্ষেপ নেব। এর আগে গত বুধবার একই অভিযোগে কাপ্তাই উপজেলার কাপ্তাই ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ওমর ফারুককে বহিষ্কার করেছে কাপ্তাই উপজেলা ছাত্রলীগ।