নগরীর মুরাদপুর এলাকা থেকে সাধারণত ইপিজেড যেতে সময় লাগে এক ঘণ্টার মতো। প্রতিদিনের মতো আজ বৃহস্পতিবারও (১ এপ্রিল) সময়মতো কাজে যাওয়ার উদ্দেশ্যে বেরিয়ে রাস্তায় এসে এক ঘণ্টারও বেশি সময় দাঁড়িয়ে থেকেও আফরোজা বেগম নামে এক পোশাককর্মী উঠতে পারেননি কোনো গাড়িতে। বাংলানিউজ
ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, “আমাদের স্বল্প আয়। এতেই সংসার চালাতে হয় কিন্তু বাড়তি ভাড়া দিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে তাও মেনে নিয়েছি কিন্তু সময়মতো গাড়ি না পেলে চাকরি তো আর থাকবে না। ঘণ্টাখানেক দাঁড়িয়ে আছি, কোনো গাড়িই যাত্রী নিচ্ছে না। হঠাৎ করে কোনো গাড়িতে এক-দুইজন যাত্রী তোলে, এতে উঠতে রীতিমতো যুদ্ধ করতে হয়। ভোগান্তির শেষ নেই।”
শুধু আফরোজা বেগম নন, এমন ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে গণপরিবহনের যাত্রীদের। ঘণ্টার পর ঘন্টা দাঁড়িয়ে থেকেও গন্তব্যে পৌঁছাতে পারছেন না তারা।
আজ বৃহস্পতিবার (১ এপ্রিল) নগরীর বিভিন্ন বাস স্টপেজ ঘুরে দেখা যায় এমন দৃশ্য।
ভোগান্তির শিকার যাত্রীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ভবিষ্যৎ চিন্তা না করে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়ার মাশুল গুণতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। বাসা থেকে বের হলেই যেন পদে পদে ভোগান্তি। গণপরিবহণে যাত্রী না নেওয়ায় বাধ্য হয়ে রিকশা নিতে হচ্ছে। এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে অতিরিক্ত ভাড়া চেয়ে বসছে রিকশা চালকরাও। সড়কে এমন বিশৃঙ্খল অবস্থায় এখন চাকরি বাঁচানোই যেন দায়।
বেলাল হোসেন নামে আরেক ব্যক্তি বলেন, “হাসপাতালে যাওয়ার উদ্দেশ্যে বের হয়েছি কিন্তু এক ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকেও কোনো গাড়ি পাওয়া যাচ্ছে না। একটা ভুল সিদ্ধান্তের কারণে আমাদের ভোগান্তির শেষ নেই।”
চট্টগ্রাম সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপের আদেশে বলা হয়েছে, ৬০ ভাগ ভাড়া বেশি নিয়ে গাড়ি চালাতে হবে। যাত্রী নিতে হবে আসন সংখ্যার অর্ধেক কিন্তু এই নির্দেশনা না মেনে পূর্বের ভাড়ার দ্বিগুণ আদায় করা হচ্ছে।
ক্যাব চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাধারণ সম্পাদক কাজী ইকবাল বাহার ছাবেরী বলেন, “যাত্রীদের জিম্মি করে বেশি ভাড়া আদায় করা হলেও বিআরটিএ, প্রশাসন ও আইনশৃংখলা বাহিনী তাদের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারছে না। এতে স্বল্প আয়ের কর্মজীবী মানুষই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।”
চট্টগ্রাম জেলা সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপের অতিরিক্ত মহাসচিব গোলাম রসুল বাবুল বলেন, “ধারণক্ষমতার ৫০ শতাংশের বেশি যাত্রী পরিবহন না করতে প্রত্যেক বাস, মিনিবাস মালিক-শ্রমিকদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।”
বিআরটিএ চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. শহীদুল্লাহ জানান, অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহন ও অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়ার বিষয়টি তদারকি করতে ভ্রাম্যমাণ আদালত কাজ করছে। অভিযোগ পেলে মামলা ও জরিমানা করা হচ্ছে।