নগরীর ইপিজেড থানা এলাকায় একটি বাণিজ্যিক ব্যাংকের কার্যালয়ে ঢুকে বোমা বিস্ফোরণের ভয় দেখিয়ে ৫০ লাখ টাকা দাবির অভিযোগে এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। গতকাল বুধবার বিকেলে নগরীর ইপিজেড থানার বন্দরটিলা এলাকায় ট্রাস্ট ব্যাংকের একটি শাখায় এই ঘটনা ঘটে। গ্রেপ্তার তারিকুল ইসলামের (২০) বাড়ি কক্সবাজারের চকরিয়ায়।
ইপিজেড থানার ওসি উৎপল কান্তি বড়ুয়া জানান, একবছর আগে কাতার থেকে নিঃস্ব হয়ে দেশে ফিরেন তারিকুল। আর্থিক অনটনের হতাশা থেকে তিনি এমন প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছেন বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন।
পুলিশ ও র্যাবের কর্মকর্তারা জানান, ব্যাংক কর্মীদের জিম্মি করে ওই যুবক টাকা দাবি করেন। খবর পেয়ে পুলিশ ও র্যাবের কর্মকর্তারা গিয়ে ব্যাংক কার্যালয় ঘিরে কর্মীদের বের করে আনেন। পরে ওই যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়। তবে তার কাছে বিস্ফোরক জাতীয় কিছুই পাওয়া যায়নি। শুধু পকেটে একটি বডি স্প্রে পাওয়া গেছে।
ইপিজেড থানার ওসি উৎপল বড়ুয়া আরো জানান, বেলা তিনটার দিকে ওই তরুণ ট্রাস্ট ব্যাংকে ঢুকে পড়েন। কিছুক্ষণ পর প্যান্টের পকেটে হাত ঢুকিয়ে বোমার ভয় দেখিয়ে ব্যাংকের কর্মকর্তাদের কাছে ৫০ লাখ টাকা দাবি করেন। অন্যথায় পকেটে রাখা বোমা ফাটিয়ে ব্যাংক উড়িয়ে দেয়ার হুমকি দেন। এসময় ব্যাংকে ১২ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। ব্যাংকের ওই শাখার কর্মকর্তারা ওই তরুণের সঙ্গে কথা বলার ফাঁকে পুলিশে খবর দেন। ওসি উৎপল বলেন, পরে র্যাব, নৌবাহিনী ও পুলিশ সদস্যরা গিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করেন।
র্যাবের চট্টগ্রাম জোনের অধিনায়ক লে. কর্নেল মশিউর রহমান জুয়েল আজাদীকে বলেন, পকেটে বডি স্প্রের কৌটা নিয়ে ব্যাংকে ঢুকে হুমকি দেন তার কাছে ডিভাইস আছে। এছাড়া বোমাও পুঁতে রাখা হয়েছে। ৫০ লাখ টাকা না দিলে বিস্ফোরণ ঘটানো হবে। আমরা ব্যাংকের কার্যালয়সহ পুরো ভবন ঘেরাও করে তাকে আটক করে নিয়ে আসি। ব্যাংকে কোথাও বোমার অস্তিত্ব মিলেনি।
তারিকুলকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে এডিসি (বন্দর) অলক বিশ্বাস বলেন, তারিকুল অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ালেখা করেছেন। চকরিয়ায় বাড়িতে থাকেন। কিছুদিন কাতারে ছিলেন। বছরখানেক আগে একেবারে নিঃস্ব হয়ে দেশে ফেরেন। খুব সম্ভবত করোনার কারণে কাজ হারিয়েছেন। মূলত আর্থিক অনটনের কারণে হতাশার মধ্যে ছিলেন। টাকার জন্যই তিনি এই প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছেন বলে আমাদের জানিয়েছেন।