কাজ শুরুর আগেই মেয়াদ শেষ!

আজাদী প্রতিবেদন | বৃহস্পতিবার , ২৫ মার্চ, ২০২১ at ৬:৩৯ পূর্বাহ্ণ

নগরে ২০ হাজার ৬০০টি এলইডি বাতি লাগানোর প্রকল্পের বর্ধিত মেয়াদ আগামী জুন মাসে শেষ হচ্ছে। অথচ চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) গৃহীত প্রকল্পটির কাজ শুরুই হয়নি। এমনকি ঠিকাদারও নিয়োগ দেয়নি। ২০১৮ সালে পিইসি (প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটি) এবং ২০১৯ সালে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় চূড়ান্ত অনুমোদন পেয়েছিল ২৬০ কোটি ৮৯ লাখ ৮৭ হাজার টাকার প্রকল্পটি। অনুমোদনের সময় প্রকল্পের মেয়াদ ধরা হয়েছিল ২০২০ সালের জুন পর্যন্ত। করোনা পরিস্থতির কারণে গত বছর মেয়াদ বাড়িয়ে ২০২১ সালের জুন পর্যন্ত করা হয়।
প্রকল্পের কাজ শুরু না হওয়ার কারণ হিসেবে জানা গেছে, জ্বালানি দক্ষতা উন্নয়নে পারস্পরিক সহযোগিতা জোরদারের লক্ষ্যে ২০১৭ সালে বাংলাদেশের ‘টেকসই ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ’ এবং ভারতের ‘এনার্জি ইফিসিয়েন্সি সার্ভিস লিমিটেড (ইইসিএল)’ এর সঙ্গে ২০১৭ সালে একটি সমঝোতা চুক্তি হয়েছিল। এর প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ সরকারের মাধ্যমে এলওসি-৩ (লাইন অব ক্রেডিট) এর আওতায় প্রকল্পে ৮২ দশমিক ২০ শতাংশ ঋণ সহায়তা দেয়ার কথা ভারতের। চুক্তির শর্ত অনুযায়ী, প্রি-কোয়ালিফাইড ঠিকাদারের শর্ট লিস্ট দিবে দেশটির বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়। কিন্তু এখন পর্যন্ত তালিকা সরবরাহ এবং চূড়ান্ত অনুমোদন না দেয়ায় প্রকল্পে ঠিকাদার নিয়োগ করতে পারছে না চসিক।
২০২০ সালের ১৯ আগস্ট ভারতীয় নমনীয় ঋণ (১ম, ২য়, ৩য় এলওসি) অন্তর্ভুক্ত প্রকল্পসমূহের বাস্তবায়ন অগ্রগতি পর্যালোচনায় সভা হয়েছিল। ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত ওই সভায় বাংলাদেশের পক্ষে দ্রুত এলইডি লাইট স্থাপন প্রকল্পের অনুমোদন দেয়ার জন্য ভারতকে অনুরোধ করা হয়। তখন একমাসের মধ্যে অনুমোদন পত্র পাঠানো হবে বলে বাংলাদেশকে আশ্বস্ত করে ভারত। ওই সভার পর প্রায় সাত মাস অতিবাহিত হলেও অনুমোদন দেয়া হয়নি।
এ প্রসঙ্গে প্রকল্পটির পরিচালক ও চসিকের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (বিদ্যুৎ) ঝুলন কুমার দাশ দৈনিক আজাদীকে বলেন, ভারত থেকে আমাদের বিভিন্ন কোয়ারি চাওয়া হয়েছিল। আমরা সেগুলোর জবাব দিয়েছি। তবে চূড়ান্ত অনুমোদন না আসায় কাজ শুরু করতে পারিনি। মৌখিকভাবে আমাদের সাথে কথা হয়েছে। এপ্রিলের শেষ সপ্তাহ অথবা মে মাসের প্রথম সপ্তাহে ঠিকাদারের শর্ট লিস্টসহ অনুমোদন পাঠাবে। অনুমোদন পেলেই কাজ ঠিকাদার নিয়োগ দিব।
প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হওয়া প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মন্ত্রণালয়ে ১৮ মাস সময় মেয়াদ বৃদ্ধির জন্য আবেদন করেছি। অর্থাৎ ২০২২ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত মেয়াদ বাড়াতে বলেছি। আশা করছি মেয়াদ বাড়ানো হবে।
প্রকল্পের উন্নয়ন প্রস্তাবনা (ডিপিপি) সূত্রে জানা গেছে, প্রকল্পে ঋণ হিসেবে দেয়া ভারতের অর্থ সহায়তার পরিমাণ ২১৪ কোটি ৪৬ লাখ ৮২ হাজার টাকা। বাকি ৪৬ কোটি ৪৩ লাখ ৫ হাজার টাকা দিবে বাংলাদেশ সরকার। প্রকল্পের আওতায় শহরের ৪১ ওয়ার্ডে ৪০, ৬০, ১০০ ও ২৫০ ওয়াটের ২০ হাজার ৬০০টি এলইডি বাতি, ২০ হাজার ২৬৭টি জিআই পোল এবং ৫০৭টি কন্ট্রোল সুইচ বঙ বসানো হবে। পাঁচ মিটারের বেশি প্রশস্ত সড়কগুলোতে এসব বাতি লাগানো হবে। এছাড়া হাইড্রোলিক বীম লিফটার ও ইলেকট্রিক্যাল ইক্যুপমেন্ট সংগ্রহ করা হবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে নগরে পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি ব্যবহার করে ট্রাফিক এবং পথচারীদের জন্য কার্যকর ও টেকসই সড়ক বাতির সুবিধা নিশ্চিত হবে বলে মনে করেন প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা।

পূর্ববর্তী নিবন্ধআজ রাতে সারাদেশে ১ মিনিট ব্ল্যাকআউট
পরবর্তী নিবন্ধপ্রার্থিতা ফিরে পেলেন ২ জন প্রত্যাহার ৩