যুক্তরাষ্ট্রের মায়ামি বিচে বসন্তের ছুটিতে প্রচুর লোক জড়ো হওয়ার পর করোনাভাইরাস ঝুঁকির শঙ্কায় শহরটিতে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে। দ্বীপ শহরটিতে অন্তত ১২ এপ্রিল পর্যন্ত স্থানীয় সময় রাত ৮টা থেকে পরদিন ভোর ৬ট পর্যন্ত নিয়মিত কারফিউ জারি থাকবে বলে বিবিসি জানিয়েছে।
কারফিউ চলাকালে গাড়ি চলাচলের ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। ওই সময় সাউথ বিচের সব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। হাজার হাজার পর্যটক হাজির হওয়ায় শহরজুড়ে ‘বিশৃঙ্খল’ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বলে মায়ামি বিচের মেয়র ড্যান গেলবার জানিয়েছেন। সিএনএনকে তিনি বলেন, ‘যেন এখানে রক কনসার্ট হচ্ছে, ব্লকে ব্লকে এক দেয়াল থেকে অন্য দেয়াল পর্যন্ত লোকে গিজগিজ করছে। যুক্তরাষ্ট্রে মার্চ অথবা এপ্রিলে স্কুল ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বসন্তকালীন ছুটিতে কয়েকদিনের জন্য বন্ধ থাকে। এ সময় হাজার হাজার শিক্ষার্থী ফ্লোরিডা ও দেশটির অন্যান্য উষ্ণ আবহাওয়ার গন্তব্যগুলোতে যায়।
এই ছুটি চলাকালে পর্যটকদের ‘দায়িত্বশীলতার সঙ্গে অবকাশ যাপনের অথবা গ্রেপ্তার হওয়ার’ বিষয়ে সতর্ক করেছেন কর্মকর্তারা আর মহামারীর কারণে দেশজুড়ে করোনাভাইরাস কারফিউ আগে থেকেই জারি আছে। কিন্তু শনিবার মায়ামি বিচ এলাকা উৎসবকামী লোকজনের ভিড়ে পরিপূর্ণ হয়ে যায়। এখানে অনেকেরই মুখে মাস্ক ছিল না এবং তারা সামাজিক দূরত্ববিধিও মানছিলেন না। শহটির একজন কর্মকর্তা জানান, শনিবার সাউথ বিচ এলাকায় উপচে পড়া ভিড় সৃষ্টি হয়। এই এলাকাতেই বিশ্ব বিখ্যাত ‘ওশান ড্রাইভ’ সড়কটি অবস্থিত। শহরের ব্যবস্থাপক রাউল আগিলা বলেন, ‘(লোকজনের ভিড়ে) আপনি ফুটপাত দেখতে পাবেন না আর ঘাসও দেখতে পাবেন না।’ তিনি আরও বলেন, ‘জরুরি পদক্ষেপগুলো শুধু আমাদের বাসিন্দাদের সুরক্ষা দেওয়ার জন্যই দরকার নয়, পাশাপাশি দর্শনার্থী যাদের মধ্যে বসন্তের ছুটি কাটাতে আসা লোকজনও আছেন তাদের নিরাপদ রাখার জন্যও।’
রোববার মায়ামি বিচ পুলিশ সিএনএনকে জানায়, কারফিউ শুরু হওয়ার পর তারা অন্তত এক ডজন লোককে গ্রেপ্তার করেছে। কারফিউ কার্যকর করতে পুলিশ পেপার স্প্রে ব্যবহার করেছে বলে মায়ামি হেরাল্ড সংবাদপত্র জানিয়েছে। মেয়র গেলবার জানান, গত মাসের শেষের দিকে ফ্লোরিডার গভর্নর রন ডিস্যান্টিস রাজ্যটিকে করোনাভাইরাস বিধিনিষেধ থেকে ‘মুক্ত উদ্যান’ অভিহিত করার পর থেকেই লোকজন বানের মতো মিয়ামি বিচে আসতে শুরু করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের করোনাভাইরাস হটস্পটগুলোর মধ্যে ফ্লোরিডা অন্যতম। দেশটির দুই কোটি ৯০ লাখ করোনাভাইরাস আক্রান্তের মধ্যে রাজ্যটিতে আছে প্রায় ২০ লাখ।