পরিবারে একটু সচ্ছলতার আশায় জীবিকার সন্ধানে চট্টগ্রাম নগরীতে এসেছিল ৪ কিশোরী। ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে প্রতারক চক্রের খপ্পরে পড়ে তারা। চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে দুটো ফ্ল্যাটে তাদের বন্দি রেখে বাধ্য করা হতো অসামাজিক কার্যকলাপে। খবর পেয়ে এই ৪ কিশোরীকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। একইসঙ্গে গ্রেপ্তার করা হয়েছে ফ্ল্যাটের মালিক নুর নবীকে (৫২)। গত শুক্রবার রাত ১২টা ৪৫ মিনিটে আকবরশাহ থানার দুটি এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ জানায়, কিশোরীদের বন্দি রেখে অসামাজিক কার্যকলাপ চলত আকবরশাহ থানার দুটি এলাকার দুটি ফ্ল্যাটে। ফ্ল্যাট দুটির একটি বিশ্ব ব্যাংক আবাসিক এলাকার ডি ব্লকে কোহিনুর প্লাজার পঞ্চম তলায়। অন্যটি একই থানা এলাকার নতুন মনসুরাবাদ নবাব হোটেলের পাশে নুর নবীর মালিকানাধীন বিল্ডিংয়ের তৃতীয় তলায়।
আকবর শাহ থানার ওসি জহির হোসেন আজাদীকে জানান, বিশ্ব ব্যাংক এলাকার ডি ব্লকের ফ্ল্যাটটিতে সমপ্রতি বেঁধে রাখা হয়েছিল ২ কিশোরীকে। সেখানে তাদের শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের পাশাপাশি বাধ্য করা হচ্ছিল পতিতাবৃত্তিতে। এক পর্যায়ে শুক্রবার রাতে এক পথচারীকে জানালা দিয়ে একটি চিঠি ছুঁড়ে দেন ওই দুই কিশোরী। চিঠি নিয়ে ওই পথচারী পুলিশের কাছে যাওয়ার পর তাৎক্ষণিক অভিযানে নামে পুলিশ। অভিযানে উদ্ধার হয় দুই কিশোরী। পরে কিশোরীদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ অভিযান চালায় মনসুরাবাদ এলাকার নুর নবীর বিল্ডিংয়ে। সেখান থেকে তালাবদ্ধ অবস্থায় আরও দুই কিশোরীকে উদ্ধার করা হয়। গ্রেপ্তার করা হয় ওই বাড়ির মালিক নুর নবীকে।
ওসি জানান, দুটি ফ্ল্যাটে অসামাজিক কার্যকলাপ পরিচালনা করত ফ্ল্যাটের ভাড়াটিয়া আমেনা বেগম (৩২) ও আব্দুল আলী ওরফে সুমন। সম্পর্কে তারা স্বামী-স্ত্রী। তবে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পালিয়ে যায় এ দম্পতি। তারা বিভিন্ন দালালের মাধ্যমে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে অসহায় কিশোরীদের সংগ্রহ করতেন। এভাবে দীর্ঘ দিন ধরে কার্যকলাপ চালিয়ে আসছিলেন নুর নবীর মালিকানাধীন ফ্ল্যাটটিতে।
‘ব্যবসা’ জমজমাট দেখে ৫ দিন আগে ভাড়া নেন বিশ্ব ব্যাংক কলোনি এলাকার ওই ফ্ল্যাটটি। তবে মনসুরাবাদ এলাকার ফ্ল্যাটটির মালিক নুর নবী এ চক্রের সাথে জড়িত থাকলেও বিশ্বব্যাংক কলোনি এলাকার ফ্ল্যাট মালিকের অগোচরে অসামাজিক কার্যকলাপ শুরু করেছিল আমেনা-সুমন দম্পতি।