অসুস্থ স্বামীর চিকিৎসার জন্য নিকটাত্মীয় শওকত আলমের কাছ থেকে সুদ দেওয়ার শর্তে চার হাজার টাকা ঋণ নেন চকরিয়ার বরইতলী ৮ নম্বর ওয়ার্ডের হাফালিয়া কাটাস্থ সবুজ পাড়ার গৃহিণী নূর আয়েশা। সেই চার হাজার টাকার বিপরীতে গত ১০ মাসে চড়া সুদসহ তিনি পরিশোধ করেন ৮ হাজার টাকা। কিন্তু সুদ হিসেবে আরো ২ হাজার টাকা পরিশোধ না করায় তাকে গাছের সাথে বেঁধে নির্যাতন করেন শওকত আলম। গত মঙ্গলবার দুপুরে ধারণ করা এরকম একটি ভিডিও গতকাল বুধবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তা নিয়ে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। এই ঘটনায় শওকতসহ তার সহযোগীদের গ্রেপ্তার করে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নেয়ার দাবি উঠে। বরইতলী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জালাল আহমদ সিকদার বলেন, ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশের পর পরই পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন এবং অভিযুক্ত শওকতকে গ্রেপ্তারে অভিযান চালিয়েছে। কিন্তু এর আগে তিনি সটকে পড়ে। তবে শওকতকে পালিয়ে যেতে সহযোগিতা করায় তার বাবা জহির আলমকে (৫৫) আটক করা হয়েছে।
ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, গৃহিণী নূর আয়েশাকে ডেকে এনে শওকত সুদের টাকা দাবি করেন। এতে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে নূর আয়েশার পরনের কাপড়ের আঁচল গাছের সাথে গিট মেরে আটকে দেন শওকত। এছাড়া বাগবিতণ্ডার একপর্যায়ে চুল টেনে মারধর করতে থাকেন আয়েশাকে। ওই সময় আয়েশাকে ছাড়িয়ে নিতে সেখানে যান এক নারী। তবে আরো কয়েকজন নারী-শিশু ঘটনা প্রত্যক্ষ করতে থাকে। অন্যদিকে ঘটনার হোতা শওকতকে সহযোগিতা করতে সেখানে যান বয়ষ্ক এক নারী। এ সময় শওকতের পাশাপাশি বয়ষ্ক ওই নারীও লাঠি দিয়ে আয়েশাকে বার বার গুঁতো দিতে থাকেন।
গতকাল দুপুরে নির্যাতিতা নূর আয়েশার বাড়িতে যান হারবাং পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ইন্সপেক্টর মো. মাহ্তাবুর রহমান। তিনি আজাদীকে বলেন, অসুস্থ স্বামী টিউবওয়েল মিস্ত্রি আলী হোসেনের চিকিৎসার জন্য দশমাস আগে শওকতের কাছ থেকে সুদে টাকা ধার নিয়েছিলেন আয়েশা। তবে এ ঘটনায় আয়েশা বাদী হয়ে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। চকরিয়া থানার ওসি শাকের মোহাম্মদ যোবায়ের বলেন, লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পর মামলা রুজু করা হবে। এই ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তার করা হবে।