স্বাধীনতা যুদ্ধে রাজাকারদের সহযোগিতা করেছিলেন। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় নাম লিখিয়ে সরকারি নানা সুযোগ সুবিধা নিয়েছেন সীতাকুণ্ডের কুমিরা ইউনিয়নের মছজিদ্দা গ্রামের আলম বাদশা। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। গত ৮ মার্চ মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই কালে তদন্তে বেরিয়ে এসেছে সেইসব তথ্য। মুক্তিযোদ্ধার গেজেট থেকে তার নাম বাদ দেওয়ার সুপারিশ করেন তদন্ত কমিটি। এছাড়া মুক্তিযুদ্ধে অংশ না নিয়ে বিভিন্ন জাল জালিয়াতির মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় নাম উঠিয়ে সরকারি সুযোগ সুবিধা নেওয়া ও গেজেটে নাম লেখানো ১৭ জনকে মুক্তিযোদ্ধা তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার জন্য সুপারিশ করেছে যাচাই বাছাই কমিটি।
উপজেলা সমাজসেবা অফিস সূত্রে জানা গেছে, সীতাকুণ্ড উপজেলায় ৭০৫ জন মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরিবারের সদস্যরা ভাতা পেয়ে থাকেন। তাদের মধ্যে তিনশ অধিক মুক্তিযোদ্ধা বিভিন্ন সময়ে মারা গেছেন। ৭০৫ জনের এই তালিকা থেকে ১৭ জনের নাম বাদ দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।
সীতাকুণ্ড উপজেলা যাছাই বাছাই কমিটির সদস্য মুক্তিযোদ্ধা মনিরুল ইসলাম বলেন, আলম বাদশা কখনো মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেননি। তিনি রাজাকার আল বদর ও আল সামসকে সহযোগিতা করেছিলেন। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধার আশ্রয়ে থেকে তালিকায় নাম উঠিয়েছিলেন। পরবর্তীতে সরকারি সুযোগ সুবিধাও নিয়েছেন।
উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাচাই কমিটির সদস্য সচিব ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার মিল্টন রায় বলেন, মুক্তিযোদ্ধা তালিকা থেকে ১৭ জনের নাম বাদ দেওয়ার সুপারিশ করেছেন কমিটির সদস্যরা। সেই আলোকে বাদ দেওয়ার কারণ উল্লেখ করে মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে।
রাজাকারের সহযোগীর অভিযোগে তালিকা থেকে বাদ পড়া আলম বাদশা বলেন, ২০২০ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত তিনি ভাতা পেয়েছিলেন। এরপর কোনো কারণ ছাড়াই তার ভাতা বন্ধ করে দেওয়ায় তিনি উচ্চ আদালতে মামলা করেছেন। বর্তমানে ওই মামলা চলমান রয়েছে। তিনি বলেন, ২০০৭ সালের পূর্বে তিনি বিএনপি করতেন। বর্তমানে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। একটি মহল ঈর্ষান্বিত হয়ে তার নাম মুক্তিযোদ্ধা তালিকা থেকে বাদ দিয়েছে।
তালিকা থেকে বাদ পড়া বাকি ১৬ জন হলেন- উপজেলার বাখখালির সোহরাব হোসেন, আলাকুলি পুরের শরীয়ত উল্লাহ, কলাবাড়িয়ার নুর মোহাম্মদ, পৌরসভা এলাকার জীবন চন্দ্র দাস, শিবপুরের আতাউল হক, এয়াকুবনগরের আবুল কাসেম, মহাদেবপুরের শাহ আলম ওয়াহেদী, পূর্ব মুরাদপুরের আবু বক্কর সিদ্দিক, গোলাবাড়িয়ার এম এ আলম, অলিনগরের মিজানুল হক, মাহমুদাবাদের নুরুল মোস্তফা, কাঠগড়ের কমল মোহন শীল, উত্তর মসজিদ্দার সঞ্জীব চন্দ্র রায়, পূর্ব লালাসগরের রাফিউল আলম, পূর্ব লালানগরের নুরুল মোস্তফা এবং গুলিয়াখালীর নুরুল আমিন।